পবিপ্রবি প্রতিনিধি

  ২৯ মার্চ, ২০২৪

ঈদে পবিপ্রবির আবাসিক হল বন্ধ, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

পবিত্র জুমাতুল বিদা, শবেকদর, ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ছুটির সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব আবাসিক হল। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

গত সোমবার (২৫ র্মাচ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পবিত্র জুমাতুল বিদা, শবেকদর, ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ২৯ মার্চ থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসসহ সব শিক্ষা ও প্রশাসনিক বিভাগের অফিস কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

সেই সঙ্গে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী, ২৯ মার্চ বিকেল ৫টা থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সব আবাসিক হল বন্ধ থাকবে এবং ১৬ এপ্রিল সকাল ৬টায় আবাসিক হল খুলে দেওয়া হবে। এছাড়া বন্ধকালীন ছাত্রছাত্রীদের হলে অবস্থান না করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

এভাবে প্রতিবার ছোট-বড় সব বিভিন্ন ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির সঙ্গে হল বন্ধ রাখার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, এর ফলে ভোগান্তি পোহাতে হয়। করোনা-পরবর্তীতে একই সঙ্গে সেমিস্টার এবং চাকরির পড়াশোনার চাপ রয়েছে। এর মধ্যে এসব ছুটিতে হল বন্ধ করায় বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় উত্তরবঙ্গ এবং পূর্ব-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের। একদিকে পড়াশোনার ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে অন্যদিকে অধিক ভাড়া বহন করে ছুটিতেও বাড়ি যেতে বাধ্য হয়।

এছাড়া বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় তাদের টিউশনি করে চলতে হয়। হল বন্ধ রাখায় টিউশনির পুরো মাস পড়াতে পারেন না বলে মাসিক বেতন না পেয়ে অনেকটা চাপ ও হতাশা নিয়ে বাড়ির পথ ধরতে হয় বলে অনেকের দাবি।

ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ৪র্থ বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ফাইজুর আলম মঈন জানান,  এই ছুটিতে হল বন্ধ করে দেওয়ায় পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া যারা টিউশনি করে নিজেদের পড়াশোনা খরচ চালায়, ১৫ দিনের টিউশনি বন্ধ দেওয়ায় আর্থিকভাবে সেসব শিক্ষার্থীর কেউ কেউ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কৃষি অনুষদের আবাসিক শিক্ষার্থী ফরহাদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম মাঝারি ছুটিতে হল বন্ধ ঘোষণা করা হয় না। এমনকি ঈদের ছুটির সময়ও হলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য খোলা থাকে। ভবিষ্যতে যেন এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয় সে দাবি জানান তিনি।

জানা যায়, দেশের ছোট-বড় বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব ছুটিতে হল খোলা রাখা হয়। এই ঈদের লম্বা ছুটির সময়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য খোলা রাখা হয়। এছাড়া পূজার ছুটিসহ অন্যান্য ছুটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়,  শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,  বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (রংপুর), হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (দিনাজপুর), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (ময়মনসিংহ) আবাসিক হলগুলো খোলা রাখা হয়। 

এ বিষয়ে এম কেরামত আলী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আশরাফুল আলম বলেন, ‘হল বন্ধেও শিক্ষার্থীরা থাকার আগ্রহ প্রকাশ করলে আগে থেকে আবেদন দিলে আমরা বিবেচনা করতাম। এখন আর এই বিষয়ে আলোচনার করার কোনো সুযোগ নেই।’

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সন্তোষ কুমার বসু জানান, প্রভোস্ট কাউন্সিল মিটিংয়ের মাধ্যমে যে সিদ্বান্ত জানিয়েছে, সে অনুযায়ী নোটিস করা হয়েছে। এরপরেও হলে থাকার বিষয়ে কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close