কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

  ০৮ এপ্রিল, ২০২৪

খোকসায় অভিযোগ

থানায় দুই শ্রমিককে চোখ বেঁধে নির্যাতন

খোকসা হাসপাতালে ভর্তি পুলিশি নির্যাতনের শিকার ভাটা শ্রমিক সুরুজ শেখ। ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

কুষ্টিয়ার খোকসা থানায় রাতভর আটকে দুই ভাটা শ্রমিকে চোখ বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) মধ্য রাতের দিকে থানা হাজতে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।

পরদিন গত বুধবার (৩ এপ্রিল) আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়। গত বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ভাটা শ্রমিক সুরুজ শেখ জামিনে মুক্তি পেলেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে খোকসা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গত রবিবার খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন সুরুজ শেখ জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে খোকসার জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামে এসে বাড়ি করেন। সোমবার (১ এপ্রিল) পাশের মাজেদার বাড়িতে চিল্লাচিল্লি শুনে সেখানে গেলে জানতে পারেন তার স্ত্রীর বড় বোন ও নজরুলের চাচাতো বোন মাজেদাকে নজরুল ঢাকা গাজীপুর বসবাসকালে জামিনদার হয়ে চার মাস আগে ‘পদক্ষেপ’ এনজিও থেকে ৯০ হাজার টাকা ঋণ তুলে দেন। ঋণ তোলার পর মাজেদা কিস্তির টাকা না দেওয়ায় এনজিওর লোকজন নজরুলকে কিস্তির জন্য চাপ দেয়। একপর্যায়ে নজরুল ঢাকা গাজীপুর ভাড়া বাসায় সমস্ত জিনিসপত্র ফেলে রেখে স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন।

এর প্রেক্ষিতে নজরুল সোমবার মাজেদাকে তার গ্রামের বাড়ি হাজির করে ঢাকায় ফেলে আসা মালামালের টাকা দাবি করেন। কথাবার্তার একপর্যায়ে মাজেদাকে দিয়ে স্টাম্পে স্বাক্ষর করানো হয়। সেই স্ট্যাম্পে তিনি স্বাক্ষীও হতে রাজি হন। পরবর্তীতে মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে খোকসা থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) দেলোয়ার তাকে ও সাব্বির নামে আরেক ভাটা শ্রমিককে থানায় নিয়ে যায়।

পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন মাজেদার দেবর শাহীন খোকসা থানায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ দিয়েছে। একই দিন রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে তার হাত এবং চোখ বেধে নির্যাতন করে পুলিশ। অসহ্য নির্যাতন সইতে না পেরে একপর্যায়ে পুলিশকে নিজেই আত্মহুতি দেওয়ার কথা জানালে পরদিন তাদের আদালতে চালান করে দেয়। পরে বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পেয়ে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

খোকসা থানার এএসআই দেলোয়ার হোসেন জানান, সুরুজ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগের কারণে তাকে ধরে আনা হয়। নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইফুল। তিনি রাতে থানার বাইরে টহলে ছিলেন।’

অভিযুক্ত এসআই সাইফুল জানান, ফাঁকা স্ট্যাম্পে জোর করে সই করিয়ে নেওয়ার ঘটনায় খোকসা থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই মামলায় তাদের চালান ও দেওয়া হয়। নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বিষয়টিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে আক্ষায়িত করেন।

অভিযোগের বিষয়ে খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আন-নূর যায়েদ জানান, নির্যাতনের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কুষ্টিয়া,কুমারখালী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close