সাজাদুল ইসলাম, উলিপুর (কুড়িগ্রাম)

  ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

নদীতে বিলীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুশ্চিন্তায় হাজারো শিক্ষার্থী

করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ সময় পর ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু কুড়িগ্রামের উলিপুরের ৬টি স্কুলের প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী খুঁজে পাবে না তাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠান। নদীতে ভেঙে গেছে তাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠান।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় একটি পৌরসভাসহ ১৩টি ইউনিয়নে ২৬৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫২ হাজার ৩২৫ জন। গত দেড় বছরে খারিজা নাটশলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জুয়ান সতরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরবজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম বজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নয়াদাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চেরাগির আলগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে।

তিস্তার ভাঙনের হুমকির কবলে রয়েছে থেতরাই ও বজরা ইউনিয়নের আরো চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পশ্চিম বজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যতীত বাকি পাঁচটি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব জায়গায় অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পশ্চিম বজরা বিদ্যালয়টি নির্দিষ্ট জায়গা না পেয়ে সাময়িক সময়ের জন্য ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে টিনের চালা তুলে পাঠদানের চিন্তা ধারা করছেন বলে জানা গেছে। নদীতে বিলীন প্রতিষ্ঠানগুলোর ছোট ছোট শিশু সন্তানের শিক্ষা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন অভিভাবকরা। কারণ গায়ের কাছে নেই বিদ্যালয়! দূরে কোথাও স্থাপন হয়েছে সেই প্রতিষ্ঠান।

এ ছাড়াও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় নিম্ন মাধ্যমিক ১৪টি, মাধ্যমিক ৫৩টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ৭টি, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ৪টি, কারিগরি কলেজ দুটি, কৃষি কলেজ একটি, ডিগ্রি কলেজ ৫টি, পলিটেকনিক্যাল একটি, দাখিল মাদরাসা ৪০টি, আলিম মাদরাসা ৭টি, ফাজিল মাদরাসা ৮টি এবং কামিল মাদরাসা রয়েছে ১টি। ১৪৩টি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪৮ হাজার ৮০৫ জন। বৈশ্বিক করোনার বিপর্যস্ত সময় পাড় করে প্রায় দীর্ঘ ১৭ মাস পর যখন শিক্ষার্থীরা ফিরবে প্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঠিক তখনি দেখা যাবে কেউ ঝড়ে পড়েছে, কেউবা অন্যত্র চলে গেছে জীবিকার তাগিদে। আবার শত শত শিক্ষার্থী সংসার বাঁধছে স্বামীর ঘরে। হারিয়ে গেছে কারো প্রিয় বন্ধু-বান্ধব, যা শুধু এখন তাদের স্মৃতির অন্তরালে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঘুরে প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চিঠি পেয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামো থেকে শুরু করে শিক্ষার অন্যান্য উপকরণগুলো ধোয়া-মোছা করে পাঠদানের উপযোগি করে তুলছেন তারা।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাদিরউজ্জামান বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আমরা প্রতিটি বিদ্যালয়কে পাঠদানের উপযোগী করে তুলতে সক্ষম হয়েছি। সরকারি নির্দেশনা মতো শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা আসার পর থেকে প্রতিটি বিদ্যালয়কে পাঠদানের উপযুক্ত করে তোলা হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close