ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৩ জানুয়ারি, ২০২১

মিরাজের উচ্ছ্বাস, জেসনের আক্ষেপ

সিরিজ শুরুর আগেই মেহেদী হাসান মিরাজ বলেছিলেন, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বলেই পাচ্ছেন বাড়তি আত্মবিশ্বাস। গতকাল পারফরম্যান্সেও তা ফুটিয়ে তুললেন তরুণ এই অফ স্পিনার। করলেন ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। ম্যাচসেরা হয়ে তাই খুশিতে ভাসছেন মিরাজ।

মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল দ্বিতীয় ওয়ানডে ৭ উইকেটে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। এদিন ২৫ রানে ৪ উইকেট নেন মিরাজ। তার আগের সেরা বোলিংও ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, সেবার ২৯ রানে ৪ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সিলেটের সেই ম্যাচেই ওয়ানডেতে প্রথমবার সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছিলেন মিরাজ। তারপর এই প্রথম পেলেন পুরস্কারটি। ম্যাচ শেষে প্রতিক্রিয়ায় মিরাজের কণ্ঠে ছিল উচ্ছ্বাস, ‘অবশ্যই আমি খুব খুশি। অনেকদিন পর ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলাম। অনেক দিন পর আমরা ওয়ানডে খেলছি। আমি সত্যিই উচ্ছ্বসিত।’

প্রথম ম্যাচে অবশ্য খারাপ করেননি মিরাজ। তবে ৭ ওভারে ২৯ রান দিয়ে নিয়েছে ১ উইকেট। তবে সেটা তার মন ভরাতে পারেনি। উন্মুখ ছিলেন আরো ভালো কিছু করার জন্য, ‘আমি ভালো বোলিং করিনি প্রথম ম্যাচে। এই ম্যাচে শক্তভাবে ফিরে আসতে পেরেছি। টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলেছি, সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গেও। স্পিন কোচ সোহেল ভাইয়ের সঙ্গে অনেক কথা বলেছি। তিনি বলেছেন ঠিক জায়গায় বল রাখতে। সব মিলিয়েই এই ম্যাচে সাফল্য এসেছে।’

ওয়ানডে তে তরুণ অনেকেই এগিয়ে আসছেন। নিজের জায়গার জন্য তাই লড়াই করতে হচ্ছে মিরাজকে। কঠিন এই লড়াইয়ে পাশে পাচ্ছেন অধিনায়ক তামিম ইকবালকে, ‘তামিম ভাই দলের সিনিয়র ক্রিকেটার, অনেক সময়ই প্রেরণা জোগান। বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপেও আমরা একসঙ্গে খেলেছি। সব সময়ই তিনি সমর্থন দেন আমাকে।’

মিরাজের বোলিং কারিশমার দিনে আরেকবার হতাশ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং। সংখ্যার নিক্তিতে কিছুটা উন্নতি হয়েছে তাদের। প্রথম ম্যাচে ১২২ রানের পর এবার ১৪৮। তবে বাস্তবতায় ক্যারিবিয়ান ব্যাটিংয়ে দুই ম্যাচে দেখা গেছে একই দশা। উইকেট যদিও গতকালের ম্যাচে ছিল যথেষ্টই ভালো। সেই উইকেটে অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ায় হতাশ ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন মোহামেদ।

প্রথম ম্যাচের উইকেটেই হয়েছে দ্বিতীয় ম্যাচ। তবে এদিন উইকেটে একটু ঘাসের ছোঁয়া ছিল। ব্যাটিংয়ে জন্য ভালো হবে ভেবেই টস জিতে আগে ব্যাটিং নেন জেসন। কিন্তু সিদ্ধান্ত যতটা সাহসী ছিল, ২২ গজে ততটা দক্ষতা দেখাতে পারেননি ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা। বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানই উপহার দিয়ে এসেছেন উইকেট। টেকনিক ছিল বাজে, টেম্পারামেন্ট যাচ্ছেতাই।

১ উইকেটে ৩৬ থেকে কয়েক ওভারের মধ্যে ক্যারিবিয়ানদের রান হয়ে যায় ৫ উইকেটে ৪১। পরে ৫ উইকেটে ৬৭ থেকে ৮ উইকেটে ৮৮। ম্যাচ শেষে জেসন আক্ষেপ করলেন এটি নিয়েই, ‘অবশ্যই আমরা খুব হতাশ। উইকেট আজকে (গতকাল) আগের দিনের চেয়ে অনেক ভালো ছিল। কিন্তু আমরা কাজে লাগাতে পারিনি, ভালো স্কোর গড়তে পারিনি। এটা নিয়েই আক্ষেপ হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জানতাম স্পিনারদের সামলানো চ্যালেঞ্জিং হবে। আমরা প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু মাঠে নেমে আমরা জোড়ায় জোড়ায় উইকেট হারিয়েছি। একটি উইকেট পড়লে আরেকটি পড়েছে। এখানেই সমস্যা হয়েছে। জুটি গড়তে পারিনি আমরা। এখানেই পিছিয়ে পড়েছি।’

দলের হতাশাজনক পারফরম্যান্সে দুই ম্যাচ শেষে ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক চেষ্টা করলেন ইতিবাচক কিছু খোঁজার, ‘কিছু ভালো দিক আছে। আকিল অভিষেক ম্যাচের পর আজকেও (কালকেও) ভালো বোলিং করেছে। রোভম্যান পাওয়েল কিছু রান করে মোটামোটি স্কোর এনে দিয়েছে। আশা করি, সামনের ম্যাচে আরো কয়েকজন নিজেদের মেলে ধরবে।’

আগামী সোমবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে হবে দুদলের নিয়ম রক্ষার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close