নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী

ব্যবহারে সচেতন হলে কমবে বিল হবে সাশ্রয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ বেশি হলেও অনেক কম দামে সেবা দেওয়া হচ্ছে। তাই বিদ্যুৎ ব্যবহারে ‘মিতব্যয়ী’ হতে হবে। এতে বিল কম আসবে, বিদ্যুৎও সাশ্রয় হবে। গতকাল রবিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাঁচটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন তিনি।

সরকারপ্রধান বলেন, মনে রাখতে হবে আমরা যে বিদ্যুৎটা উৎপাদন করছি তার খরচ অনেক বেশি। কিন্তু আমরা গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার জন্য ব্যাপকহারে ভর্তুকি দিচ্ছি। উৎপাদনের যে খরচ, সেটা গ্রাহকদের বিল হিসেবে দিতে হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে সবাইকে অনুরোধ করব, বিদ্যুৎ ব্যবহারে আপনারা একটু সচেতন হবেন। নিজের হাতে যখন কাজ থাকবে না, বিদ্যুতের সুইচ বন্ধ করে রাখেন। এতে বিলটাও কম আসবে আর আপনাকেও টাকা কম দিতে হবে আমাদের বিদ্যুৎটাও সাশ্রয় হবে। এই অনুষ্ঠানে হবিগঞ্জের জুলদায় ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিবিয়ানা-৩ বিদ্যুৎকেন্দ্র, চট্টগ্রামে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র ইউনিট-২, নারায়ণগঞ্জে মেঘনাঘাট ১০৪ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট, বাগেরহাটে মধুমতী ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং সিলেটের ১৫০ থেকে ২২৫ মেগাওয়াটে উন্নীত হওয়া কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন ঘোষণা করছি এবং পাঁচটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৭৭৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। দেশের মানুষের আর্থিক সংগতি ও ক্রয়ক্ষমতা এখন বেড়েছে। এখন গ্রামের মানুষও টেলিভিশন, ফ্রিজ, এমনকি এসিও ব্যবহার করছে। অন্তত সেই সক্ষমতা আস্তে আস্তে গড়ে উঠছে এবং সেটা আরো গড়ে উঠুক, সেটাই আমি চাই। বৈষম্যটা যেন না থাকে। মানুষ যেন সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পায়। সেজন্যই সবাইকে আমরা অনুরোধ করব যে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে মিতব্যয়ী হতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের ঘরের সুইচটা নিজের হাতে অফ করায় ‘লজ্জার কিছু নেই’। আমি নিজেও প্রয়োজন ছাড়া বিদ্যুৎ ব্যবহার ‘করি না’। যখনই আমি বের হই, নিজের হাতে সুইচগুলো অফ করি। চিরদিন তো কেউ আর প্রাইম মিনিস্টার থাকে না। এটা হয়ত পাঁচ বছরের জন্য আসে। এরপর তো আর থাকবে না। তখন তো আবার নিজের মতোই চলতে হবে। অভ্যাসটা নষ্ট করে তো লাভ নেই।

প্রতি ওয়াট বিদ্যুতের জন্য যে বিল দিতে হয়, তার চেয়ে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি পড়ে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আপনাদের সবাইকে খুব অল্প খরচে (বিদ্যুৎ) দিয়ে থাকি। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সবাইকে বলব, মিতব্যয়ী হন এতে সাশ্রয় হবে। যা হয়ত আরেকজনকে দিতে পারব। এতে দেশ এগিয়ে যাবে। এটাই আমাদের লক্ষ্য।

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা টিকা দিচ্ছি। টিকা ব্যাপক হারে দেব। টিকাতে কেউ বাদ যাবে না। আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং যত টাকা লাগে আমরা সেই স্বাস্থ্যসেবা মানুষকে দিচ্ছি এবং টিকার ব্যবস্থা করেছি।

টিকা নেওয়ার পরও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে এবং অনেক সময় লক্ষণও যে বোঝা যায় না, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, কাজেই আপনি হয়ত নিজে বুঝতে পারছেন না কিন্তু অন্যকে আপনি সংক্রমিত করে দিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগে আয়োজিত পাঁচ কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন অনুষ্ঠানে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close