লালমনিরহাট প্রতিনিধি

  ২৫ মার্চ, ২০১৮

মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা পুত্রবধুকে গ্রাম ছাড়া করলো মাতব্বর

লালমনিরহাটে ধর্ষিতা মুক্তিযোদ্ধার পুত্রবধুকে গ্রাম ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় মাতব্বরদের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের জগতবেড় গ্রামের নুরল হকের ছেলে দাদন ব্যবসায়ী লাইতুজ্জামান খোকন (৩৫) গত ২১ মার্চ বুধবার তার প্রতিবেশি মুক্তিযোদ্ধার পুত্রবধুকে ঘরে একা পেয়ে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে। এসময় ধর্ষিতার চিৎকারে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে খোকনকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে। পরদিন ২২ মার্চ, বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সালামের নেতৃত্বে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি লুৎফর জামান লাইজুসহ গ্রাম্য মাতব্বররা বৈঠকে বসেন। এ সময় ধর্ষিতা গৃহবধুকে চরিত্রহীন আখ্যায়িত করে এলাকার পরিবেশ রক্ষার অজুহাতে তিনশত টাকার সাদা স্ট্যাম্পে ধর্ষিতার স্বাক্ষর নিয়ে তাকে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়। মাতব্বরদের এ নির্দেশে ধর্ষিতা ও তার স্বামী গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন। ধর্ষিতা লজ্বায় শোকে গুরুতর অসুস্থ্য হলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে মাতব্বরদের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে গ্রামবাসি। তারা ধর্ষকসহ এ প্রহসেনর বিচারকারীদের দৃষ্ঠান্ত মুলক শাস্তির দাবি করেছেন। তারা বলেন, এ প্রহসনের বিচারে টাকার জোরে ধর্ষককে বাঁচিয়ে ধর্ষিতাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। ধর্ষকসহ গ্রাম্য মাতব্বরদের বিচার দাবি করেন তারা।

ধর্ষিতার স্বামী জানান, জীবিকার তাগিদে তিনি ঢাকায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সুবাদে দুই সন্তানকে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা বাবাসহ স্ত্রী বাড়িতে থাকতেন। লম্পট প্রভাবশালী খোকন এ সুযোগে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে। বিচারকরা মোটা অংকে টাকার বিনিময়ে ধর্ষককে ছেড়ে দিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে তাদেরকে গ্রাম ছাড়া করেছে। তিনি এ বিষয়ে মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

রাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম জানান, ধর্ষিতার শ্বশুড়ের ডাকে তিনি বৈঠকে গিয়েছিলেন। এসময় ধর্ষিতা গৃহবধু এ বিষয়ে কোন অভিযোগ না দেয়ায় কোন বিচার করা হয়নি। স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরের বিষয়ে তিনি বলেন, গৃহবধুকে তার স্বামী তালাক দিতে চাওয়ায় হয়তোবা তারা স্বাক্ষর নিতে পারেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

রাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন মোফা জানান, ধর্ষিতার শ্বশুড়ের মাধ্যমে বিষয়টি জেনে আইনি সহায়তা নেয়ার পরামর্শ দেন। স্থানীয় ভাবে কারা এ শালিস বৈঠক করেছেন তা তিনি জানেন না বলে জানান।

সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মাহফুজ আলম জানান, এ বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। বিষয়টি লোক মুখে শুনে ঘটনা স্থলে তদন্ত করতে অফিসার পাঠানো হয়েছে।

পিডিএসও/রানা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ধর্ষিতা পুত্রবধু
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist