reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৫ অক্টোবর, ২০২২

রেটিনা সুস্থ রাখতে নিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস

রেটিনা হলো চোখের অত্যন্ত সংবেদনশীল অংশ বা পর্দা, যা দ্বারা দৃষ্টির প্রতিচ্ছবি মস্তিষ্কে প্রেরিত হয়। এটির উল্লেখযোগ্য রোগ হচ্ছে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি। এটি হলো রেটিনা অর্থাৎ চোখের ভেতরের পর্দাসদৃশ অত্যন্ত সংবেদনশীল অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, যার মাধ্যমে আলো বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তরিত হয়ে মস্তিষ্কে প্রেরিত হয়। এই সংবেদনশীল পর্দা বা রেটিনা অনেক রক্তনালি দ্বারা বেষ্টিত অবস্থায় থাকে। সূক্ষ্ম রক্তনালিগুলো রেটিনায় অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছাতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথিতে এই রক্তনালিগুলো বিভিন্নভাবে প্রভাবিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে, বিশেষ করে ডায়াবেটিস যদি অনিয়ন্ত্রিত থাকে।

উপসর্গ

রক্তনালিতে পেরিসাইট নামের একটি অংশ থাকে, যা ভঙ্গুর হয়ে যায় এবং এক পর্যায়ে রক্তনালির পেরিসাইট ভেঙে যায় এবং রক্তনালি থেকে রক্ত ও রক্তরস বের হয়ে যায়। এই রক্তরস বের হয়ে রক্তক্ষরণ তৈরি করে, যা রেটিনাল হেমোরেজ নামে পরিচিত। এই রক্তক্ষরণের আবার বিভিন্ন প্রকারভেদ আছে। প্রথম পর্যায়ে এই রক্তক্ষরণ রেটিনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। পরবর্তী পর্যায়ে এই রক্তক্ষরণ রেটিনার বাইরে চলে আসে, যা প্রিরেটিনাল হেমোরেজ নামে পরিচিত এবং পরবর্তী ধাপে তা রেটিনার সম্মুখভাগে যে জেলি/ভিট্রিয়াস অংশে প্রবাহিত হয় এবং তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এই পর্যায়টি ভিট্রিয়াস হেমোরেজ বা ইন্ট্রাজেল হেমোরেজ নামে পরিচিত। এ ধাপ যদি অগ্রসর হতেই থাকে, তাহলে যা ঘটে সেটি হলো, দৈহিক কিছু প্রটেকটিভ সিস্টেম আছে, যা ইন্ট্রাজেল রক্তক্ষরণ প্রতিহত করতে ভিট্রিয়াস জেলিতে কন্ট্রাকশন করার ফলে তা রক্ত, রক্তনালি, ভঙ্গুর রেটিনা ও জেলি একত্র হয়ে ট্র্যাকশন ফোর্স তৈরি করে, যা ভঙ্গুর রেটিনাকে সম্পূর্ণ ছিঁড়ে ফেলে। এই স্টেজটি অ্যাডভান্সড স্টেজ হিসেবে ধরা হয়।

কারণ

* দীর্ঘ সময় ধরে ডায়াবেটিসে ভোগা

* অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস

* অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ

* গর্ভবতী অবস্থায় ডায়াবেটিস

* নিয়মবহির্ভূত জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস

* ধূমপান।

পরিত্রাণের উপায়

* ডায়াবেটিস ধরা পড়ার পর থেকে নিয়মিত প্রতি বছর একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ/রেটিনা বিশেষজ্ঞ দ্বারা চোখের রেটিনা পরীক্ষা করা

* ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা

* রক্তচাপ থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা

* রক্তের চর্বির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা

* স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাবার গ্রহণ

* ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা

* নিয়মিত হাঁটা ও ব্যায়াম

* নিয়মিত ওষুধ সেবন

* দুশ্চিন্তা ও বিষণ্নতা থেকে দূরে থাকা

* ধূমপায়ী হয়ে থাকলে তা বর্জন করা

* দৃষ্টিশক্তির ব্যাপারে সামান্য কোনো সমস্যা দেখা দিলে পেশাদার ও যুগোপযোগী পরামর্শ গ্রহণ ও মেনে চলা।

পরামর্শ দিয়েছেন

ডা. মো. আফজাল মাহফুজউল্লাহ

সহকারী অধ্যাপক, চক্ষুবিজ্ঞান বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close