ক্রীড়া ডেস্ক

  ৩১ মে, ২০২০

আইসিসি-বিসিসিআই বিবাদ চরমে

একটি পক্ষ বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি, আরেকটি পক্ষ বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। তা দুটি সংস্থা যখন কোনো ইস্যু নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে, তখন সেটি উত্তাপ ছড়ানোর কথা। আদতে হয়েছেও তাই।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) বিবাদের ‘লেটেস্ট এডিশনের’ শুরুটা ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কর মওকুফ নিয়ে। দুপক্ষের কয়েক দফা ইমেইল চালাচালির উত্তাপ যেন মহামারির রূপ নিল সম্প্রতি অনুষ্ঠিত টেলিকনফারেন্সে। ৩ দিনের ভার্চুয়াল সভার শেষ দিনে হঠাৎ প্রসঙ্গটি উঠতেই আইসিসির সঙ্গে বিসিসিআইয়ের একটা মন কষাকষি হয়ে গেছে। পরে আইসিসি বিবৃতিতে জানিয়েছে, মেইল সংক্রান্ত একটি স্বাধীন তদন্ত হবেই।

সৌরভ গাঙ্গুলীর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় বোর্ডের অভিযোগ, আইপিএলের প্রসার ব্যাহতের চেষ্টা করছে আইসিসি। শশাঙ্ক মনোহরের নেতৃত্বাধীন আইসিসি প্রতি ২ বছর পর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের নতুন প্রথা চালু করেছে, যা ভারতের ক্রিকেট বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর, গত বৃহস্পতিবার প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে চলা সভায় বেশিরভাগ সময় আইসিসি ও বিসিসিআইয়ের মধ্যকার কর রেয়াত, ইমেইল চালাচালি ও টেলিভিশন সত্ত্ব নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা হয়েছে। বাধ্য হয়ে তাই ১০ জুন পর্যন্ত সভা স্থগিত করা হয়েছে। আইসিসির পক্ষে জানানো হয়েছে, একজন কর্মকর্তার অধীনে তদন্ত হবে বিষয়টি। কেননা, দুই সংস্থার চালাচালি করা বিশেষ মেইল গণমাধ্যমেও চলে এসেছে।

প্রায় ২ মাস ধরে মেইল চালাচালির পর বিসিসিআইকে কর মওকুফের ব্যাপারে ‘শর্তহীন নিশ্চয়তা’ চেয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য ১৮মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় আইসিসি। ২৯ এপ্রিল এ বিষয়ে এক মেইলে আইসিসির উপদেষ্টা জোনাথন হল লিখেছেন, ‘আমরা বিসিসিআইয়ের সঙ্গে ২০.১ ধারায় আয়োজক চুক্তি করতে চাচ্ছি। কিন্তু আইসিসির ব্যবসায়িক কমিটি সেটি ভাঙতে চাইছে। কারণ, বিসিসিআইয়ের সঙ্গে আলোচনা অনুযায়ী ১৮মের আগে পূর্বের বকেয়া পাওনা পরিশোধের কথা ছিল। সেটি এখনও সমাধান হয়নি।’

জবাবে করোনাভাইরাসের কারণে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বর্ধিত করার আবেদন করে বিসিসিআই। যে আবেদন আগেই নাকচ করে জোনাথন হল মনে করিয়ে দিয়েছেন, সমস্যা সমাধানে ১৮ মাস পর্যন্ত সময় পেয়েছিল বিসিসিআই। এর মধ্যে সমাধান করতে না পারায় আর কোনো সময় দেয়া হবে না তাদের। আর এতেই রেগে আগুন বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ক্রিকেট বোর্ডের হর্তাকর্তারা।

আলোচনার টেবিল গরম থাকতেই সম্প্রতি সেই ইমেইলগুলোর একটির সূত্র ধরে আইসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের ব্যবসায়িক কমিটির সদস্যরা কোনোভাবেই ভারতের দাবি অনুযায়ী ৩০ জুন অথবা লকডাউন উঠে যাওয়ার পর ৩০ দিন বাড়তি সময় দিতে রাজি নয়।

এরপরেই দুপক্ষের দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। ‘আইসিসির ব্যবসায়িক কমিটির সদস্য কারা? কারা এমন কথা বলেছে? এর কোনো দালিলিক প্রমাণ আছে নাকি?- এক পর্যায়ে এমন কথাও উঠেছে সভায়।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসর মঞ্চস্থ হয়েছিল ভারতে। ওই বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে ভারতের থেকে ২৩ মিলিয়ন ডলার কর পাওয়ার কথা ছিল আইসিসির। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর সরকারের কাছ থেকে কর মওকুফ করানো যায়নি, এই যুক্তিতে সেই পাওনা এখন অবধি পরিশোধ করেনি বিসিসিআই।

সেই ঘটনার জের ধরে আইসিসি বিসিসিআইকে হুঁশিয়ারি দেয়, যদি সরকারের থেকে কর মওকুফ করতে ব্যর্থ হয় ভারতীয় বোর্ড; তবে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ সরিয়ে নেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প পথ থাকবে না!

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close