কলকাতা প্রতিনিধি
মুক্ত কারাগার : বন্দিরাও পাবেন মুক্ত জীবনের স্বাদ
এবার বন্দিরাও পাবেন মুক্ত জীবনের স্বাদ। যারা দীর্ঘ মেয়াদি কারাবন্দি, তাদের জন্য এমন সুযোগ দিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মেদিনীপুরে আরো একটি মুক্ত কারাগার চালু হয়েছে। এটি এ রাজ্যের চতুর্থ মুক্ত কারাগার।
রাজ্যের কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস গত বুধবার এ কারাগারের উদ্বোধন করেন। যাবজ্জীবন কারাদ-ে দ-িত ব্যক্তিদের একটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর জীবনে কিছুটা সুখ দেওয়ার জন্য তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে একসঙ্গে বসবাস করার সুযোগ দিতে চালু করা হয়েছে নতুন ধরনের এই কারাব্যবস্থা। মুক্ত কারাগার হলো এমন একটি কারাগার, যেখানে দ-িত ব্যক্তিরা অবাধে চলাফেরা করতে পারেন। বসবাস করতে পারেন তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে। অনেকটা বাড়ির মতোই। তবে রাতের একটি নির্দিষ্ট সময়ে তাদের ফিরে আসতে হয় এই মুক্ত কারাগারে।
মেদিনীপুরের এই কারাগারে বসবাসের জন্য ৩২টি ঘর রাখা হয়েছে। যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত যেসব আসামি কারাগারে ২২ বছর ধরে আছেন, তাদেরই এখানে ঠাঁই দেওয়া হবে।
পশ্চিমবঙ্গে ১৯৮৭ সালের ৩১ জুলাই প্রথম চালু করা হয় মুক্ত কারাগার। মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলায় চালু হয় এই মুক্ত কারাগার। এখানেই ওই সময় ঠাঁই দেওয়া খুনের দায়ে যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত আসামিদের। পরিবার-পরিজন নিয়ে এই কারাগারে বাস করার ব্যবস্থা করে পশ্চিমবঙ্গের কারা কর্তৃপক্ষ। লালগোলার সাবেক রাজবাড়িতে গড়ে ওঠে এই মুক্ত কারাগার। এখানে ঠাঁই পাওয়া ২০ বন্দিকে রাখা হয় এই মুক্ত কারাগারে। শুধু তা-ই নয়, এই বন্দিরা দিনের বেলায় বাইরে গিয়ে কাজ করার সুযোগ পান। আয় করার সুযোগ পান। কেউ কেউ আবার কারাগারের বাইরে গিয়ে ছোটখাটো ব্যবসাও শুরু করেন। তবে নিয়ম হলো রাত ৮টার মধ্যে ফিরে আসতে হয় কারাগারে তাদের নিজেদের আবাসস্থলে।
মেদিনীপুরে যে কারাগার করা হলো, তা লালগোলার মুক্ত কারাগার থেকে একটু ব্যতিক্রম। এখানে বন্দিরা পরিবার নিয়ে থাকতে পারবেন না। একাই থাকতে হবে বন্দিকে। তবে তারা কাজ করতে পারবেন। বাইরে যেতে পারবেন। পরিবারদের সঙ্গে মিলিত হতে পারবেন। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার পর ফিরে আসতে হবে এই মুক্ত কারাগারে। সকাল আটটায় বন্দিরা কারাগারের বাইরে যেতে পারলেও ফিরে আসতে হবে বিকেল ৫টার মধ্যে।
রাজ্যের বর্ধমানের দুর্গাপুর এবং উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে দুটি মুক্ত কারাগার আছে। পশ্চিমবঙ্গের কারা দফতর মেদিনীপুরের পর শিলিগুড়ি শহরে এই মুক্ত কারাগার করার উদ্যোগ নিয়েছে।
"