চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

  ০৭ এপ্রিল, ২০২৪

চিলমারী-রৌমারী নৌপথ

অতিরিক্ত ভাড়া বন্ধে মাঠে প্রশাসন যাত্রীদের নিরাপত্তা দেবে পুলিশ

প্রতি বছর রমজানের শেষে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরে ফিরতে সহজ পথ হিসেবে কুড়িগ্রামের চিলমারী-রৌমারী নদী পথে লক্ষাধিক যাত্রী পারাপার হন। এই সময়কে কাজে লাগিয়ে নৌকার মালিকপক্ষ মাঝিদের দিয়ে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করে। অনেক সময় যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজি না হলে তাদের পারাপারে অনিহা প্রকাশ করেন নৌকার মাঝিরা। এতে বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই যাত্রীদের ঈদের আগে ও ঈদ পরবর্তী সময়ে নৌকা পারাপার করতে হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

তবে এবার ঈদ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে শক্ত অবস্থানে থাকবেন চিলমারী উপজেলা প্রশাসন। এদিকে ছিনতাই, চুরি ডাকাতিসহ যাত্রীদের যান-মালের নিরাপত্তায় কাজ করবেন চিলমারী মডেল থানা-পুলিশ।

চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক জানান, ঈদযাত্রায় চিলমারীর রমনাঘাটে যাতে যাত্রীদের সঙ্গে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি, হয়রানি, হুমকির মুখে না পড়তে হয় সেজন্য পুলিশ কাজ করে যাবে। এছাড়া যাত্রীদের যানমালের নিরাপত্তায় থানা-পুলিশ কাজ করবে। এরপরেও যদি কোনো যাত্রী এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন তাহলে পুলিশকে অবগত করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া রমনাঘাটে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলেও জানান তিনি।

ঈদ পরবর্তী ও পূর্ববর্তী সময়ে অভিযোগ পাওয়া যায়, সাধারণ দিনের চিলমারী-রৌমারী নৌপথে একজনযাত্রী পারাপারে ১০০ থেকে ১২০ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু ঈদের কয়েকদিন আগে ও ঈদে প্রায় সপ্তাহখানেক পর ২০০ থেকে ৩০০ টাকা নেওয়া হয়। এতে প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকার বাণিজ্য হয় এই সময়ে। এ বিষয়গুলো নিয়ে ইতিপূর্বে একাধিকবার অভিযোগ দিয়ে কাজ হয়নি। উল্টো মালিক পক্ষ ওই সময়ে নৌকা না চালানোর হুমকি দেওয়াসহ যাত্রীদের ফেলেন ভোগান্তিতে।

স্থানীয় বাসিন্দা মাইদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, জেলায় কলকারখানা না থাকায় বিভিন্ন পেশাজীবী, দিনমজুর ও শ্রমিকরা ঢাকা ও ঢাকার বাইরে কাজের সন্ধানে যায়। তারা ভাড়া বাঁচাতে ট্রেনে করে কিংবা বিভিন্ন বাস বদল করে রৌমারী বা রাজীবপুরে আসে। ফেরি আসার আগে নৌকা করে চিলমারী আসত। চিলমারী থেকে উলিপুর, রাজারহাট  কুড়িগ্রামে নিজ বাড়িতে যায়। কিন্তু নৌ-ঘাটের ইজারাদাররা নির্দিষ্ট ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে যাত্রীদের হয়রানি করছিল।

বিগত বছরে যাত্রীদের এই অভিযোগের কোন সমাধান আসেনি। এই বছরে ফেরি চালু হলেও বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ফেরিটিও দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ হয়ে আছে। ঈদে ফেরি চলাচল না হলেও যেন যাত্রীদের হয়রানিমূলক কোন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে, এটা এলাকাবাসী হিসেবে প্রশাসনের নজরদারি কামনা করেন তিনি।

রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান নলেজ বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে ঈদ এলেই ইজাদারদের বাড়তি ভাড়া নেওয়ার উৎসব শুরু হয়। একজন বিশেষ ব্যক্তির পরিচয়ে বর্তমান ইজারাদার বেপরোয়া হয়ে ভাড়া তোলেন।’

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসন এবার ঈদে নৌ-পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে শক্ত অবস্থানে থাকবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close