মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

  ১৪ জানুয়ারি, ২০২৪

মানিকগঞ্জের ঘিওরে

বিদ্যালয় মাঠে মেলার আয়োজন বন্ধের দাবি এলাকাবাসীর

ছবি: সংগৃহীত

মানিকগঞ্জের ঘিওরে এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার স্বার্থে মেলা বন্ধে জেলা প্রশাসক বরাবার লিখিত আবেদন করেছেন এলাকাবাসী। একই সঙ্গে বিজয় মেলার নামে ‘অশ্লীলতার’ অভিযোগ করেছে তারা।

ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের তেরশ্রী এলাকায় বিজয় মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ওই মেলা বন্ধের দাবিতে রবিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

আবেদন সূত্রে জানা গেছে, ঘিওরের তেরশ্রী এলাকাটি ঘন জনবসতি পূর্ণ এলাকা। এছাড়া আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় উচ্চ স্বরে মাইক বাজানোর কারণে এলাকার ছাত্রছাত্রী, শিশু ও বৃদ্ধদের মারাত্মক অসুবিধা হবে।

এছাড়া মেলায় সার্কসের নামে অশ্লীল নৃত্যসহ অবৈধ লটারির কারণে এলাকার কিশোরদের বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। বিদ্যালয় চলাকালে মেলা হলে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা অবনিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

বিজয় মেলা উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর ১৫-৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘিওরের তেরশ্রী কালী নারায়ণ হাইস্কুলের মাঠে ১৫ দিনব্যাপী মুক্তিযোদ্ধের বিজয় মেলা হয়। কিন্তু এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে মেলা পিছিয়ে ১৭-৩১ জানুয়ারি মেলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক অভিভাবক সদস্য মো. রমজান আলী ও রেজা মন্ডল জানান, নির্বাচনের মধ্যেও মানিকগঞ্জ জেলা সদরে ডিসেম্বরে বিজয় মেলা হয়েছে। কিন্তু ঘিওরে বিজয় মেলা এখন (জানুয়ারি) করতে যাচ্ছে। অথচ শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ক্ষতি করে দিনে ও রাতে বিদ্যালয়ের পাশেই মেলা করতে যাচ্ছে। তারা শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর কথা চিন্তা করলে কোনোভাবেই বছরের শুরুতে মেলা করতে পারতেন না।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিদ্যালয়ে প্রায় বারোশ শিক্ষার্থী আছে। এর মধ্যে প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এখন বিদ্যালয়ের পাশে মেলা হলে স্বাভাবিকভাবেই পড়ালেখার ক্ষতি হবে। তাছাড়া মেলা থেকে অর্জিত কোনো অর্থ বিদ্যালয়ের দেওয়া হয় না। মেলা থেকে যা আয় হয়, তা মেলা কমিটির লোকজন নেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও পয়লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো.আব্দুল কুদ্দুস জানান, আমরাও মেলা করেছি, কিন্তু শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর ক্ষতি না করে। এখন মেলা করা মানে মেলার নামে টাকা আয় করে, নিজেদের পকেট ভরা। শিক্ষার্থী ও শিক্ষার অনেক ক্ষতি হবে। সার্বিক বিবেচনা করে মেলা না হওয়ায় ভালো।

ঘিওর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ মিয়া জানান, মেলা হয় বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত। আর পড়ালখার ক্ষতি হলে আমাদের ছেলেমেয়েদের ক্ষতি হবে, অন্য কারো হবে না। এখন প্রশাসন যদি মেলা বন্ধ করে দেয়, তাহলে বন্ধ করে দিবে। কারন মেলার সভাপতি হচ্ছে ইউএনও।

মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, ‘জেলা প্রশাসক আলপা-আলোচনা করবেন। তারপর মেলার বিষয়ে অনুমতি দিবেন বা সিদ্ধান্ত নিবেন।’

মেলার বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মানিকগঞ্জ,মেলা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close