সংসদ প্রতিবেদক

  ২৩ জানুয়ারি, ২০২০

সংসদে অর্থমন্ত্রী

রেমিট্যান্স বেড়েছে ১০ শতাংশ

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে জানিয়েছেন, বিগত এক বছরে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রেরণের হার প্রায় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার; যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।

গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। সরকারি দলের সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে প্রাপ্ত রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার; যা গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ২৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি।

মন্ত্রী জানান, রেমিট্যান্স গ্রহণ ও গ্রাহকের কাছে সরাসরি পৌঁছানোর লক্ষ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের সঙ্গে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসের ড্রয়িং ব্যবস্থাপনাকে উৎসাহিত করা হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের কোম্পানির সঙ্গে বর্তমানে প্রায় ১ হাজার ২৪৫টি ড্রয়িং ব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে; যা রেমিট্যান্স আহরণের উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। আরো নতুন নতুন ব্যবস্থা স্থাপনের অনুমোদন প্রদান অব্যাহত আছে। তিনি আরো জানান, বিদেশস্থ এক্সচেঞ্জ হাউসের সঙ্গে বাংলাদেশস্থ ব্যাংকের ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনকে সহজতর করার লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার পদ্ধতিতে ড্রয়িং স্থাপনের ক্ষেত্রে রক্ষিতব্য ব্যাংকের ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপিত হবে; যা বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

সরকারি দলের সদস্য মো. হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী ক্ষুদ্র ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার ২৪ শতাংশ। ইতোপূর্বে বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক অধিক সুদে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ থাকলেও মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি আইন-২০০৬-এর আওতায় সরকার কর্তৃক এমআরএ প্রতিষ্ঠানের পর হতে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক ব্যয়, প্রশাসনিক ব্যয়, ঋণ ক্ষতি সঞ্চিতি ও প্রফিট মার্জিন ইত্যাদি পর্যালোচনা এবং সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করে ক্রমহ্রাসমান স্থিতি পদ্ধতিতে ক্ষুদ্রঋণের সুদহার নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে।

সরকারি দলের আরেক সদস্য বেগম আদিবা আনজুম মিতার প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল জানান, সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করছে। সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে; যা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের সর্বোচ্চ। তিনি আরো জানান, জনগণের মাথাপিছু আয় ২০০৫ সালে ৫৪৩ ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ হাজার ৯০৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে। দারিদ্র্যের হার ২০০৫ সালের ৪০ শতাংশ থেকে ২০১৯ সালে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে এবং অতি দরিদ্র কমে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে।

একই প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্যবিমোচন ইত্যাদি খাতসমূহে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার ফলে বাংলাদেশে সামাজিক খাতে সব সূচকে এগিয়ে আছে। উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকার সফল হয়েছে। বিগত এক দশকে মূল্যস্ফীতি ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেয়েছে। গত ২০০৮ সালে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৬ শতাংশ, যা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেয়ে ২০১৮-১৯ সালে ৫ শতাংশ হয়েছে। গত ডিসেম্বরে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close