খুলনা প্রতিনিধি

  ২১ মার্চ, ২০১৮

মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি আওয়ামী লীগের

আজ সভাপতির সঙ্গে খুলনার নেতাদের বৈঠক

আসন্ন খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এখনো মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি। ফলে দলের স্থানীয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতারাসহ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এক ধরনের দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন। তবে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় দলের একাধিক নেতা আলোচনায় রয়েছেন। ভেতর-বাইরে মেয়র প্রার্থী নিয়ে সরব আলোচনাও চলছে।

এদিকে, আজ বুধবার দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে খুলনা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের কথা রয়েছে। এ বৈঠকেই কেসিসির মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর কেসিসির বর্তমান পরিষদের পাঁচ বছরের মেয়াদপূর্ণ হবে। এ পরিষদের প্রথম সাধারণ সভা ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছিল। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুযায়ী পাঁচ বছর মেয়াদপূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিন আগে যেকোনো সময় ভোট করতে হবে। সে হিসাবে আগামী ঈদুল ফিতরের আগে কেসিসি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

দলীয় সূত্র জানায়, ৩ মার্চ খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানের জনসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেসিসির মেয়র প্রার্থী ঘোষণা দেবেন এমন প্রত্যাশা শুধু দলীয় নেতাকর্মীরাই নয়; আগ্রহ ছিল খুলনাবাসীরও। কিন্তু জনসভায় কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা না দেয়ায় ক্ষমতাসীন এ দলটির আসন্ন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী কে হচ্ছেনÑ তা নিয়ে জনমনে রয়েছে নানা কৌতূহল। দলটির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেসিসির আগামী নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী নিয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি কেন্দ্র থেকে।

সূত্র মতে, সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বাগেরহাট-৩ (মংলা-রামপাল) আসনের সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকে নির্বাচনী এলাকাতে যাতায়াত বেশি করছেন তিনি। খুলনা শহরের চেয়ে বেশি তার নির্বাচনী এলাকার দলীয়, সরকারি-বেসরকারি ও সামাজিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ বেশি। এদিকে সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম মেয়র প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘদিন প্রচারণা চালাচ্ছেন। এছাড়া নতুন করে আলোচনায় এসেছেন বিজেএ সভাপতি ও দৌলতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সৈয়দ আলী। প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন নগর যুবলীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান পপলুও। ক্ষমতাসীন দলের এসব প্রার্থীদের নিয়ে ভেতর-বাইরে আলোচনা চলছে নগরীতে। দলীয় একাধিক নেতা জানান, কেসিসি নির্বাচনকে সামনে রেখে বছর দুয়েক আগে থেকে দলের মধ্যে একাধিক নেতা মেয়র প্রার্থী হওয়ার প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন। সম্প্রতি মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সব ধরনের প্যানা-সাইন, গেট ও পোস্টার নামিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আগামী কেসিসি নির্বাচনকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব মিটিয়ে একক প্রার্থীর পক্ষে সবাই কাজ করারও সিদ্ধান্ত হয়। দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সর্বশেষ বৈঠকে সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়।

এদিকে, আজ দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে খুলনা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে চূড়ান্ত হতে পারে কেসিসি মেয়র প্রার্থী। পাট মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হবে খুলনার নেতাদের। এরপর দলের সভাপতির সঙ্গে খুলনা আওয়ামী লীগ নেতাদের একান্ত বৈঠকে খুলনার শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের সম্পর্কে আলোচনার পাশাপাশি সিটি করপোরেশন ও একাদশ সংসদ নির্বাচন বিষয়ে আলোচনা হবে বলে প্রত্যাশা নেতাদের। সিদ্ধান্ত আসতে পারে কেসিসির নৌকা প্রতীকের দলীয় মেয়র প্রার্থীর ব্যাপারেও।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ বলেন, ‘বুধবার পাট মন্ত্রণালয়ের সভায় খুলনার শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকবেন। সেখানের বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে খুলনার শীর্ষ নেতাদের একান্ত বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। খুলনায় জনসভার পর প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাই বৈঠকের মূল লক্ষ্য। এছাড়া জনসভা পরবর্তী খুলনা অঞ্চলের মানুষের অভিব্যক্তিও তাকে জানানো হবে। সাংগঠনিক, প্রশাসনিক ও জনপ্রতিনিধিদের সম্পর্কেও আলোচনা হতে পারে।’ কেসিসির প্রার্থী সম্পর্কে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক এমপি বলেন, ‘দল যাকে উপযুক্ত মনে করবেন, তাকে মনোনয়ন দেবে। আমরা সবাই তার পক্ষে কাজ করব।’নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপি বলেন, ‘অনেক বড় দল, যোগ্য নেতাও অনেক, যে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারেন, তবে দল যাকেই মনোনয়ন দেবে আমরা সবাই তার হয়ে লড়াই করব।’

উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৩ সালের ১৫ জুন কেসিসি নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি ১ লাখ ৮০ হাজার ৯৩ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত তালুকদার আবদুল খালেক এমপি পেয়েছিলেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২২ ভোট।

উল্লেখ্য, বিএনপির নিশ্চিত প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের নাম রয়েছে আলোচনায়। যদিও দলের পক্ষ থেকে এখনো চূড়ান্ত ঘোষণা আসেনি। তবে দলের জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনাও মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রচারণায় রয়েছে। এরই মধ্যেই জাতীয় পার্টি দলের নগর শাখার আহ্বায়ক এস এম মুশফিকুর রহমানকে এবং চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নগর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হককে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist