মো. ইমরান, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)

  ২০ অক্টোবর, ২০১৭

‘এহন ইলিশ মাছ ধরা নিষেধ, সরকার ভালোর জন্যই অবরোধ দেছে’

‘এহন ইলিশ মাছ ধরা নিষেধ। সরকার আমাদের ভালেরর জন্যই অবরোধ দেছে। এ সময়ে মাছ ধরা ঠিক না।’ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পঞ্চম শ্রেণির আট শিক্ষার্থী সৈকত তীর থেকে অদূরে পেতে রাখা কারেন্ট জাল জব্দ করে। সংবাদ পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে এভাবেই সচেতনার কথা বলেন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী বায়েজীদ।

ইলিম প্রজনন মৌসুমের নিষেধাজ্ঞার সচেতনতা এসেছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিশুদের মধ্যেও। সাধারণ মানুষের মধ্যে এ সচেতনতার ফলে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে অবরোধকালীন সময়ে মা ইলিশ শিকার। এমনই এক দৃশ্য দেখা গেল কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসর ইউনিয়নের কাউয়ার চরে। বায়েজীদ বলে, আ. করিম, শুভ, রিসালাত, রানা, শান্ত, তামিম ও সাজেদুল ধুলাসর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তারা বিদ্যালয়ের অদূরে সাগরসংলগ্ন কাউয়ার চর এলাকায় ঘুরতে যায়। এ সময় তাদের চোখে পড়ে সৈকত তীর থেকে অদূরে পেতে রাখা হয়েছে কারেন্ট জাল। কাছাকাছি কেউ না থাকায় শিক্ষার্থীরাই নৌকা নিয়ে গিয়ে তুলে আনে জাল। সংবাদ দেয় সংবাদকর্মীসহ স্থানীয় প্রতিনিধিদের। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সে জাল পুড়ে ফেলে। শিক্ষার্থী আ. করিম জানায়, আমরা সবাই মিলে জাল তুলে আনি। নৌকা নিয়ে যেতে কিছুটা ভয় লাগছিল। তবুও সবাই মিলে করেছি। প্রচারণার ফলে আবরোধের সময় জানতে পেরেছি। এটা অপরাধ তাও বুঝতে পেরেছি। কাজটি করতে পেরে ভালোই লাগছে।

ধুলাসর ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য জামান হোসেন বলেন, স্কুলের ছোট ছোট ছাত্ররা জাল তুলে এনে আমাদের খবর দেয়। আমরা এসে সে জাল পুড়িয়ে ফেলি। তবে জালের মালিককে খুঁজে পাইনি এবং জানতে পারিনি। গণমাধ্যমকর্মী লুৎফুল হাসান রানা বলেন, বিগত বছরগুলোয় ইলিশ প্রজনন মৌসুম এবং জাটকা সংরক্ষণকালীন সময়ের অবরোধের ফলে ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ বেড়ে গেছে। চলতি বছরে এ জন্য ছিল অনেক বেশি প্রাচুর্যতা। এ কারণে একযুগের মধ্যে এ বছর নি¤œআয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ছিল ইলিশ মাছ। সচেতন শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, মৎস্য অধিদফতরের বিগত কয়েক বছর যাবৎ মা ইলশের ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা, প্রচার-প্রচারণা, জেলেদের সঙ্গে মতবিনিময়, আপৎকালীন ভিজিএফ সুবিধা, জাটকা সংরক্ষণে বিকল্প কর্মসংস্থানের ফলে ইলিশের উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়েছে। বেড়েছে জেলেদের আয়, পরিবর্তন হয়েছে জেলেদের আর্থসামাজিক অবস্থা। উৎপাদন বাড়ায় ইলিশ এখন সাধারণের নাগালে এবং ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। ইলিশের ব্যাপক প্রাপ্তিতে জেলেদের সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে, সাধারণ ছেলেমেয়েদের মধ্যেও ইলিশপ্রীতি গড়ে উঠেছে, যা খুব ভালো লক্ষণ। এ বছর কলাপড়ায় কোনো জেলে এখন পর্যন্ত জাল নিয়ে নদিতে নামেনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist