সিলেট প্রতিনিধি

  ২২ অক্টোবর, ২০১৯

সিলেটে পেঁয়াজের বাজার ১৫ আড়তদারের কবলে

সিলেটে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা কাটছে না। সিন্ডিকেটের কবল থেকে বেরুতে পারছে না পেঁয়াজের বাজার। কিছুদিন আগেও ১২০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সিলেটের পাইকারি বাজারে। মাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিশেষ অভিযানে কিছুটা দাম কমে আসে। কয়েক দিন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। কিন্তু কয়েক দিনের ব্যবধানে ফের লাগামহীন পেঁয়াজের বাজার জনজীবনে সৃষ্টি করেছে অস্থিরতা। ক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছেন সিলেটের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।

সূত্রে জানা গেছে, ১৫ অড়তদার নিয়ন্ত্রণ করছেন পুরো সিলেটের পেঁয়াজের বাজার। বাজার নিয়ন্ত্রণ করা কয়েকজনের মধ্যে সিদ্দিক, শুকান্ত, শরীফ, কাশেম ও উত্তম অন্যতম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খুচরা ব্যবসায়ী জানান ১৫ জনের এই সিন্ডিকেটই পুরো পেঁয়াজের বাজারের নিয়ন্ত্রক। তাদের ইশারায় দাম উঠা-নামা করে পেঁয়াজের।

তার অভিযোগ, যেখানে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ ট্রাক পেঁয়াজ আসে, সেখানে গত মঙ্গলবার মাত্র তিন ট্রাক এসেছে। এক ট্রাক পেঁয়াজ ভারতের ভোমরা থেকে এসেছে। অন্য দুটি ট্রাকে এসেছে মিয়ানমারের পেঁয়াজ। তবে মিয়ানমার থেকে আসা অধিকাংশ পেঁয়াজে পচন ধরেছে বলেও জানান ওই ব্যবসায়ী। তারপরও ওই পেঁয়াজ ৭২ টাকা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। খুচরাবাজারে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। আর ভারতের ভোমরা থেকে আসা পেঁয়াজ আড়তদারদের কাছ থেকে ৮২ টাকায় কিনে ৮৫ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। দোকানিরা ৮৫ টাকায় কিনে নিয়ে ৮৮ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।

বুধবার নগরের পাইকারি কালীঘাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভ্যান গাড়িতে করে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। মিয়ানমারের নিম্নমানের ছোট পেঁয়াজ দুই দিন আগে ৫৫ টাকা বিক্রি হলেও বুধবার তা ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ২০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর বড় পেঁয়াজ ভ্যান গাড়িতে ৮০ টাকা বিক্রি হলেও দোকানিরা বিক্রি করছেন ৮৮ থেকে ৯০ টাকায়। এই অবস্থা চলতে থাকলে ফের পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে শঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

পেঁয়াজ কিনতে আসা সিলেট নোয়াকুরুমখলার বাসিন্দা আশিকুর রহমান আশিক প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। না হলে একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে যায় কীভাবে?

জেলা প্রশাসনের কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোরশেদ কাদের বলেন, বাজারে আসা মিয়ানমারের নিম্নমানের পেঁয়াজ ৫৫ ও এর চেয়ে একটু ভালো পেঁয়াজ ৭৫ টাকা এবং ভারতের ভোমরা থেকে আসা এলসি পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তারা পেঁয়াজের মানভেদে কেজিতে তিন থেকে চার টাকা লাভ করে বিক্রি করছেন। তিনি জানান ১৫ আড়তদার সিলেটের পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন এমন তথ্যও তাদের হাতে রয়েছে। এদের কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। যাচাই বাছাই শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলোয়ার হোসেন বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। আর মিয়ানমারের আমদানি করা পেঁয়াজের মান খারাপ; যার অধিকাংশ পচা। এ জন্য ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। পেঁয়াজ যাতে সহজে আসতে পারে, এজন্য সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close