ফরিদপুরে প্রখর রোদ আর তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। ঘরে-বাইরে কোথাও যেন স্বস্তি নেই। কাঠফাটা রোদে পথ-ঘাট সব কিছুই উত্তপ্ত। এ অবস্থায় চরম পিপাসায় কাতর হয়ে পড়ছে পথচারীরা। তবে পথচারীরা তীব্র তাপপ্রবাহে কিছুটা স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছেন বরফগলা নানা প্রকারের শরবতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের জনতা ব্যাংকের মোড় ও নিউমার্কেট এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চোখে পড়ে শরবত বিক্রির ভ্রাম্যমাণ দোকানের। নিউমার্কেটের সামনে অন্তত অর্ধশতাধিক অস্থায়ী শরবতের দোকান গড়ে উঠেছে। তীব্র গরমে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব অস্থায়ী দোকানগুলোয় ভিড় যেন লেগেই থাকে। শহর ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ফুটপাতে হাঁটলে কিছুক্ষণ পরপর ভ্যানে মিলছে লেবু, তোকমা, এলোভেড়া, ইসবগুল, তরমুজ, নানা ফলের শরবত ও আখের রস। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষজন তাদের তৃষ্ণা মেটায় এসব ভ্রাম্যমাণ বরফগলা শরবতের দোকানে।

নিউ মার্কেট এলাকার শরবত ব্যাবসায়ী খায়ের শেখ বলেন, প্রখর রোদ আর গরমে বরফগলা পানিতে লেবুর শরবত বিক্রি করছি। গত কয়েক দিনে বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। প্রতি গ্লাস ১০ টাকা করে প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০০ গ্লাস শরবত বিক্রি হচ্ছে। 

রস বিক্রেতা সাগর বিশ্বাস বলেন, তীব্র গরমে বেড়েছে আখের রসের চাহিদা। এক গ্লাসের দাম ২০ টাকা। একশ গ্লাস রস বিক্রি করলে গড়ে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা লাভ হয়। প্রতিদিন গড়ে এক থেকে দেড়শ গ্লাস রস বিক্রি হচ্ছে। 

শরবত বিক্রেতা কবির শেখ বলেন, এলোভেরা, ইউসুবগুল, আখের গুড়, তোকমা দানাসহ বিভিন্ন ভেসজ উপাদান দিয়ে সারা বছরই শরবত বিক্রি করি। গরমে শরবত বেশি বিক্রি হয়। 

শফিকুর রহমান নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, শহরে প্রায় কয়েকশ ভ্রাম্যমাণ শরবত বিক্রেতা আছে। একেকজন দিনে গড়ে দুই থেকে তিন শতাধিক গ্লাস শরবত বিক্রি করছে।

রিকশাচালক রুস্তম শেখ বলেন, গরমে রিকশা চালিয়ে এসে এখানে একটু বিশ্রাম নিয়ে শরবত খাই। অটোরিকশাচালক দবির মুন্সি বলেন, স্বল্প আয়ের খেটে-খাওয়া মানুষদের জন্য ১০-২০ টাকা দামের এসব শরবত অনেক স্বস্তি দিচ্ছে।

রাকিবুল ইসলাম টোকন নামের এক পথচারী বলেন, তীব্র গরমেও কাজের জন্য বের হতে হচ্ছে। একটু স্বস্তির জন্য ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে শরবত খাচ্ছি।

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. গণেশ কুমার আগরওয়ালা বলেন, অতিরিক্ত তাপদাহে প্রতি বছর হাসপাতালে ডায়রিয়া, পানি শূন্যতা, হিট স্ট্রোকের রোগীর চাপ বাড়লেও এবার এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক।

ফরিদপুরের আবহাওয়া কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে ফরিদপুরে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটি এ পর্যন্ত জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।

"