কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২২

অবৈধ বালু উত্তোলন

কমলগঞ্জে চা বাগান প্লান্টেশন এলাকা ও সড়কের ক্ষতি

কমলগঞ্জের আলীনগর ইউনিয়নের আলীনগর চা বাগানের ফাঁড়ি বাগান কামারছড়ার পাহাড়িছড়া থেকে প্রতিনিয়ত অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বালু তুলছে একটি চক্র। এভাবে বালু তোলায় চা বাগানের প্লান্টেশন টিলার ক্ষতির সঙ্গে ট্রাক ও ট্রলি দিয়ে পরিবহনের কারণে বাগানের অভ্যন্তরীণ সড়কেরও ক্ষতি হচ্ছে। বারবার প্রশাসনকে অবহিত করে সহায়তা চাওয়ার পরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে চক্রটি এখন চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপককে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। অন্যদিকে, কমলগঞ্জের ধলই নদীর বিভিন্ন স্থান থেকেও অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে।

কমলগঞ্জের আলীনগর চা বাগানের ফাঁড়ি সুনছড়া ও কামারছড়া চা বাগানের পাহাড়ি সুনছড়া ও কামারছড়া থেকে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র বালু উত্তোলন করছে। এর মাঝে কামারছড়া থেকে সম্পূর্ণরূপে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় ছড়ার তীরবর্তী চা প্লান্টেশন টিলায় ধস নেমেছে। পর্যায়ক্রমে ধস নেমে প্লান্টেশন টিলা এখন হুমকির মুখে। আবার ছড়া থেকে তোলা বালু ট্রাক ও ট্রলি দিয়ে চা বাগানের অভ্যন্তরীণ রাস্তায় পরিবহন করায় বাগানের রাস্তারও ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়ে আলীনগর চা বাগানের ব্যবস্থাপক দুবার লিখিতভাবে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার পুলিশ কর্মকর্তাকে অবহিত করে বালু উত্তোলন বন্ধে সহায়তা কামনা করেছিলেন। এরপরও কামারছড়া বালু তোলা বন্ধে এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ৮ থেকে ১০ জন বালুশ্রমিক কামারছড়া থেকে বালু উত্তোলন করে ট্রাক ও ট্রলিতে দিচ্ছে। আলাপকালে তারা নিজেদের নাম প্রকাশ না করে জানায় কালিছলি গ্রামের রসিদ উল্যা, ইব্রাহিম আলী, আবুল হোসেনসহ কয়েকজনের নিয়োগে তারা ছড়া থেকে বালু তোলার কাজ করছেন। প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০ ট্রাক বালু পরিবহন করা হয় বলেও তারা জানান। এসব বালু বিভিন্ন স্থানে স্থাপনা নির্মাণকাজে পরিবহন করা হচ্ছে বলেও তারা জানান।

সরেজমিন নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানায়, বালু উত্তোলনকারী চক্রের সদস্যদের নামে হত্যা মামলাসহ একাধিক বন মামলাও রয়েছে। তাদের অনেকেই আবার চা বাগানের পাহারার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। চা বাগান কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে তাদের দিয়েই সে এলাকার চা বাগান পাহারা দিতে হয়।

কমলগঞ্জ আলীনগর চা বাগানের ব্যবস্থাপক হাবিদ আহমদ চৌধুরী বলেন, গত ১০ জুন ও ২৬ জুন দুবার মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। যার অনুলিপি তিনি পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়েছিলেন। তাছাড়া মুঠোফোনেও কয়েক দফা জানিয়েছেন। তারপরও কামারছড়া থেকে বালু তোলা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

ব্যবস্থাপক হাবিব আহমদ চৌধুরী আরো বলেন, কামরারছড়া থেকে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় আপত্তি জানানোয় তার সহকাীর ব্যবস্থাপককে চক্রটি নানাভাবে হুমকি দেয়।

তবে অভিযোগ সম্পর্কে রসিদ উল্যা বলেন, তিনি বা তার লোকজন কামারছড়া থেকে বালু উত্তোলন করছেন না ও বালু ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমলগঞ্জ ইউএনও আশেকুল হক কামারছড়া থেকে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close