reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০২ এপ্রিল, ২০১৮

‘গভীর প্রেম থেকে শারীরিক সম্পর্ক ধর্ষণ নয়’

গভীর প্রেমের সম্পর্ক থেকে তৈরি হওয়া শারীরিক সম্পর্কের জেরে কারও বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা যাবে না। সম্প্রতি একটি মামলায় এমনই তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিয়েছেন বোম্বে হাইকোর্টের গোয়া বেঞ্চ।

রায় দিতে গিয়ে আদালত বলেছেন, গভীর প্রেম থেকে তৈরি হওয়া শারীরিক সম্পর্ককে ধর্ষণ বলে অভিযোগ তুললে তা আসলে তথ্যের বিকৃতি হয়। এই মামলায় অভিযুক্তকে নিম্ন আদালতের দেয়া সাত বছরের জেল এবং দশ হাজার টাকা জরিমানার রায়ও বাতিল করে দিয়েছেন বোম্বে হাইকোর্ট। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধেই হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন যোগেশ পালেকর নামে অভিযুক্ত ব্যক্তি।

জানা গেছে, যোগেশ একটি ক্যাসিনোয় শেফ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৩ সালে ক্যাসিনোয় কর্মরত এক মহিলার সঙ্গে তার আলাপ হয়। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক দানা বাঁধে।

একদিন নিজের বাড়ির লোকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কথা বলে ওই নারীকে বাড়িতে নিয়ে যান যোগেশ। কিন্তু পরিবারের কেউ বাড়িতে না থাকায় রাতে যোগেশের বাড়িতেই থেকে যান ওই তরুণী। এদিন দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। পরে সকালে ওই তরুণীকে বাড়ি পৌঁছে দেন যোগেশ। পরবর্তী সময়ে যোগেশের বাড়িতে আরও তিন থেকে চারবার দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। যদিও ওই নারী নিম্নবর্ণের বলে তাকে শেষমেশ বিয়ে করতে রাজি হননি যোগেশ।

এরপরই যোগেশের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন ওই নারী। তিনি অভিযোগ করেন, যোগেশ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলেই তিনি শারীরিক সম্পর্কে সম্মতি দিয়েছিলেন। আদালতে বিচার চলাকালীন এমনও জানা যায় যে, যোগেশকে আর্থিকভাবেও সাহায্য করতেন ওই মহিলা।

মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি সি ভি ভাদং তথ্যপ্রমাণের ওপরে ভিত্তি করে বলেন, শুধুমাত্র পুরুষ সঙ্গীর দেয়া বিয়ের প্রতিশ্রুতির বিনিময়েই ওই নারী শারীরিক সম্পর্কে সম্মতি দেননি বরং দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলেই রাজি হয়েছিলেন তিনি। এমনকি এই ঘটনার পরেও দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। যোগেশকে নিত্য প্রয়োজনে আর্থিক সাহায্যও করতেন ওই নারী। তিন থেকে চারবার দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। ফলে এটা স্পষ্ট যে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতেই দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হয়।

এমনকি একটা সময়ে যোগেশ মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকায় এবং তার চিকিৎসা শুরু হওয়ায় ধর্ষণের মামলা প্রত্যাহারের জন্য হলফনামাও জমা দিয়েছিলেন ওই নারী। তখন ওই নারী জানিয়েছিলেন, আবেগপূর্ণ ও ব্যক্তিগত কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

বিচারপতি বলেন, এটা থেকেই স্পষ্ট যে অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারিণীর মধ্যে গভীর ভালোবাসা ছিল। প্রথম থেকেই যদিও ওই নারীকে শারীরিকভাবে শোষণ করাই অভিযুক্তের উদ্দেশ্য হতো, তাহলে নিজের দুর্বল আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি ওই নারীকে অবহিতই করতেন না। বিচারপতি আরও বলেন, ওই নারীর কাছ থেকে যোগেশ আর্থিক সাহায্য পেতেন। ফলে তিনি ওই নারীর ওপর জোর করতেন বা তাকে শারীরিকভাবে শোষণ করতেন, এমন দাবি মেনে নেয়া যায় না।

পিডিএসও/রিহাব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
গভীর প্রেম,শারীরিক সম্পর্ক,ধর্ষণ নয়
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist