রবিউল ইসলাম, টঙ্গী (গাজীপুর)

  ০১ জানুয়ারি, ২০২৪

নিয়ন্ত্রণহীন প্রচার মাইক উচ্চৈঃশব্দে অতিষ্ঠ টঙ্গীবাসী

* নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইক ব্যবহারের নির্দেশ * প্রতিদিন সকাল ৯টার থেকে প্রায় রাত ১০-১১টা পর্যন্ত মাইকে উচ্চৈঃশব্দে বাজে গান * মানা হচ্ছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হাসপাতাল, নো মাইকিং জোন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন প্রার্থী ও সমর্থকদের উচ্চৈঃশব্দের প্রচার মাইকে অতিষ্ঠ গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা বাসিন্দারা। অনেক স্থানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পক্ষে বাজানো হচ্ছে প্রার্থীর পক্ষে তৈরি প্রচার গান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ‘নো মাইকিং জোন’ও মানা হচ্ছে না।

৭ জানুয়ারি ভোট উপলক্ষে টঙ্গীতে জোরেশোরে প্রচার চালাচ্ছেন প্রার্থী ও তার সমর্থকরা। কৌশল হিসেবে গাড়িবহরে পিকআপভ্যানে উচ্চৈঃশব্দের সাউন্ড সিস্টেমে গান বাজাচ্ছে প্রার্থীরা। এছাড়া পাড়া-মহল্লায় মাইকে উচ্চৈঃশব্দে প্রচারণার গান বাজাচ্ছেন সমর্থকরা। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগরবাসী।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারে মাইক ব্যবহার করতে পারবেন। এরপরও মাইক ব্যবহার করলে তা আইনত দণ্ডনীয় হবে। তবে সরেজমিনে দেখা মেলে এর উল্টো চিত্র।

গাজীপুর-২ (সিটি করপোরেশন ৩৬টি ওয়ার্ড) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলের তেমন প্রচার নেই। তবে ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দি এবং ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের সমর্থকরা মানছেন নির্বাচনী আইন। প্রতিদিন সকাল ৯টার পর থেকে রাত ১০-১১টা পর্যন্ত মাইকে উচ্চৈঃশব্দে গান বাজিয়ে চালানো হচ্ছে তাদের নির্বাচনী প্রচার। এতে নগরবাসী শারীরিক ও মানসিক নানা সমস্যায়। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তাদের।

৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দুলাল হোসেন বলেন, সকাল থেকেই শুরু হয় মাইকের যন্ত্রণা। উচ্চৈঃশব্দে মাইক বাজাতে থাকে। মাইকে প্রচারে সরকারি নিয়মনীতি মানা হয় না। এ কারণে অনেক সময় বিদ্যুতের জরুরি ঘোষণাও খেয়াল করা হয় না। পরে আমাদের ভোগান্তিতে পড়ে হয়।’

টঙ্গী এলাকার ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী জানান, ‘পাড়া-মহল্লায় নির্বাচনী প্রচারের উচ্চৈঃশব্দে ভোগান্তির কথা কেউ বিবেচনা করছে না। অতি দ্রুত আইনের কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন।’

উচ্চৈঃশব্দের প্রভাব বিষয়ে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘উচ্চৈঃশব্দ অদৃশ্য শত্রু। এতে সবাই আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শব্দদূষণের ফলে বধিরতা, রক্তচাপ বৃদ্ধি, হৃদযন্ত্রের জটিলতা, ঘুমের ব্যাঘাতসহ অনেক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই শব্দযন্ত্রের ব্যবহার রোধে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।’

জানতে চাইলে গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতেহ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন আচরণবিধি কোনো প্রার্থী ও সমর্থক ভঙ্গ করছে কিনা তা তদারকি করতে জেলা প্রশাসকের একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে কাজ করছে। এছাড়া প্রতিনিয়তই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। নির্বাচন পর্যন্ত এসব অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close