নিজস্ব প্রতিবেদক
মালি থেকে কোটিপতি গণপূর্তের সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা
গণপূর্ত অধিদফতরের এক মালির ৩ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। সেলিম মোল্যা নামে ওই মালি এবং তার দুই স্ত্রীর নামে এই সম্পদ রয়েছে। সেলিম চারটি বিয়ে করলেও এখন ওই দুই স্ত্রী তার সঙ্গে রয়েছেন বলে দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সেলিম বর্তমানে গণপূর্ত বিভাগের ইডেন কেয়ার টেকিংয়ের অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে নিয়োজিত আছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনা থানায় সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক; এতে অভিযোগ করা হয়েছে, তার ও দুই স্ত্রীর নামে থাকা ৩ কোটি ১০ লাখ টাকার সম্পদের মধ্যে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকার সম্পদ অবৈধ।
দুদকের উপপরিচালক মো. ফরিদুর রহমান বাদী হয়ে মালি সেলিমের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছে বলে কমিশনের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানিয়েছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মালি থেকে কোটিপতি হওয়া সেলিম অবৈধ উপার্জন দিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী হাফিজা খানের নামে রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুরে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন, এছাড়া এই স্ত্রীর নামে তিনি টয়োটা প্রিমিও ব্র্যান্ডের গাড়িও কিনেছেন। প্রথম স্ত্রী পারভীন আক্তারকে খিলগাঁও এলাকায় সেলিম প্লট কিনে দিয়েছেন বলেও এজাহারে বলা হয়। এছাড়া সেলিমের নিজ নিজ নামে মাইক্রোবাস, ট্রাক ও তার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের ঝিটকায় তিনতলা আবাসিক ভবন এবং বহুতল বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে বলে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে বলে দুদক কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান জানিয়েছেন।
সরকারি নিয়োগ পেয়ে ১৯৮৪ সালে সেলিম গণপূর্ত অধিদফতরে মালি পদে যোগ দেন। তার চাকরি শুরু হয় অধিদফতরের আরবরি কালচার বিভাগে।
পরে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে দীর্ঘদিন প্রেষণে নিয়োজিত ছিলেন তিনি। এ সময়ে দাফতরিক কাজে প্রভাব বিস্তার করে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করেন বলে দুদক কর্মকর্তাদের ভাষ্য।
দুদকের অনুসন্ধানে সেলিমের নিজ নামে, তার প্রথম স্ত্রী ও দ্বিতীয় স্ত্রীর নামে ৩ কোটি ১০ লাখ ১৭ হাজার ৪৩৫ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। যেখানে ২ কোটি ৪২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৬৬ টাকার সম্পদের বিপরীতে কোনো আয় দেখাতে পারেননি তিনি। গত বছরের ৩১ অক্টোবর দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে সেলিম তার সম্পদের অর্থমূল্য ১৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা বলে উল্লেখ করেছিলেন।
এজাহারে বলা হয়, দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিনি ২ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার ৯৯৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন।
"