সংসদ প্রতিবেদক

  ০৮ জানুয়ারি, ২০১৮

সংসদে প্রধানমন্ত্রী

মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়া একজন রাজনীতিকের বড় অর্জন

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ মরণশীল। জন্ম নিলে মৃত্যু অবধারিত। কিন্তু কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়াটাই একজন রাজনীতিকের বড় অর্জন। সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে কাজ করে প্রয়াত নেতারা মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। যদি একজন রাজনীতিবিদ গণমানুষের পাশে থাকেন ও সমর্থন পান; তাহলে অর্থ-বিত্ত-শক্তি কোনো কিছুই কাজে লাগে না। গতকাল রোববার জাতীয় সংসদ অধিবেশনের শুরুর দিনে আনীত শোকপ্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে শোকপ্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বি মিয়া, প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ, সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, এ বি তাজুল ইসলাম, কামাল আহমেদ মজুমদার, মীর শওকাত আলী বাদশা ও ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি। আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে শোকপ্রস্তাবটি গৃহীত হয়। প্রয়াত নেতাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন।

শোকপ্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদায়ী বছরে অনেক নিষ্ঠাবান নেতাকে আমরা হারিয়েছি। প্রয়াত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক সততা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তার কাজের সফলতায় মৎস্যসম্পদ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘একজন রাজনীতিবিদ সৎ হলে দেশ এগিয়ে যায়। ছায়েদুল হককে আমরা সে রকমই একজন মন্ত্রী পেয়েছিলাম। তিনি এমনই একজন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন যে, তিনি পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।’

সংসদ নেতা বলেন, ‘গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের গোলাম মোস্তফা তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে এমনভাবে মিশে গেছিলেন যে, তঁর সঙ্গে জাতীয় পার্টির যে প্রার্থী ছিলেন তিনি শিক্ষাদীক্ষায় ও বিদেশ থেকে এসেছিলেন, অর্থ বিত্তশালী ছিলেন। ওই এলাকা জাতীয় পার্টির এলাকা বলা হয়। সাধারণ মানুষের প্রতি যে দরদ ছিল। সেই সমর্থনে তিনি জয়ী হয়ে আসেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাস চালাত, সেখানে সবসময় আতঙ্ক বিরাজ করত। নির্বাচন বানচালের নামে সেখানে আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণ চালিয়ে কয়েকজন সদস্যকেও হত্যা করা হয়। দেড় শতাদিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বাড়িতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। বিএনপি-জামায়াতের ভয়াল সন্ত্রাসের মধ্যেও অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মঞ্জুুরুল ইসলাম লিটন নির্বাচিত হয়ে আসেন। দুর্ভাগ্য আততায়ীর গুলিতে লিটন নিহত হন।’ প্রয়াত ওই দুই সংসদ সদস্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি।

যাদের নামে শোকপ্রস্তাব গৃহীত হয় : বর্তমান সংসদের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক, সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা আহমেদ, সাবেক ডেপুটি স্পিকার আখতার হামিদ সিদ্দিকী, সাবেক গণপরিষদ সদস্য ফজলুর রহমান ভূঁইয়া, সাবেক সংসদ সদস্য মো. জয়নাল আবেদীন সরকার, কাজী নুরুজ্জামান, গাজী আতাউর রহমান, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে শোকপ্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এ ছাড়া ভাষাসংগ্রামী মুহাম্মদ তকীয়ুলাহ জয়নাল আবেদীন, দলিল উদ্দিন, বিজ্ঞানী আবদুল লতিফ, সংগীতশিল্পী বারী সিদ্দিকী, নৃত্যশিল্পী রাহিজা খানম ঝুনু, ওয়ালটন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের মৃত্যুতেও শোক প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া ইরাক-ইরান সীমান্তে ভূমিকম্পে, মিসরে মসজিদে বোমা হামলায়, ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়ে এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে শোকপ্রকাশ করে সংসদ।

সংসদের রেওয়াজ অনুযায়ী চলমান সংসদের কোনো সদস্যের মৃত্যুতে তার জীবন ও কাজের ওপর আলোচনা করা হয়। পরে অধিবেশন মুলতবি হয়। তবে রাষ্ট্রপতির ভাষণের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্য অধিবেশন এক ঘণ্টার জন্য মুলতবি রাখেন স্পিকার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist