ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ৩১ মার্চ, ২০২৪

ক্যাচ মিসের মহড়া অস্বস্তিতে বাংলাদেশ

উইকেটবিহীন প্রথম সেশনের পর বাকি দুই সেশন বাংলাদেশের জন্য ছিল তুলনামূলক ভালো। তবে রানে ভরা উইকেটে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে শ্রীলঙ্কাই ধরে রেখেছে নিয়ন্ত্রণ। নিশান মাদুশকার শুরুর পর ব্যাট হাতে দৃঢ়তা দেখান দিমুথ করুণারত্নে আর কুশল মেন্ডিস। সেঞ্চুরির আগে এই দুজন থামলেও এই ভিত ধরে বড় রানের আভাস দিচ্ছেন বাকিরা। শনিবার প্রথম দিন শেষে আগে ব্যাটিং নেওয়া শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩১৪। ৩৪ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন সাবেক অধিনায়ক দীনেশ চান্দিমাল। ১৫ রান করে তার সঙ্গী বর্তমান অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভা।

দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৩ রান এসেছে কুশলের ব্যাটে, ৮৬ করে থেমেছেন করুণারত্নে। ওপেনার মাদুশকা করেন ৫৭। দিনের বাংলাদেশের সফলতম বোলার অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ। ৬৪ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি। প্রায় এক বছর পর টেস্টে ফেরা সাকিব আল হাসান নিয়েছেন এক উইকেট, আরেকটি রান আউট।

প্রথম দুই সেশনে ২ উইকেটে ২১৪ রান তোলা শ্রীলঙ্কা শেষ সেশনে হারায় আরো ২ উইকেট, যোগ করে আরো ১০০ রান। চা-বিরতির পর নেমে নিজের ও দলের রান অনায়াসে বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন কুশল। তাকে থামানোর কোনো উপায় মিলছিল না। সেঞ্চুরির দিকে যাচ্ছিলেন শ্রীলঙ্কার অন্যতম অভিজ্ঞ ব্যাটার। ম্যাথিউসের সঙ্গেও তার জুটি জমে উঠেছিল। তবে নার্ভাস নাইনটিতে কাবু তিনি। সাকিবের আর্ম বল ঠেকাতে গিয়ে ব্যাটের বাইরের কানায় লাগান ডানহাতি ব্যাটার। ডানদিকে অনেকখানি ঝাঁপিয়ে ক্যাচ জমান মিরাজ। ১৫০ বলে ১১ চার, ১ ছক্কায় ৯৩ করে থামে তার ইনিংস। কুশলকে ফেরানোর পর সাকিব কিছুটা তেজ পান। ক্রিজে আসা চান্দিমালকে প্রথম কয়েক বল ভোগান। তবে ওই ঝাপ্টা সামলে নিয়ে চার-ছয়ে সাকিবকে উড়ান চান্দিমাল। দ্রুতই থিতু হয়ে যান তিনি।ম্যাথিউস বেশ কিছুটা সময় নিয়ে খেলছিলেন। মন্থর ইনিংসটিতে সহযোগী ভূমিকা নিচ্ছিলেন তিনি। তবে নতুন বল নিয়ে তাকে ফেরায় বাংলাদেশ। হাসানের বাড়তি লাফানো বল হকচকিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন অভিজ্ঞ ব্যাটার। ২৩ রান করতে ম্যাথিউস খেলেন ৭১ বল। তার ক্যাচও নেন মিরাজ। দিনের শেষ ৯ ওভার ধনঞ্জয়াকে নিয়ে পার করে দেন চান্দিমাল। পঞ্চম উইকেটে তারা যোগ করেছেন ২০ রান। দ্বিতীয় দিনে ক্রিজে থাকা এই দুই ব্যাটার ও কামিন্দু মেন্ডিস কী করেন তার ওপর নির্ভর করছে শ্রীলঙ্কার পুঁজি। এদিকে তখন ৪৪তম ওভারের খেলা চলছে। শ্রীলঙ্কার রান পেরিয়ে গেছে ১৫০। জুটি ভাঙতে মরিয়া বাংলাদেশ তাইজুল ইসলামের বলে কুশল মেন্ডিসকে ফেরানোর মরিয়া চেষ্টা চালায়। তাতে অহেতুক নষ্ট হয়েছে মূল্যবান রিভিউ।

তাইজুলের বলটা কিছুটা এগিয়ে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেন ২৯ রানে অপরাজিত মেন্ডিস। বল পায়ে লেগেছে ভেবে তখন স্লিপে থাকা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত হাত তুলে আবেদন করেন। বোলার তাইজুলকে জিজ্ঞেস করেন পায়ে লেগেছে? দ্বিধাগ্রস্ত তাইজুল স্পষ্ট কিছু বলতে পারছিলেন না। কিপার লিটন দাসের কাছ থেকেও সাড়া পাওয়া যায়নি। শান্তকে স্টাম্প মাইকে বলতে শোনা যায়, ‘পায়ে লাগছে আগে, নেব।’ তারপর রিভিউ নেওয়ার ইশারা করেন শান্ত। মাঠের আম্পায়ার রড টাকারের এই সিদ্ধান্ত টিভি আম্পায়ার গ্রিস গ্র্যাফানিকে এলট্রা এজও দেখতে হয়নি। কারণ রিপ্লেতে দেখা যায় তাইজুলের বল পরিষ্কারভাবে লাগছে মেন্ডিসের মাঝ ব্যাটে। তার সামনের পা তখন বল থেকে অনেকখানি দূরে। স্বাভাবিকভাবেই রিভিউ হারায় বাংলাদেশ। রিভিউ হারানোর চেয়েও যেভাবে একটি রিভিউ নষ্ট হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। টেস্টে বরাবরই রিভিউ নিতে ভুগতে দেখা গেছে বাংলাদেশ দলকে। কোনটা চ্যালেঞ্জ করা দরকার, কোনটা দরকার নেই তা ঠিক করা হয়ে উঠে কষ্টকর। টেস্টে প্রতি ইনিংসে দেওয়া হয় তিনটা করে রিভিউ। বাংলাদেশের হতাশা এরপর আরো বাড়ান মেন্ডিস-করুণারত্নে। তাদের জুটিতে আসে ১১৪ রান। চা-বিরতির আগে করুণারত্নে ৮৬ করে আউট হলেও ৬৫ রানে অপরাজিত থেকে যান মেন্ডিস।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close