মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন

  ০৯ জানুয়ারি, ২০২১

গল্প

ফেরারি

আজ আকবরের এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট বের হবে। আমার এবং আমার স্ত্রী আকলিমার আনন্দের যেন বাঁধ মানছে না। খুশির জোয়ারে আকলিমার চোখ অশ্রুতে ভেসে যাচ্ছে। আমাদের চৌদ্দ পুরুষের মধ্যে কোনো ডাক্তার নেই। ডাক্তার তো দূরের কথা, স্কুলের গ-ি পার হওয়া লোকই খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আমাদের ছেলে আজ ডাক্তারি পাস করছে। আমার মন চাচ্ছে চিৎকার করে সবাইকে জানাই, মাইক বাজিয়ে উৎসব করি। কিন্তু মাইক বাজিয়ে উৎসব করা তো দূরের কথা, কানে কানে চারপাশের লোকজনকে বলার মতো সাহসও আমার নেই।

আকবর অত্যন্ত জেদি এবং গোঁয়ার প্রকৃতির ছেলে। তার চোখ দুটো বড় বড় এবং রক্তাভ। মাথার চুলগুলো মোটা মোটা এবং খাঁড়া খাঁড়া। হাতের আঙুলগুলো গাঁট্টা-গুঁট্টা। যে কেউ তার দিকে তাকিয়ে চমকে উঠতে পারে। এমনকি দ্বিতীয়বার তাকাতে ভুল করবে বলে মনে হয় না। আর সে যদি কারো দিকে একবার চোখ পাকিয়ে তাকায় তাহলে ছেলে-বুড়ো নির্বিশেষে নির্ঘাত ভিরমি খাবে।

সে যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত তখন একবার মুখ গোমড়া করে বাসায় ফিরল। আকলিমা জিজ্ঞেস করল, কী হয়েছে? মুখ ভার করে আছিস কেন? সে বলল, আমাকে সিরিয়াস অপমান করা হয়েছে। আমি এর প্রতিশোধ নিমু।

কে, কীভাবে অপমান করল আমাকে খুলে বল।

আমাদের ক্লাসের রোল নম্বর এক থেকে চার পর্যন্ত এই চারজনকে আলাদাভাবে পড়ানো হচ্ছে। তারা নাকি বৃত্তি পরীক্ষা দেবে। আমাকে ওদের সঙ্গে নেবে না। আমি এর প্রতিশোধ নিতে চাই। কীভাবে প্রতিশোধ নেওয়া যায় আমাকে শিখায়ে দাও।

সে দাঁতে দাঁত খিঁচিয়ে হাত দুটি মুষ্টিবদ্ধ করে চেঁচাতে লাগল প্রতিশোধ! প্রতিশোধ! আমি প্রতিশোধ নেব। আমি তাদের উচিত শিক্ষা দেব। ছোট্ট শিশুরা এ ধরনের ঘটনায় সাধারণত কান্নাকাটি করে। কিন্তু আকবরের চোখে কোনো পানি নেই। সে সত্যি সত্যিই যেন প্রতিশোধস্পৃহার আগুনে জ্বলছে। আমি বললাম

ভালো করে পড়ালেখা করে যদি ডাক্তার হতে পারিস তাহলেই তাদের উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে।

ঠিক আছে, আমি তাহলে ডাক্তার হব। অনেক বড় ডাক্তার হব। ওদের উচিত শিক্ষা দেব।

তুই যদি ডাক্তার হতে পারিস তাহলে যেদিন ডাক্তার হবি, সেদিন আমি তোকে তোর দাদার বাড়ি আর নানার বাড়ি নিয়ে যাব।

বাপ-দাদার ভিটামাটি ছেড়ে ময়মনসিংহ শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছি অনেক বছর। আমার গ্রামটি ছিল একদল গন্ডমূর্খদের বসবাসস্থল। আকবরের বয়স যখন দুই বছর, তখন আকলিমাকে সঙ্গে নিয়ে চলে আসি ময়মনসিংহ শহরে। তারপর প্রায় পঁচিশ বছর কাটিয়ে দিলাম। আকবর এবং আমার মেয়ে আনজুকে এক দিনের জন্যও গ্রামে নিয়ে যায়নি। আমার স্ত্রী আকলিমার বাড়িও একই গ্রামে। আকলিমাও পঁচিশ বছর ধরে গ্রামে যায়নি।

আকবর আর আনজু প্রতি ঈদেই বায়না ধরত তারা তাদের দাদার বাড়ি, নানার বাড়ি বেড়াতে যাবে। তাদের বন্ধু-বান্ধবরা ছুটিতে বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে যায়। আমরা কেন তাদের বেড়াতে নিয়ে যাই না? কেঁদে-কেটে একদম অস্থির করে তুলত। আমি ও আকলিমা ভুলেও কখনো তাদের আমাদের গ্রামের কথা বলিনি।

ছোট্ট বাচ্চাদের সঙ্গে অনেকেই নিজেদের বাল্যকালের স্মৃতি শেয়ার করে আনন্দলাভ করে। বাচ্চারাও মজা পায়। কিন্তু আমার আর আকলিমার বাল্যকালের স্মৃতিগুলো যেন এক অদৃশ্য নিরেট প্রতিবন্ধকতায় আটকা পড়ে আছে। বেশির ভাগই বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে গেছে। তার পরও কিছু স্মৃতি যেন স্মৃতিপটে খোদাই হয়ে আছে। সেগুলো ভুলে যাওয়া তো দূরের কথা প্রাসঙ্গিক বিষয় এলেই মুখের কুলুপ ছিঁড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। যেমনটি মেঘের গর্জন হালদায় মৎস্যকুলকে ডিম ছাড়ার জন্য তাড়িত করে।

একবার তো আকবর অনশন ধর্মঘট করে বসল। একদম রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মতোই। কোনোভাবেই কোনো কিছু তাকে খাওয়ানো যাচ্ছিল না। তার এক বন্ধু তার নানার বাড়িতে গিয়ে মামাতো ভাই-বোনদের সঙ্গে খেলেছে, সাঁতার কেটেছে, গাছ থেকে ফল পেরেছে, বড়শি দিয়ে মাছ ধরেছে আরো কত কী করেছে। আসার সময় তার মামা তাকে অনেক খেলনাও কিনে দিয়েছে। অথচ আমরা কেন তাকে তার নানার বাড়ি নিয়ে যাই না, দাদার বাড়ি নিয়ে যাই না? তার মামা নেই কেন? চাচা নেই কেন? ইত্যাকার অনেক দফা দাবি-দাওয়া আদায় নিয়ে তার অনশন। বহু বাক্যব্যয়ে, বহু প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার অনশন ভাঙানো হয়েছিল। আকলিমা মজা করে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অনশন ভাঙানোর মতো এক গ্লাস শরবতও পান করিয়েছিল।

আকবরের মতো আনজু জেদি বা একগুঁয়ে নয়। তার কষ্টগুলোকে সে গোপন করতে চেষ্টা করে কিন্তু সব সময় পারে না। নানা-নানি, দাদা-দাদির চেহারা সে কখনো দেখিনি। কল্পনায় সে নানা-নানি, দাদা-দাদিকে আঁকে। তার অঙ্কিত ছবিগুলোতে নানা-নানি, দাদা-দাদি এবং গ্রাম থাকে। আকলিমা সুযোগ পেলেই শিশুপার্কে নিয়ে তাকে শিশুদের মধ্যে ছেড়ে দেয়। তাকে আনন্দে রাখার চেষ্টা করে।

আনজু যখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত, তখন এক দিন আনজু তার মাকে বলতেছিল, আমাদের ক্লাসে দুজন ছাত্রী আছে, তাদের একজনের বাড়ি বিক্রমপুর আর অন্যজনের নোয়াখালী। তারা এই শহরে স্থায়ীভাবে থাকে। তারা তো ঠিকই সবাইকে সেটা বলে। তোমাদের বলতে দোষ কোথায়? তোমরা কি চোর না ডাকাত? আমি পাশের রুম থেকে শুনছিলাম। আকলিমা কোনো জবাব না দিয়ে চুপ করে আছে।

বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লেখাপড়ার চাপে ঘন ঘন দাদাবাড়ি-নানাবাড়ির প্রসঙ্গটা তারা আনে না। কিন্তু বিভিন্ন উৎসব-পার্বণে ঠিকই মনে পড়ে। একেই হয়তো বলে নাড়ির টান। আকবর-আনজুকে তাদের স্থানীয় বন্ধু-বান্ধবরা এলাকার বাসিন্দা ভাবে না। ভাবে তারা ভাড়াটিয়া। তারা বিদেশি। তারা স্থানীয়দের দাপটে কোণঠাসা হয়ে থাকে। এটা তাদের কচি মনকে নাড়া দেয়। এ এলাকায় যদি তারা বিদেশি হয়, তাহলে নিশ্চয় তাদের একটা দেশ আছে, গ্রাম আছে। তাদের সেই গ্রামে যাওয়ার খুবই ইচ্ছা হয়।

আকবর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে প্রথমদিন ক্লাস শেষ করে এসেই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, আমি নিজেকে কোন জেলার মানুষ হিসেবে পরিচয় দেব? আমাদের ক্লাসে নতুন নতুন শিক্ষক আসেন আর জিজ্ঞেস করেন, কার বাড়ি কোথায়? আমি কোন জেলার নাম বলব? আজ ময়মনসিংহই বলেছি। আমি বললাম, তুই ময়মনসিংহের ভোটার, তোর জন্মনিবন্ধনও হয়েছে ময়মনসিংহে। আমরা নিজেদের বাড়িতেই থাকি। কাজেই ময়মনসিংহ বলাটাই সঠিক হয়েছে। সেদিন সে ময়মনসিংহ বলতে রাজি হয়েছিল কিন্তু ডাক্তার হওয়ার পর আমি যে তাকে তার দাদার বাড়ি নিতে চেয়েছি সেটা স্মরণ করিয়ে দিতে ভুল করেনি।

এর পরও কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। কিন্তু আকবর ভুলে যায়নি। ডাক্তারি পাস করার পরই তার দাদার বাড়ি, নানার বাড়ি যাবে। তার নানা-নানি আর দাদা-দাদির কবর জিয়ারত করবে। আমারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া যেদিন সে এমবিবিএস পাস করবে, সেদিনই আমি তাকে আমার গ্রামের নাম বলব, নানা-নানি, দাদা-দাদির ঠিকানা বলব।

আজই সেদিন। আকবর কলেজে গিয়েছে রেজাল্ট দেখতে। আকবর বাসায় ফিরলেই আমার প্রতিশ্রুতিমতো তাকে আমার গ্রামের ঠিকানা বলতে হবে এবং তার দাদা-দাদি, নানা-নানির কবর জিয়ারতের জন্য নিয়ে যেতে হবে। আকবরের পাস করার বিষয়ে আমরা নিশ্চিন্ত। আমি আর আকলিমা আজ কোথাও যায়নি। বাসায় আকবরের জন্য অপেক্ষা করছি। আকবরের মা ছেলের সফলতায় একদিকে যেমন অত্যন্ত আনন্দিত, অন্যদিকে আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষার বিষয়টি মনে করে সে খুবই উদ্বিগ্ন এবং উৎকণ্ঠিতও।

তুমি কি আজ সত্যিই আমাদের গ্রামের ঠিকানা বলবে?

প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। না বলে কোনো উপায় আছে?

আমার মনে হয় বলা ঠিক হবে না।

ঠিক-বেঠিক বুঝতে পারছি না। তবে ছেলে উচ্চশিক্ষিত হয়েছে। ডাক্তার হয়েছে। আমার বিশ্বাস এখন অনেক কিছুই সে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারবে।

আমার মাথা কাজ করছে না। ভালো করে ভেবে দেখো।

আল্লাহ ভরসা। আজ বলেই দেব। ছেলে মানুষ হয়েছে। আমাদের দায়িত্ব ভালোভাবেই আমরা পালন করেছি।

আকবর কলেজ থেকে ফিরেছে। খুবই ভালো রেজাল্ট করেছে। চোখ-মুখে তার আনন্দ-মিশ্রিত প্রদীপ্তি আর বিজয়ের হাসি। আজ থেকে সে এমবিবিএস ডাক্তার। যারা পঞ্চম শ্রেণিতে তাকে দূরে ঠেলে দিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে তার যথোপযুক্ত প্রতিশোধ। তারা কেউ ডাক্তার হতে পারিনি। তা ছাড়া আজ আকবরের সেই মাহেন্দ্রক্ষণও উপস্থিত, যার জন্য সে দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করে আছে।

আকবরের রেজাল্ট বের হওয়া উপলক্ষে বিশেষ খানাপিনা শেষে আমি আর আকলিমা বারান্দায় বসে আছি। দোকানে যায়নি। আকবর কাছে এসে বলল, আজ যে তোমার কিছু একটা বলার কথা বাবা, তুমি কি ভুলে গেছো? আমার আর আকলিমার মধ্যে চোখাচোখি হলো। আকলিমা ডানে-বামে মাথা নাড়ছে যাতে না বলি।

না, ভুলিনি।

তাহলে বলো। আকবর একটা চেয়ার টেনে পাশে বসল।

হ্যাঁ, কথা যখন দিয়েছি তখন তো বলাই উচিত, তাই না? কিন্তু তোর কি শুনতে ভালো লাগবে? যদি এমন কিছু বলি, যা শুনে তোর কষ্ট হয়, উঁচু মাথা নিচু হয়ে যায়?

আমার জ্ঞান-বুদ্ধি হয়েছে বাবা। তুমি বলো, আমি শুনছি।

তাহলে শোন, আমার নাম আক্কাস আলী চৌধুরী না, আমার নাম গালকাটা আক্কু। আর তোর মায়ের নাম আকলিমা নয়, তার নাম আলকি। আর তোর নাম ছিল আকাব্বর। এই শহরে এসে আমরা নাম চেঞ্জ করেছি। আমাকে যে রকম পাজামা-পাঞ্জাবি-টুপি পরিহিত এবং শ্বেত শুশ্রম-িত হুজুর টাইপের মানুষ হিসেবে দেখে আসছিস, আমি এই শহরে আসার আগে সে রকম মানুষ ছিলাম না।

আকবর যেন একটা ধাক্কা খেল। সামলে নিয়ে নিঃশব্দে বসে রইল। আমি কথা চালিয়ে গেলাম।

তোর জন্মের পর তোর নানি তোর চোখ-মুখ দেখে বলেছিল, তুই এক দিন মস্তবড় ডাকাত হবি। আমার বুকটা তখন ছ্যাঁৎ করে উঠেছিল। আমি তোকে ডাকাত হিসেবে দেখতে চাইনি। আমি গ্রাম ছেড়ে অন্য কোথাও পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু হাতে কোনো টাকাপয়সা না থাকায় বের হতে পারছিলাম না। আমি সুযোগের অপেক্ষায় থাকি। তারপর এক দিন সেই সুযোগও পেয়ে যাই। নারায়ণগঞ্জের বিশনন্দি ফেরিঘাটে ডাকাতি করে পঞ্চাশ হাজার টাকা পেয়ে যাই।

এতক্ষণ আকবর স্বাভাবিকই ছিল। আমার ডাকাতির কথা শুনে যেন সে চুপসে গেল। চোখ-মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল। আকলিমা দ্রুত উঠে গিয়ে এক গ্লাস পানি এনে ছেলের হাতে ধরিয়ে দিল। আকবর এক নিঃশ্বাসে খেয়ে ফেলল। তারপর একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে চোখ বন্ধ করে রইল। আমি আবার বলতে শুরু করলাম।

এক দিন শেষ রাতে জিনিসপত্র গোছগাছ করে তোকে নিয়ে ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা হলাম। ময়মনসিংহে এসে কয়েক দিন একটা হোটেলে থাকলাম। তারপর একটা বাসাভাড়া নিলাম। শম্ভুগঞ্জ সেতুর কাছে একটা অস্থায়ী চায়ের দোকান দিলাম। নাম-ধাম বেশভূষা চেঞ্জ করলাম। পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়া শুরু করলাম। একসময় চায়ের দোকান ছেড়ে দিয়ে কাপড়ের দোকান দিলাম। ব্যবসার অবস্থা আমার সব সময়ই রমরমা ছিল। আজ পর্যন্ত ব্যবসায় আমার এক পয়সাও লোকসান হয়নি।

এক দিন নরসিংদীর মাধবদীতে ডাকাতি করে পালানোর সময় একটা নিচু ঘরের টিনের চালের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আমার গাল কেটে যায়। আমার গালে যে দাগটা দেখছিস সেটা তারই চিহ্ন। সেদিন থেকে আমি হয়ে যাই গালকাটা আক্কু। আমার নামে একাধিক মামলাও হয়েছিল। সেগুলোর কী অবস্থা হয়েছে আমার জানা নেই।

তোর নানা ও দাদা দুজন বন্ধু ছিলেন। তারাও চুরি-ডাকাতি করতেন। তোর নানা এক দিন ডাকাতি করতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর তোর দাদা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন। পুলিশ তাকে সাপমারা মাইর দিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছিল। হাসপাতালেই তিনি মারা গেছেন। কেউ লাশ আনতে যায়নি। তাকে কোথায় দাফন করা হয়েছে, সে খবর নেওয়া হয়নি কখনো।

আকবরের গাল চোখের জলে ভিজছে। সে আড়াল করার চেষ্টা করছে না। আকলিমাও নিঃশব্দে চোখ মুছছে।

তুই তোর নানা-দাদার কবর জিয়ারত করে ডাক্তারি শুরু করতে চেয়েছিলি। তোর সে আশা পূরণ হওয়ার নয়। তুই মানুষকে ভালো সেবা দেওয়ার মধ্য দিয়ে তোর দাদা-নানার মঙ্গল চাইতে পারিস। আমি যেমন প্রতিদিনই তাদের জন্য দোয়া করি, যাদের সম্পদ আমি চুরি-ডাকাতি করেছিলাম।

আকবর বাকরুদ্ধ ও স্তম্ভিত। অশ্রুভরা চোখে অসহায়ের মতো ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল। এ সময় আনজু তার কলেজের কয়েকজন বান্ধবীসহ বাসায় প্রবেশ করল। আনজুর ভাইয়ের ডাক্তার হওয়ার উৎসবে শরিক হওয়ার জন্যই তাদের এ শুভাগমন।

আমি কথা বলা বন্ধ করলাম। আকলিমা আঁচলে চোখ-মুখ ঢেকে মৃদু পদক্ষেপে রান্নাঘরে প্রবেশ করল। আকবর নিঃশব্দে তার রুমের দিকে চলে গেল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close