ওমর ফারুক নাঈম, মৌলভীবাজার

  ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

মৌলভীবাজারে বসে লন্ডনে ‘ফুঁ’ পীরানির চিকিৎসায় প্রতারণার ফাঁদ

মৌলভীবাজারের পাগুলিয়ায় বসে লন্ডনে ফুঁ দিয়ে সারিয়ে তোলেন রোগীকে। এক ফুঁতেই রোগীও সুস্থ হয়ে উঠেছে। এমন আজগুবি চিকিৎসা দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছেন এক নারী। স্থানীয়রা তাকে পীরানি আপা নামেই চিনেন। তার নাম ছড়িয়ে পড়েছে প্রবাসীদের মধ্যেও। তাদের কাছ থেকেও হাতিয়ে নিচ্ছেন বিপুল অর্থ।

আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের যুগে এমন অবাস্তব কুসংস্কার থেকে প্রতারিত না হতে পরামর্শ দিচ্ছে সচেতন মহল। এসব প্রতারক চক্রকে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করাতে বলছেন তারা।

জানা যায়, মৌলভীবাজার শহরতলির পাগুলিয়া এলাকায় বসবাস করা পীরানি আপা সব রোগের সমাধান করে দিতে পারেনÑ এমন খবর ছড়িয়ে পড়েছে। তার দেওয়া পানি পরা, তেল পরা, তাবিজ-কবজসহ বিভিন্ন ঝাঁড়ফুঁক দিয়ে চলছে তার চিকিৎসা। মৌলভীবাজার প্রবাসী অধ্যুষিত হওয়ায় তার প্রতারণার ফাঁদে পড়ছেন প্রবাসীরা।

সরেজমিনে গিয়ে শহরতলির পাগুলিয়া এলাকায় গেলে দেখা যায় পীরানির আস্তানা। স্থানীয় মসজিদের পাশের বসতঘরেই গড়ে তুলেছেন তার আস্তানা।

এলাকাবাসী জানায়, দুই বছর আগে তিনি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন। এখন তিনি নিজের বাড়িতেই বসেন, সেখানেই বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসেন।

স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি বলেন, ‘স্থানীয়রা কেউই তাকে বিশ্বাস করি না। কিন্তু বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন আসেন তার কাছে।’

সরেজমিনে গিয়ে প্রতিবেদক রোগী স্বজন পরিচয়ে পীরানির সঙ্গে দেখা কারতে চাইলে দেখা হয় তার সহকারী মোল্লা নামের একজনের সঙ্গে। তিনি জানান, ‘আমরা অপরিচিত কাউকে পীরানির সামনে নিয়ে যাই না। আমরা কোনো মাধ্যম ছাড়া পীরানির সঙ্গে যোগাযোগের নম্বরও দিই না।

মোল্লা বলেন, দেশের তুলনায় বিদেশের মানুষ বেশি পীরানির চিকিৎসা নেন। বিদেশ থেকে লোকজন কীভাবে যোগাযোগ করেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কেউ সরাসরি কল করেন আবার কেউ ওয়াটসআপের মাধ্যমে কল করেন।

এক লন্ডন প্রবাসী জানান, ‘পীরানি আপার নাম শুনে তিনি চিকিৎসা নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কোনো চিকিৎসা না দিয়ে আজগুবি কথাবার্তা বলে তিনি অনেক অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। অনেকে অন্ধ বিশ্বাস করে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’

আরেক গৃহবধূ জানান, ‘তার শাশুড়িকে ভুল বুঝিয়েছেন এই পীরানি। শাশুড়িও অন্ধ বিশ্বাস করে অনেক অর্থ পীরানির কাছে পাঠিয়েছেন।’

এ বিষয়ে সম্মিলিত সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের সহসভাপতি এম মুহিবুর রহমান মুহিব বলেন, ‘শরিয়ত কখনোই উদ্ভট চিকিৎসাকে সাপোর্ট করে না। কিছু ভ- প্রতারক চক্র অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য পীর/ফকির সেজে মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। মানুষকে এই বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। সামাজিকভাবে এদের প্রতিরোধ করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close