সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

  ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯

উদ্ধার হওয়া বাবুর আমবাগানটি এখন ‘খোলা জানালা ইকোপার্ক’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার গোপালপুর এলাকায় বাবুর আমবাগান হিসেবে খ্যাতি পাওয়া দখল হয়ে যাওয়া জায়গাটি এখন বদলে গেছে। উপজেলার পাটকেলঘাটা-তালা বাইপাস সড়কের পার্শ্বে সেই আমবাগানটি এখন ইকোপার্ক। যা উপজেলার মানুষের জন্য একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল সাংবাদিক আকরামুল ইসলাম ‘হারিয়ে গেছে ঐতিহ্য, দখল হয়েছে জমি’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেন। খবর প্রকাশের পর তৎকালীন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দীনের সহযোগিতায় ও তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বর্তমান মাগুরা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ফরিদ হোসেন অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন। একই সঙ্গে দখল হওয়া বাবুর আমবাগানটিকে ঘিরে শুরু করেন বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন তৈরীর কার্যক্রম। অবশেষে প্রশাসনের উদ্যোগে খোলা-জানালা ইকোপার্ক হিসেবে রুপায়ন করা হয়েছে দখল হয়ে যাওয়া আমবাগানটি। আর জমিদার বাড়িটি ব্যবহার হচ্ছে দর্শনীয় স্থান হিসেবে।

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, গোপালপুর এলাকায় তৎকালীন জমিদার ছিলেন অবলা কান্ত ঘোষ। অবলা কান্ত ঘোষ, বলয় ঘোষ, রবি ঘোষ ও উৎপল ঘোষের বাবা সুরেন ঘোষ ছিলেন সে সময়কার খুলনা জেলার চেয়ারম্যান। তৎকালীন প্রভাবশালী এ পরিবারটি দেড়শ বছর আগের কোনো এক সময়ে তালার গোপালপুর এলাকায় গড়ে তোলেন জমিদারি। সব মিলিয়ে এলাকায় তাদের সাতশ বিঘা জমি ছিল। যা এখন দখল করে নিয়েছে বিভিন্ন মানুষ। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সময় হঠাৎ রাতের আধারে পরিবার পরিজন নিয়ে জমিদার অবলা কান্ত দেশ ছেড়ে ভারতে পাড়ি জমান। তারপর থেকে তাদের কেউ আর এখানে ফিরে আসেননি। এরপর থেকে ধীরে ধীরে সব দখলে নিতে শুরু করে স্থানীয় মানুষ। পরে অনেকে জাল দলিল তৈরি করে নিজের জমি বলে দাবি করেন। দুটি পরিবার সরকারের কাছ থেকে বন্দোবস্ত নিয়ে সেখানে স্থায়ী বসবাসও শুরু করেছেন।

স্থানীয় সমাজকর্মী মো. আলাউদ্দীন গাজী বলেন, জমির সঙ্গে সঙ্গে বাবুর রেখে যাওয়া আমবাগানটিও সব দখল করে নিয়েছিলো বিভিন্ন মানুষ। দেড় বছর আগে এখানে ইকোপার্ক তৈরী কার্যক্রম শুরু হয়। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষরা এখানে একটু নিরিবিলি সময় কাঁটানোর জন্য এখানে আসেন। তালাবাসীর একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র হয়েছে এই খোলা জানালা ইকোপার্কটি।

ইকোপার্কটি দেখভালের দায়িত্বে থাকা তালার ইসলামকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুভাষ সেন বলেন, মন্ত্রনালয় থেকে একটি টিম ইকো পার্কটি পরিদর্শন করেছেন। এটাকে বলা হচ্ছে ডিজিটাল জরিপ। এটাকে পূর্ণাঙ্গ পার্ক হিসেবে রুপদান করার জন্য কাজ করছে সরকার।

তৎকালীন ইউএনও ও বর্তমান মাগুরা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. ফরিদ হোসেন জানান, জমিদার অবলা কান্ত ঘোষের ২৮ বিঘা মত জমি অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। পুরো জমিটাই খোলা জানালা ইকোপার্ক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকারি উদ্যোগেই ধীরে ধীরে এটা পূর্ণাঙ্গ পার্ক হিসেবে রুপলাভ করবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close