কেরানীগঞ্জে সড়কের পাশে কয়েক ঘর বাস্তুহারার বাস। সেখানে এক জীর্ণ ঘরে বাবা-মা আর ফুটফুটে ছোট বোন নিয়ে আসিফের সংসার। পাশের প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হতে না পারলেও সেই স্কুলের মাঠেই কাটে তার দিনের বেশির ভাগ সময়, কিছুক্ষণ আগে সেখান থেকে চলে আসে পাশের ডকইয়ার্ডের দিকে। হঠাৎই স্কুল মাঠে স্মাইল শাটেলের সদস্যদের হাতে শীতবস্ত্র দেখে অনেকের মতো সেও কৌতূহলী হয়ে ওঠে। ফের ছুটে যায় সেখানে। এসেছেন ১০ জন বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া ভাইয়া-আপু। গতবারও এসেছিলেন। এজন্য তাদের মধ্যে দুজনকে সে চিনতে পেরেছে। সবার হাতেই রঙিন কম্বল। কাছে গিয়ে জানতে পারে, এবার ভাইয়া-আপুরা শুধু কম্বলই আনেননি, সঙ্গে এনেছেন সবার জন্য উপহার।

এরা সবাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী। সমাজসেবামূলক সংগঠন স্মাইল শাটেল ফাউন্ডেশনের সদস্য। এবারও এসেছেন শীতবস্ত্র (কম্বল) নিয়ে। পুরান ঢাকা ও কেরানীগঞ্জের স্বল্পসংখ্যক অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একদল তরুণ-তরুণীর নিরলস পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে স্মাইল শাটেল ফাউন্ডেশন। সংগঠনটি এরই মধ্যে সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে সাতটি প্রজেক্ট। পথশিশু থেকে শুরু করে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। সঙ্গে আছে কানাডাধীন এলডিএফ ফাউন্ডেশনও। বিভিন্ন সময় আর্থিক অনুদান ও পরামর্শ দিয়ে স্মাইল শাটেলের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে ভিনদেশি এই সংগঠন।

গত বুধবার সকালে পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও কেরানীগঞ্জে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে সংগঠনটি। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ছোট উপহারও দেয় তারা। পরে সন্ধ্যায় সদরঘাট ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে স্মাইল শাটেল ফাউন্ডেশন।

শীতবস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, পথশিশুদের শিক্ষাকার্যক্রম ও স্বাস্থ্যসচেতনতা নিয়েও কাজ করছে স্মাইল শাটেল ফাউন্ডেশন। এ ছাড়া ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান আয়োজন করে মহামারি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করেছে সংগঠনটি।

"