প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৫ জুন, ২০২৩

ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ২৯৪

ভারতের ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত রাজশাহীর রাসেল-উজ-জামানের (২৭) অবস্থা আশঙ্কাজনক। ওই ঘটনায় আরো ৪-৫ জন বাংলাদেশি আহত হয়ে থাকতে পারেন বলে জানিয়েছে কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশন। এদিকে, ওই দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৮ শতাধিক। রবিবার (৪ জুন) দুপুর ৩টার দিকে উপহাইকমিশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা একটি সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, রাসেল-উজ-জামান বর্তমানে ভারতের কটকের এসসিবি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হাবিবুর রহমান চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। তবে তিনি বাংলাদেশি কি না সেটি নিয়ে কিছুটা সংশয় আছে। ওই ঘটনায় আহত ময়মনসিংহের আজমিন আক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে কলকাতায় ফিরে এসেছেন। আমাদের ধারণা দুর্ঘটনায় আরো ৪ থেকে ৫ জন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। আমাদের টিম সেখানে কাজ করছে। আমরা তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।

উপহাইকমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজশাহীর রাসেল-উজ-জামান কলকাতার শালিমার থেকে চেন্নাই যাচ্ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সচিবালয় ‘নবান্ন’ কর্তৃক প্রকাশিত শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমন্ডল এক্সপ্রেসের আহত যাত্রীদের তালিকা থেকে হাবিবুর রহমান নামে আরো এক বাংলাদেশির পরিচয় পাওয়া যায়। উপহাইকমিশনের এক কর্মকর্তা জানান, হাবিবুর রহমানের বাড়ি বগুড়ায়।

এদিকে, বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার পর থেকে প্রশ্ন উঠেছে রেলের ‘কবচ’ পদ্ধতি নিয়ে। কেন এমন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি রেলের হাতে থাকা সত্ত্বেও এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল দেশ, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।

করমণ্ডল এক্সপ্রেস বা একই সঙ্গে দুর্ঘটনার কবলে পড়া মালগাড়ি কিংবা বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেসে ‘কবচ’ ছিল না। অনেকে মনে করেছিলেন, রেলের দুর্ঘটনারোধী প্রযুক্তি ‘কবচ’ এই ট্রেনগুলোতে থাকলে হয়তো বিপর্যয় কিছুটা এড়ানো যেত। কিন্তু সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন রেলওয়ে বোর্ডের সদস্য জয়া বর্মা সিন্?হা। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘কবচ’ থাকলেও করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা এড়ানো যেত না।

কেন ‘কবচ’ থাকলেও তার সুরক্ষা এ ক্ষেত্রে কাজ করত না? রেল জানিয়েছে, ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে প্রথম সারিতে থাকে চালকের সিগন্যাল বোঝার ভুল। যখন কোনো চালক সিগন্যাল না দেখতে পেয়ে ট্রেন নিয়ে এগিয়ে যান, সেই সময় ‘কবচ’ সক্রিয় হয়ে ওঠে। ট্রেনের সঙ্গে ট্রেনের সংঘর্ষের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়েই সেই ঘটনা দায়ী হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা ছিল না। এ ক্ষেত্রে চালক সিগন্যাল পড়তে ভুল করেননি। তবে সিগন্যালের ত্রুটিই যে দুর্ঘটনার কারণ, তা মেনে নিয়েছেন জয়া। তিনি জানিয়েছেন, সিগন্যালের ত্রুটি ছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে তাকে ‘ব্যর্থতা’ বলা যায় না। এ বিষয়ে আরো খুঁটিনাটি তথ্য জানা যাবে বিস্তারিত তদন্তের পর।

শনিবার ওড়িশায় দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে রেলমন্ত্রীর সামনেই ‘কবচ’ পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে জয়া জানিয়েছেন, কিছু কিছু দুর্ঘটনা কোনোভাবেই এড়ানো যায় না। এক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। ‘কবচ’-এর সঙ্গে এই দুর্ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই, দাবি রেলের।

জয়া আরো জানিয়েছেন, যে মালগাড়িতে ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটার বেগে ছুটে আসা করমণ্ডল এক্সপ্রেস ধাক্কা মারে, সেটি লৌহ আকরিকে ভর্তি ছিল। ট্রেনটি এতটাই ভারী পণ্য বহন করছিল যে, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ধাক্কা তা সয়ে নিয়েছে। দুর্ঘটনায় মালগাড়িটির প্রায় কিছুই হয়নি। বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসেও তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

মালগাড়িতে বোঝাই করা লোহার আকরিকের কারণেই পরিস্থিতি এত ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল বলে মনে করছে রেল। তবে করমণ্ডল কিংবা বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট, কোনও ট্রেনই নিয়ম ভেঙে অতিরিক্ত গতিতে ছুটছিল না, জানিয়েছেন জয়া। সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসটির গতি ছিল ঘণ্টায় ১২৬ কিলোমিটার। রেলের নিয়ম অনুযায়ী, ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ১৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close