খুলনা ব্যুরো

  ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯

খুলনায় আর্সেনিকে আক্রান্ত বছরে ২০

প্রতি বছর খুলনা জেলায় নতুন করে ২০ জন আর্সেনিকোসিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। জেলায় মোট ৫৮৯ জন আর্সেনিকোসিস রোগী বিভিন্ন হাসপাতলে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদিকে উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালগুলোতে আর্সেনিকের ওষুধ সংকট রয়েছে। বাইরে থেকে ওষুধ কিনছেন রোগীরা।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর বলছে, অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, ভূগর্ভে নানা ধরনের আয়রণ জমা হওয়ার কারণে আর্সেনিকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তবে ঝুঁকি কমাতে শতভাগ আর্সেনিকযুক্ত পানির এলাকায় আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খুলনার পানি লবণাক্ত। এর ৬০ শতাংশ এলাকাজুড়ে আর্সেনিক। খরাপ্রবণ এলাকায় পুকুরের পানি একমাত্র ভরসা। অনেকেই দেশীয় পদ্ধতিতে আষাঢ় থেকে আশ্বিন পর্যন্ত টিনের ছাউনি থেকে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে। সঠিকভাবে সেই পানি সংরক্ষণ করা যায় না, মাঝে মঝে সেখানেও শ্যাওলা জন্মায়।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আর্সেনিকে আক্রান্ত ইউনিয়নগুলো হচ্ছে, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ধামালিয়া, রুদাঘরা, খর্নিয়া, মাগুরঘোনা, শোভনা, ভা-ারপাড়া, রংপুর, গুটুদিয়া, মাগুরখালী, পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী, কপিলমুনি, লতা, সোনাদানা, লস্কার, গদাইপুর, রাড়–লী, চাঁদখালী, কয়রা উপজেলার আমাদী, মহারাজপুর, কয়রা, দাকোপ উপজেলার চালনা, দাকোপ, কৈলাশগঞ্জ, সুতারখালী, কামারখোলা, তিলডাঙ্গা, বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা, রূপসা উপজেলার আইচগাতী, শ্রীফলতলা, নৈহাটী, টিএস বাহিরদিয়া, ঘাটভোগ, তেরখাদা উপজেলার আজগড়া, বারাসাত, ছাগলাদাহ, সাচিয়াদাহ, তেরখাদা, মধুপুর, দিঘলিয়া উপজেলার যোগীপোল, বারাকপুর, দিঘলিয়া, সেনহাটি, গাজীরহাট, আড়ংঘাটা, ফুলতলা উপজেলার আটরা গিলাতলা ও দামোদার ইউনিয়ন।

আর্সেনিকোসিসে আক্রান্ত উল্লেখযোগ্য রোগীরা হচ্ছেন, রূপসার টিএস বাহিরদিয়া ইউনিয়নে ১৩৪ জন এবং দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নের ৭৬ জন ও দিঘলিয়া ইউনিয়নে ৮৪ জন। এছাড়া বাগেরহাটের রামপাল, ফকিরহাট, সাতক্ষীরার কলারোয়া, দেবহাটা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের নলকূপ আর্সেনিক আক্রান্ত হওয়ায় সেগুলো বিপজ্জনক বলে লাল রঙ দিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী এফ এম ইসমাইল হোসেন জানান, নিরাপদ পানি সরবারহের লক্ষ্যে বৃহত্তর খুলনায় আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় বাগেরহাট জেলায় ১ হাজার ১৫৭টি, সাতক্ষীরা জেলায় ৪৫৯টি, খুলনা জেলায় ৪৭৭টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া উল্লিখিত তিন জেলায় ৯৩টি এস এস নলকূপ ও ৩১২টি তারা গভীর নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে। আগামী বছর এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। ২০০৩ সালের জরিপের ভিত্তিতে ১০০ শতাংশ আর্সেনিক যুক্ত এলাকায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শামীম আহমেদ জানান, মোল্লাহাট, ফকিরহাট, জেলা সদর, রামপাল, চিতলমারী ও কচুয়া উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে উপকূলবর্তী উপজেলার মানুষ নিরাপদ পানি পাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close