বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
বাঁশখালীর কালিপুর
আগাম লিচুর ফলন ও দাম ভালো, ছাড়িয়েছে লক্ষ্যমাত্রাও
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর লিচুর বাম্পার ফলন হওয়ায় ভালো দামে বিক্রি করে খুশি চাষি ও ব্যবসায়ীরা। মৌসুমের একেবারে প্রথম দিকেই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে কালিপুরের এই লিচু।
বাঁশখালী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৬৩০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাণিজ্যিক চাষ হয়। এবারে ফলন বেশি হওয়ায় লিচু চাষিরা খুশি। চাষিদের কৃষি অফিস থেকে পরামর্শসহ নানা সহযোগিতা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা। ভালো ফলন হওয়ায় একেকটি বাগান এক থেকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাঁশখালীর তিন চারটি এলাকায় লিচুর পাইকারী বাজার বসে। পাইকারদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন যায়গায় পৌঁছে যায় এসব লিচু।
জানা গেছে, উপজেলার বৈলছড়ি, গুণাগরি, পুকুরিয়া, জলদি, জঙ্গল চাম্বল সহ প্রায় প্রত্যেক ইউনিয়নেই পাহাড়ি এলাকায় একই সঙ্গে সমতলে লিচুর চাষ হয়ে আসছে। আগাম লিচু বাজারে দেখা মিলছে এখন। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন না হওয়ায় এবার লিচুর উৎপাদন হয়েছে। তাই লিচুর বাম্পার ফলন হলেও বেশ ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে, এতে চাষিরা বেশ খুশি।
উপজেলার বাজার সূত্রে জানা গেছে, চাহিদা থাকায় এবার আগাম লিচু বাগান ও লিচুর আকার ভেদে প্রতি ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকায়। স্থানীয় বাজারে প্রথমদিকে দাম বেশি থাকলেও ধীরে ধীরে ২০০-২৫০ টাকায় কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে ইতিমধ্যে বাঁশখালী অধিকাংশ হাট বাজারে লিচু ক্রয় করার জন্য মানুষের ভিড় লক্ষ করা গেছে। প্রতিদিন উপজেলার কালীপুরের রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে কিংবা গুনাগরিতে প্রধান সড়কের আশে পাশে সাধারণ যাত্রীরা গাড়ি থামিয়ে লিচু কিনতে দেখা যাচ্ছে। আবার কেউ দেশ ও বিদেশে লিচু রপ্তানি করার জন্য পাইকারি দামে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন।
কালিপুর ইউনিয়নের পূর্ব পালেকগ্রাম এলাকার লিচু চাষি মো. রিয়াদুল ইসলাম ও নুরুল হক জানান, মৌসুমের একেবারে প্রথম দিকেই কালিপুরের লিচুর বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এবার লিচু উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
কালিপুরের একটি বাগান থেকে লিচু কিনতে আসা আব্দুর রহমান বলেন, সারা বছর তো আমরা রাসায়নিক যুক্ত লিচু খেয়ে থাকি। কিন্তু বাঁশখালীর লিচুতে ভেজাল থাকেনা, তাই দাম একটু বেশি হলেও বাগান থেকেই বাচ্ছাদের জন্যে লিচু কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু ছালেক জানান, বাঁশখালীতে প্রায় সাড়ে ৬৩০ হেক্টর জায়গা জুড়ে লিচু চাষ হয়ে থাকে। বর্তমানে বাঁশখালীর সর্বত্র আগাম লিচু বাজারে আসায় চাষিরা অপেক্ষাকৃত একটু বেশি দামেই বিক্রি করছে।