নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ নভেম্বর, ২০১৯

ই-পাসপোর্ট নিয়ে সংশয় কাটছেই না

আসছে ডিসেম্বরের মধ্যে ইলেকট্রনিক বা ই-পাসপোর্ট চালুর কথা থাকলেও তাতে কিছুটা সংশয় দেখা দিয়েছে। মেশিন রিডেবল বা এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্টে কনভার্ট করতে হলে সব তথ্য নির্ভুলভাবে নতুন ডেটাবেইসে স্থানান্তর করতে হবে। এসব টেকনিক্যাল কাজ শেষ করে ডিসেম্বরে ই- পাসপোর্ট চালু করা দুরূহ বলে মনে করেন পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ।

পাসপোর্ট-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিষয়ে তারা কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে কবে নাগাদ ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমে যেতে পারবেন, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না। তবু ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ সম্ভাব্য ডেটলাইন ধরেই এগোচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ইমিগ্রেশন বা পাসপোর্ট বিভাগ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক পরিসরে ভ্রমণ নিরাপদ ও সুরক্ষিত করার পাশাপাশি জালিয়াতি ঠেকাতে ২০১৬ সালে মেশিন রিডেবল বা এমআরপি পাসপোর্টের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেয় সরকার। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে সংগতি রেখে দেশেও আধুনিক প্রযুক্তির ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট তুলে দিতে ওই বছরই ৪ হাজার ৬৩৫ কোটি ৯১ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক।

ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থা শুরু করতে জার্মান সরকারের সঙ্গে জিটুজি পদ্ধতিতে চুক্তি করে সরকার। চুক্তি অনুযায়ী, জার্মান কোম্পানি ‘ভেরিডোস জিএমবিএইচ’ ৩ কোটি পাসপোর্ট বই সরবরাহ করবে। পাসপোর্টের বুকলেট তৈরি করতে ঢাকার উত্তরায় একটি অ্যাসেম্বলি কারখানা স্থাপন করবে ভেরিডো। এতে পূর্ণাঙ্গ ই-পাসপোর্ট বুকলেট আমদানি চেয়ে অ্যাসেম্বল করা ই-পাসপোর্টে বুকলেটের দাম অর্ধেকেরও কম হবে। ৫০টি ই-গেট নির্মাণ হবে। এর মাধ্যমে সব সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও নেটওয়ার্ক ১০ বছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ ও সেবা দেবে। একটি নতুন স্বয়ংসম্পূর্ণ ডেটা সেন্টার ও একটি ডিজাস্টার রিকোভারি সেন্টার এবং অত্যাধুনিক পার্সোনালাইজেশন নির্মাণ করা হবে, সেখানে মোট আটটি প্রিন্টিং মেশিন থাকবে; যার মাধ্যমে প্রতিদিন ৩০ হাজার পাসপোর্ট বই প্রিন্ট করা যাবে। এ ছাড়াও ভেরিডোস চলে যাওয়ার পর পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে যাবে কোম্পানিটি। এসব কাজের জন্য ভেরিডোস পাবে ৩ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা। কিন্তু গেল তিন বছরে এসব কাজের সিংহভাগই শেষ করতে পারেনি জার্মান ওই কোম্পানি। ফলে চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে ই-পাসপোর্ট চালুর ঘোষণা দেওয়া হলেও তা চালু করতে পারেনি সরকার। পরে আগস্টের শেষ নাগাদ চালুর তারিখ নির্ধারণ করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগ।

এ বিষয়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ জানান, ই-পাসপোর্ট চালুর প্রস্তুতি এখনো শেষ হয়নি। বর্তমানে ফাইনাল স্টেজের কাজ চলছে। এনআইডি, জন্মসনদসহ প্রয়োজনীয় তথ্য সার্ভারে স্থাপন করার কাজ হচ্ছে এখন। কোনো পাসপোর্টধারী যেন হয়রানির শিকার না হোন; সেদিক বিবেচনায় রেখে কাজ এগোচ্ছে। একটি নির্ভুল কাজ করতে গিয়ে কিছুটা দেরি হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ই-পাসপোর্ট চালু হলে এর পাশাপাশি প্রচলিত এমআরপি পাসপোর্ট বহাল থাকবে। তবে নতুন করে আর কাউকে এমআরপি পাসপোর্ট দেওয়া হবে না। বর্তমানে এমআরপি পাসপোর্ট বহনকারীরা নবায়ন করতে গেলে তাদের ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থায় যুক্ত হতে হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে সব পাসপোর্ট ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে রূপান্তর হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close