জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

  ২৩ নভেম্বর, ২০২২

গম সংকটে সৈয়দপুরে আটা কারখানা বন্ধ

ভারত থেকে গম আমদানি বন্ধ হওয়ায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে গমের সংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলে ১১টি মিলের মধ্যে চারটি মিল বন্ধ হয়ে গেছে। গম সংকটে আটা ও ময়দার উৎপাদন নেমেছে অর্ধেকেরও কম। আটা-ময়দার উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে। আর প্যাটেকজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়। এর ফলে ক্রেতারাও পড়েছেন বিপাকে।

মজনু নামের এক ব্যক্তি জানান, চিকিৎসক তাকে দুই বেলা রুটি খেতে বলেছেন। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে রুটি খেয়ে আসছেন তিনি। কিন্তু গত ১০-১৫ দিন ৪০-৪৫ টাকা দরের আটা বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা কেজি দরে। এ কারণে খাবারের তালিকা থেকে আটা বাদ দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে চিনি ও তেল ক্রয় করছেন প্রায় অর্ধেকের মত। শুধুমাত্র উৎপাদন ও আমদানি কম হওয়ায় প্রতিটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এজন্য তার মত অনেকেই বাজারের তালিকা থেকে অনেক পণ্যই অর্ধেক করে ক্রয় করছেন।

মিল মালিকরা জানান, সৈয়দপুর শহরের বিসিক শিল্পনগরীসহ উপজেলায় ১১টি আটা ও ময়দা মিল রয়েছে। এর মধ্যে গম সংকটে চারটি মিল বন্ধ হয়ে গেছে। বাকিগুলো চলছে ধুকে ধুকে। অন্যদিকে দুই শতাধিক কর্মচারী বেকার হয়ে গেছে।

আটা ও ময়দা মিল মালিক আরিফুল ইসলাম জানান গম সংকট কবে কাটবে তা বলা মুশকিল। আটা ও ময়দা উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বাকিতে সরবরাহ করেছি। বর্তমানে উৎপাদন নেমেছে সিকি ভাগে। আটা ও ময়দা উৎপাদন বৃদ্ধি করে পূর্বের জায়গায় সরবরাহ করতে না পারলে বাকি টাকা উত্তোলন করাও সম্ভব নয়। এর ফলে প্রায় মিল মালিকরা চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

মিল মালিকরা জানান, সৈয়দপুরে আটা ও ময়দা উৎপাদনে প্রতিদিন প্রায় ৩৫০ শত টন গমের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আমদানিকারকদের কাছ থেকে বেশি দাম দিয়েও মিলছে না চাহিদা মত গম। আমদানিকারকদের কাছ থেকে এক কেজি গম ক্রয় করছেন ৫৫ টাকা দরে। এর সঙ্গে পরিবহন, বিদ্যুৎসহ শ্রমিক মজুরি মিলে খরচ পড়ছে ৫৮-৬০ টাকা। শুধুমাত্র গম সংকটের কারণেই পাইকারি ও খুচরা বাজারে প্রভাব পড়েছে।

সৈয়দপুর বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম জানান, প্রায় প্রতিটি মিলেই প্রতিদিন ৩০-৪০ টন গম দরকার। কিন্তু তা মিলছে না। শুধুমাত্র ব্যবসা চালু রাখতে গিয়ে ও শ্রমিকদের ধরে রাখতে লোকসান গুণে মিল চালু রাখা হয়েছে। মাস খানিকের মধ্যে গমের আমদানি বাড়ানো না হলে সৈয়দপুরে প্রায় সব মিলই বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close