চট্টগ্রাম ব্যুর

  ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৯

নিজের স্বপ্নপূরণে অদম্য সাকিল

চোখের আলোয় পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখতে পান না তিনি। তবু থেমে যায়নি তার শিক্ষিত হওয়ার অদম্য ইচ্ছা। বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে তিনি এগিয়ে চলেন স্বপ্নের পথে। শিক্ষার আলোয় নিজেদের আলোকিত করার প্রাণপণ চেষ্টায় পিছিয়ে নেই সাকিল খান। সুস্থ-সবল মানুষের মতো মেধা মননে কৃতিত্ব রেখেছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এই শিক্ষার্থী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভর্তি পরীক্ষায় মেধাস্থানে জায়গা করে নিয়েছেন সাকিল।

অন্তরের আলো দিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর হামজারবাগ রহমানিয়া উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে জেএসি পরীক্ষায় জিপি-৪ ও ২০১৭ সালে এসএসসিতে জিপি-৪.৪৫ পেয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন সাকিল খান। পরে ২০১৯ সালের চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে জিপি-৫ পেয়ে ২০১৯-২০ সেশনে চবিতে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি সরকারি দৃষ্টি ও বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।

জানা যায়, চট্টগ্রাম সাতকানিয়া উপজেলার পশ্চিম বাজালিয়া এলাকার মো. আইয়ূব খান ও ফারজানা বেগম দম্পতির তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে সাকিল খান সবার বড়। তাদের তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে এক ছেলে ও এক মেয়ে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মেয়েও এবার রহমানিয়া স্কুল থেকে জেএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। মেজো ভাই বেসকারি পলিটেনিক্যালে ডিপ্লোমা পড়ছে।

চট্টগ্রাম সরকারি দৃষ্টি ও বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম সরকারি দৃষ্টি ও বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। যার মধ্যে আটজন উত্তীর্ণ হয়েছে। তার মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে দুজন। সব শিক্ষার্থী মানবিক বিভাগ থেকে অংশগ্রহণ করেছিল। তাদের মধ্যে একজন সাকিল খান চবি ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

তার অনুভূতি জানাতে চাইলে সাকিল খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অথবা চবিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অথবা সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়ার স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন আমার পূরণ হয়েছে। রাজনীতিবিজ্ঞান নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পরে ভবিষ্যতে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার হয়ে কলেজে শিক্ষক হিসেবে দেশে শিক্ষার আলো বিস্তারে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই। একই সঙ্গে দেশ ও মানবতার কল্যাণে কাজ করতে চাই। চট্টগ্রাম সরকারি দৃষ্টি ও বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবদুস সামাদ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যখন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায় তখন আমার কী যে আনন্দ লাগে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close