reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৫ মার্চ, ২০২৩

রমজানের আগেই বাজার স্থিতিশীল হোক

আসছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান। পবিত্র এ মাসকে কেন্দ্র করে প্রতিবারের মতো এবারও পণ্যের দাম বাড়িয়ে ও মজুদ করে অবৈধ মুনাফা লুটতে তৎপর হয়ে উঠেছে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। যদিও রমজানে নিত্যপণ্যের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এমনকি এ বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরই মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, তারা যেন বাজার নজরদারিটা ঠিকভাবে করেন। আমরাও চাই সরকারপ্রধানের এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হোক। তাহলে সাধারণ মানুষ এর সুফল ভোগ করবে। বারবার নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ এমনিতেই খুব নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তার পরও রমজানকে কেন্দ্র করে প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যদি আবার বাড়তে থাকে তাহলে এর ধাক্কা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

বলা সংগত, রমজান আসার আগ থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়তে শুরু করে। আর বরাবরের মতো এটা যেন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। রমজান শুরু হতে বেশি দিন আর বাকি নেই। তবে এর মধ্যেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার খবর গণমাধ্যমে আসছে। রমজানে বাজার তদারকি শুরুর আগেই দ্রব্যমূল্য কয়েক দফা বাড়িয়ে দেওয়ার এই কৌশল বিগত বছরগুলোতেও দেখা গেছে, যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। কিন্তু কে শুনে কার কথা।

রমজানের সময় ভোজ্য তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, মসলা ইত্যাদি পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীরা মওকা বুঝে এ সময়টাতেই চাহিদাসম্পন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। বড় থেকে ছোট ব্যবসায়ী সবার প্রবণতা এ সময় বেশি লাভ তুলে নেওয়ার। এবারও সেই একই আলামত লক্ষ করা যাচ্ছে। চিনি, তেল, আদা, পেঁয়াজ ইত্যাদি নিত্যপণ্যের দাম গত এক সপ্তাহে বেড়েছে। তরিতরকারির দামও ঊর্ধ্বমুখী।

জানা গেছে, বাজারে ভোজ্য তেলের সংকট নেই। পাশাপাশি খোলা তেলেরও সরবরাহ পর্যপ্ত। এর পরও বিক্রেতারা প্রতি সপ্তাহে বাড়তি দরে তেল বিক্রি করছেন।

ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে যাতে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারেন, সেদিকে লক্ষ রাখার কথা জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অবশ্য এসব তৎপরতা প্রতি বছরই দেখা যায়। রমজানে বেশি চাহিদাসম্পন্ন পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ থাকার এবং যেকোনো মূল্যে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার ঘোষণা দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকে ভোগ্যপণ্যের উৎপাদক ও বিপণনকারীরা আশ্বাস দেন রমজানে কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না। কিন্তু এর পরও রমজানের আগে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে।

বলা বাহুল্য, কয়েক বছরে রোজার সময় ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার মোটামুটি সফলতার পরিচয় দিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে না পারলেও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এবার সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে আগের তুলনায় বেশি সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে এখন থেকেই যাতে বাজার স্থিতিশীল থাকে। এ ছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা থাকে সেগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। পণ্য পরিবহন নির্বিঘ্ন রাখতে বিশেষ করে কৃষিপণ্যের সরবরাহে যাতে কোনো বাধার সৃষ্টি হতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদের। আর এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close