উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

  ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

গুনাইগাছ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়

শরীর চর্চা শিক্ষক থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান, নানা অনিয়মের অভিযোগ

ছবি: প্রতীকী

কুড়িগ্রামের উলিপুর গুনাইগাছ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে ফিরোজ ইমাম আমীনের বিরুদ্ধে বিধি বহির্ভূতভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের আজীবন দাতা সদস্য সোলাইমান আলী জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ ও বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৫ জুন উলিপুরের গুনাইগাছ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম হোসেন অবসর নেন। পরে বিধিবহির্ভূতভাবে বিদ্যালয়ের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পর্ষদ প্রতিষ্ঠানের শরীর চর্চা ও ক্রীড়া শিক্ষক ফিরোজ ইমাম আমীনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়।

এদিকে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রতিষ্ঠানের আজীবন দাতা সদস্য সোলাইমান আলীকে বাদ দিয়ে পছন্দের লোকজন নিয়ে ব্যবস্থাপনা পর্ষদ গঠন করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফিরোজ। এ ঘটনায় সোলাইমান আলী করা মামলা আদালতে বিচারাধীন। পরে ২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষক ফিরোজ তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ্ মো. তারিকুল ইসলামের যোগসাজসে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হন।

অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফিরোজ ইমাম রাতের আঁধারে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেন। ওই কমিটির মাধ্যমে তিনি প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। পরিপত্র অনুযায়ী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বহুল প্রচারিত একটি জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় পত্রিকা এবং বিদ্যালয়ে ওয়েব সাইটে প্রকাশ করার কথা থাকলেও সেসবের কিছুই মানা হয়নি।

উপজেলা একাধিক শিক্ষক জানায়, তারা গোপন সূত্রে জানতে পারেন, গুনাইগাছ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে। এরপর থেকে তারা নিয়মিত বিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে খোঁজখবর রাখেন। কিন্তু নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাননি তারা। ৬ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ বিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে প্রাধান শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখতে পান। তবে সেটি পত্রিকা প্রকাশের তারিখ থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে আবেদনের তারিখ পর্যন্ত ওয়েব সাইট বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো প্রচারণা দেখা যায়নি।


  • টিউশন ফি, বিদ্যালয়ের জমি বেদখল, মার্কেটের টাকা ও বিভিন্ন সামগ্রী একাই ভোগ করে আসছেন প্রধান শিক্ষক
  • নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিয়মের ব্যত্যয়ের তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ডিসি সাইদুল আরীফ

এদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফিরোজ ইমাম দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি, বিদ্যালয়ের জমি বেদখল, প্রতিষ্ঠানের মার্কেটের টাকা ও বিভিন্নসামগ্রী একাই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভোগ দখল করে আসছেন। এ নিয়ে কোনো শিক্ষক কথা বললে তাদের ভয়ভীতি দেখান বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফিরোজ ইমাম আমীন বলেন, ‘সব বিধি মোতাবেক হয়েছে।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাতাব হোসেন বলেন, ‘ওই প্রধান শিক্ষক অনেক চালাক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

কুড়িগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুল আলম বলেন, ‘নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বিধি মোতাবেক হয়নি। এছাড়া একাধিক মামলা বিচারধীন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘নিয়োগ বোর্ডে প্রতিনিধি চেয়ে আমার কাছে আবেদন করা হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিয়মের কিছু ব্যত্যয় হয়েছে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

পিডিএস/জেডকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কুড়িগ্রাম,উলিপুর,গুনাইগাছ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়,ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close