মঞ্জুরুল হক, জামালপুর

  ২৮ মার্চ, ২০২৪

জামালপুর

মেলান্দহে আশ্রয়ণের দুটি ঘর বিক্রির অভিযোগ

* একজনের বরাদ্দের ঘরে থাকেন আরেকজন * সচ্ছল ব্যক্তির নামে একাধিক স্থানে ঘর বরাদ্দ

জামালপুরের মেলান্দহে মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের দুটি ঘর বিক্রি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ ঘর বরাদ্দপ্রাপ্ত গোপাল চন্দ্র দাস ও শিল্পী খাতুনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়সহ সরকারি কয়েকটি দপ্তরে অভিযোগ হয়েছে।

এর আগে ২০২০ সালে উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর পূর্বপাড়া এলাকায় অবস্থিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য ৪০টি ঘর বরাদ্দ দেয় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার শ্যামপুর এলাকায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক পাশে ১২টি, অন্য পাশে ২৮টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ১২টির মধ্যে সব পরিবার মোটামুটি ঠিক আছে। অন্য পাশে ২৮টি ঘরের মধ্যে ১৮টি ঘরের মালিক পরিবার নিয়ে বসবাস করলেও ১০টি ঘর তালাবদ্ধ রয়েছে। নির্মাণ করা দুই একটি ঘরের দেওয়াল, মেঝে ও পিলারে ফাটল ধরেছে।

জানতে চাইলে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী রাশেদা বেগম ও হাসনা বেগম বলেন, তালাবদ্ধ কিছু ঘরের লোকজন কাজের তাগিদে ঢাকায় চলে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশ্রয়ণ প্রকল্পের একজন বাসিন্দা বলেন, গোপাল চন্দ্র ও শিল্পী খাতুন গত মাসে তাদের বরাদ্দের দুটি ঘরই টাকার বিনিময়ে অন্যের কাছে হস্তান্তর করে ফেলেছেন। এর মধ্যে গোপাল হস্তান্তর করেছে দুলাল মিয়া নামে একজনের কাছে, আর শিল্পী করেছেন এলাকার মো. সোলায়মানের কাছে হস্তান্তর।

টাকার বিনিময়ে ঘর হস্তান্তরের অভিযোগ ব্যাপারে জানতে গোপাল চন্দ্র দাসের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আশ্রয়ণ কেন্দ্রে বসবাসকারী গিয়াস উদ্দিন বলেন, তিনি আশ্রয়ণের বরাদ্দ প্রাপ্ত করিম মিয়ার ঘরে থাকেন। তবে করিমের নামে মেলান্দহের আরেক জায়গায় ঘর বরাদ্দ আছে।

গিয়াস উদ্দিন বলেন, শ্যামপুর পূর্বপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে কোনো যাতায়াতের পথ নেই, মানুষের বাড়ির ওপর দিয়ে ও খেতের আইল দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। পায়ে হাঁটা ছোট রাস্তায় বৃষ্টি হলে পানি জমাসহ যাতায়াতে অনেক সমস্যা হয়। এ ছাড়া এ রাস্তা দিয়ে একটি ভ্যানও আসে না, ফলে কোনো কর্মও করা যায় না এখান থেকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশেই বসবাসকারী খোরশেদ আলম নামে এক নেতার দুই ছেলের নামে এই প্রকল্পে দুইটি ঘর বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু তারা সেখানে কেউ থাকেন না। কারণ তাদের আগে থেকেই বড় বড় ঘর রয়েছে।

এলাকার বাসিন্দাদের একজন বলেন, আশ্রয়ণের জমিটুকু এতদিন খোরশেদ আলমের দখলেই ছিল, যার জন্যই সরকার তাকে সহানুবতি দেখিয়ে হয়তো বা দুইটি ঘর দিয়েছে।

জানতে চাইলে মেলান্দহ ইউএনও মাহবুবা হক জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের কোনো ঘর টাকার বিনিময়ে হস্তান্তরের সুযোগ নেই। তবে কেউ যদি গোপনে কিছু করে থাকে, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের রাস্তার ব্যাপারে শিগগিরই ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথাও জানান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close