ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৪ আগস্ট, ২০২১

অজি বধের পূর্ণাঙ্গ স্বাদ

২০০৫ সালে কার্ডিফ, ২০১৭ সালে ঢাকা, ২০২১ সালেও সেই ঢাকা। প্রথমে ওয়ানডে, এরপর টেস্ট আর সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি। অবশেষে তিন সংস্করণেই অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর স্বাদ পেল বাংলাদেশ। এর আগে ৪ ম্যাচের সবকটিতেই টাইগাররা হেরেছিল অজিদের কাছে। সব ম্যাচই ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।

মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল বহুল প্রতীক্ষিত টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে ১৩১ রানে থামে বাংলাদেশ। ফলে পরাজয়ের বৃত্ত ভাঙার কাজটি নিজেরাই কঠিন করে তোলে তারা। এ ম্যাচ জিততে বদলাতে হতো ইতিহাস। কারণ, এর আগে যে কখনোই টি-টোয়েন্টিতে এত কম রানের সম্বল নিয়ে জেতেনি তারা।

কিন্তু ইনিংসের প্রথম বলেই শেখ মাহেদীর উইকেট যেন বদলে দিল সব কিছু। মন্থর-টার্নিং ট্র্যাকে অ্যলেক্স ক্যারিকে বোল্ড করেন তিনি। মাহেদীর ভেতরে ফোকা বলটা পড়তেই পারেননি অজি ওপেনার। এরপর ক্যাঙ্গারু বাহিনীকে আর দাঁড়াতেই দেয়নি টাইগাররা। প্রথম ৩ ওভারে সফরকারীরা ৩ উইকেট হারিয়ে তখনই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে। মাহেদীর পর নাসুম ও সাকিবও নিয়েছেন নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার সমস্যা ছিল ব্যাটিং। সেটিই ধসে গেল বাংলাদেশের ঘূর্ণি জাদুতে। নাসুম আহমেদ বোলিং শেষ করেছেন ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে। বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে টিকে ছিলেন মিচেল মার্শ। বিপদ বাড়াতে থাকা এই ব্যাটসম্যানকেও ছেঁটেছেন নাসুম। তার বলে উড়াতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন মার্শ। ডিপ মিড উইকেট থেকে অনেকখানি ছুটে তা হাতে জমান শরিফুল ইসলাম। দুটি করে নিয়েছেন দুই পেসার- মুস্তাফিজ ও শরিফুল। একটি করে নিয়েছেন সাকিব ও মাহেদী।

ইনিংসের শেষ বলে গিয়ে মিচেল স্টার্ককে বোল্ড করেছেন মুস্তাফিজ। ১৯তম ওভারে শরিফুলের জোড়া আঘাতের পর শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২৮ রান। একটা ওয়াইডের সঙ্গে মুস্তাফিজ দিয়েছেন তিনটি সিঙ্গেল। অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে গেছে ১০৮ রানেই। ২৩ রানের জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে টাইগাররা এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে। ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন নাসুম আহমেদ।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে ভালো শুরু পায়নি বাংলাদেশও। মিচেল স্টার্ককে দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে দিলেও এরপরই কুঁকড়ে যান নাঈম শেখ। আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার ব্যাট বল লাগাতে না পেরে অস্থির হয়ে জশ হ্যাজলউডকে উইকেট ছুঁড়ে দেন। নাঈম টিকে গেলেও দ্রুত রান আসছিল না। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশও করে কেবল ৩৩ রান।

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ চারে উঠে ছিলেন না একদম সাবলীল। নড়বড়ে অবস্থায় ৫ রানে স্লিপে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান। সামলে নিয়ে ছক্কা মেরেছিলেন। কিন্তু রান বলের ব্যবধান কমাতে পারেননি পরেও। ২০ বলে ২০ রান করে থামেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক।

সাকিব মনোযোগ দেন টিকে থাকায়। ধীরে ধীরে আসতে থাকে রান। তার ব্যাটও ঝড়ের আভাস দিয়ে মেটাতে পারছিল না দাবি। নুরুল হাসান সোহান মন্থর উইকেটের দাবি মেনে হতে পারেননি স্মার্ট। ৪ বলে ৩ রান করে দেন ক্যাচ। সাকিব পরে ফেরেন ৩৩ বলে ৩৬ রান।

জিম্বাবুয়ে সফরের নায়ক শামীম পাটোয়ারীও জ্বলে উঠতে পারেননি। স্টার্কের দারুণ ইয়র্কারে স্টাম্প ভেঙ্গে যায় তার। ছয়ে নেমে দলের চাহিদা মেটান আফিফ হোসেন। এই তরুণের ১৭ বলে ২৩ রানের ইনিংসেই ১৩০ ছাড়িয়ে যায় দলের পুঁজি। দল পায় লড়াইয়ের রসদ, যা দিয়ে আসে অধরা জয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ

১৩১/৭, ২০.০ ওভার

সাকিব ৩৬, নাঈম ৩০

হ্যাজলউড ৩/২৪, স্টার্ক ২/৩৩

অস্ট্রেলিয়া

১০৮ অলআউট, ২০.০ ওভার

মার্শ ৪৫, স্টার্ক ১৪

নাসুম ৪/১৯, মুস্তাফিজ ২/১৬

ফল : বাংলাদেশ ২৩ রানে জয়ী

ম্যাচসেরা : নাসুম (বাংলাদেশ)

সিরিজ : বাংলাদেশ ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close