নারায়ণগঞ্জ ও শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
না.গঞ্জ-গাজীপুরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ : সড়ক অবরোধ
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ও গাজীপুরের শ্রীপুরে বিভিন্ন দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফতুল্লার শিবুমার্কেট এলাকায় ও শ্রীপুরের রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তায় কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কে অবস্থান নেয় কয়েকটি গার্মেন্টের কয়েক হাজার হাজার শ্রমিক। পরে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ওসি মঞ্জুর কাদের শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সড়ক অবরোধ তুলে নেয়ার অনুরোধে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়। শ্রমিকরা জানান, ফতুল্লার শিবুমাকেটের ঈদের আগে থেকে সাকুরা, রেডিক্যাল, ওসমান, আবির ফ্যাশন, ইউরোটেক্সের সীক গার্মেন্টসহ ৬-৭টি তৈরি পোশাক কারখানায় ঈদের আগে থেকেই নানা ধরনের সমস্যা চলে আসছিল। এর মধ্যে মালিকপক্ষ সমাধান না করে ঈদের ছুটি দিয়ে দেয়। আর ছুটির শেষে রেডিক্যাল গার্মেন্টের শ্রমিকরা সকালে কারখানায় এসে মূল গেটে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করে। পরে তাদের দেখে ওসমান গার্মেন্টের শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করে। এ দুইটি কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে এসে অবস্থান নেয়। পরে সাকুরা, আবির ফ্যাশন, ইউরোটেক্সের সীক গার্মেন্টসহ ৬-৭টি কারখানার হাজার হাজার শ্রমিকরা রাজপথে নামার পর ফতুল্লার শিল্পাঞ্চল উত্তাল হয়ে উঠে। পরে তারা বিক্ষোভ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কে অবস্থান করে। এ সময় তারা ফতুল্লা মডেল থানার সামনে অবস্থান করে।
শ্রমিকরা আরো জানান, কারখানার মালিকরা তাদের পালিত সন্ত্রাসী দিয়ে শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনসহ কথায় কথায় চাকরিচ্যুত করা এবং নিয়মন অনুযায়ী বেতন ভাতা পরিশোধ না করে উল্টো হুমকি দেয়। ঈদের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ব্যস্ত থাকার কথা থাকলেও মালিকদের কারণে রাজপথে নামতে বাধ্য হতে হয়েছে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি মঞ্জুর কাদের জানান, শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের রাস্তা হতে সরানো হয়েছে। কারখানার মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের আশ্বাস দেয়ার পর তারা রাস্তা হতে অবরোধ তুলে নিয়ে তাদের সমস্যাগুলো লিখিতভাবে থানা পুলিশকে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
শ্রীপুরের রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তায় কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন হরাইজন লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে অবরোধ শুরু করেন শ্রমিকরা। পরে বেলা ১২টার দিকে পুলিশ লাঠিপেটা করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
কারখানার সুইং অপারেটর আলমগীর হোসেন, তরিকুল ইসলামসহ অন্যরা জানান, চলতি মাসের বেতন ছাড়া কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতনভাতা পরিশোধ করে ঈদের আগে ছুটি দেয়। গত শনিবার কারখানা খোলার তারিখ ঘোষণা করে। ওই দিন কারখানায় এসে তালা লাগানো দেখে কারখানা অন্যত্র শিফটের কথা বলে সেখানে যোগ দিতে বলে। এতে অপরাগতা প্রকাশ করে বকেয়া বেতনাদি পরিশোধের দাবি জানালে কর্তৃপক্ষ তালবাহানা শুরু করে।
গতকাল সকালেও কারখানায় গিয়ে তালা দেখতে পাওয়া যায়। পরে সেখানে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিলে পুলিশ এসে শ্রমিকদের লাঠিপেটা করে। এতে কমপক্ষে ১৫ নারী ও পুরুষ আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এসে অবস্থান নেন।
এ ব্যাপারে কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক আশরাফুল ইসলাম জানান, অ্যাকর্ড কারখানার সুইংয়ের মালামাল নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। তাই কারখানা অন্যত্র শিফট করা হচ্ছে। শ্রমিকরা এটি বুঝতে চায় না। তারা অন্যত্র কাজে যোগ দিতে চায় না।
শিল্প পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান জানান, শ্রমিকদের লাঠিপেটার অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাদের বোঝানোর পর দুপুর ১২টার দিকে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়।
"