বিবিসি

  ১৭ আগস্ট, ২০১৯

আ.লীগের তরুণ প্রজন্মের চোখে শেখ মুজিব

রুশি চৌধুরীর জন্ম ১৯৭৫ সালের অনেক পরে। পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে তার জানার সূচনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতেও জড়িয়েছিলেন। ১৫ আগস্টের হত্যাকা- তার ব্যক্তিজীবন এবং রাজনৈতিক মতাদর্শের ওপর গভীরভাবে দাগ কেটেছে। ‘আমি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যখন কোনো কথা বলতে যাই, আমার চোখের সামনে দুটি জিনিস ভেসে ওঠে। প্রথমত; বঙ্গবন্ধু আঙুল তুলে ৭ মার্চের ভাষণ দিচ্ছেন। আবার ভেসে ওঠে বঙ্গবন্ধু সিঁড়িতে পড়ে আছেন, ওই আঙুলটি ওঁনার নেই’Ñ বলেন রুশি চৌধুরী।

গত ১৫ বছরে যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িয়েছেন কিংবা সমর্থক হয়ে উঠেছেন, তাদের সবার কাছে শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক মতাদর্শ মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। পরিবার এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখলেও আওয়ামী লীগের দিক থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তুলে ধরার নানা প্রয়াসও ছিল চোখে পড়ার মতো। শেখ মুজিবুর রহমানের বই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ প্রকাশিত হওয়ার পর সেটি আওয়ামী লীগের তরুণ কর্মী-সমর্থকদের জন্য এক ধরনের পাঠ্যবইয়ের মতো হয়ে ওঠে। বর্তমানে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নাজনীন নাহার বিপা বলেন, তার রাজনৈতিক মতাদর্শ গঠনের ক্ষেত্রে এসব বিষয় ভূমিকা রেখেছে। “আমাদের তরুণ প্রজন্মের কাছে তো জিনিসগুলো অনেক ধোঁয়াশা ছিল। আমরা তো বঙ্গবন্ধুর অবদান সম্পর্কে জানতে পারতাম না। আমি যখন ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পড়লাম, তখন দেখলাম যে একটা মানুষ ১৩-১৪ বছর জেলে কাটিয়ে দিয়েছেন। ওঁনার নেতৃত্বের গুণাবলি এবং তিনি যে কথা বলতেন, ওটা ভালো লাগত’- বলছিলেন নাজনীন নাহার বিপা।

১৫ আগস্ট প্রতিবারই দেশজুড়ে প্রায় প্রতিটি পাড়া, মহল্লা এবং গ্রামে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ব্যাপকভাবে প্রচার করে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউটিউবসহ নানা অনলাইন প্ল্যাটফরমে শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ আপলোড করা হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমানের

জীবনী নিয়ে গ্রাফিক, নভেলসহ নানা মাধ্যমে এসব বিষয় প্রচারের জন্য সক্রিয় আছে আওয়ামী লীগের গবেষণা সংস্থা সিআরআই। তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নতুন প্রজন্মের কাছে শেখ মুজিবকে তুলে ধরা। সিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির বিন শামস বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন ভাষণ থেকে ১০০টি উদ্ধৃতি বাছাই করে একত্র করা হয়েছে। ‘যে জায়গাটায় দেখছি যে গ্যাপ আছে বা আমাদের কিছু করার আছে, যেটা ইউথ ফ্র্যান্ডলি ওয়েতে প্রেজেন্ট করা যায়, তখনই ওই জায়গাগুলোতে আমরা কাজ করছি’Ñ বলছিলেন শামস।

আওয়ামী লীগ মনে করে, ১৯৭৫ সালের পর থেকে দীর্ঘ ২১ বছর অর্থাৎ ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব উপেক্ষিত ছিলেন। তারা মনে করছেন, শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের নানা দিক যত বেশি তুলে ধরা হবে, তরুণ প্রজন্মকে তার রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতি তত বেশি আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close