reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১১ মে, ২০২২

শাওয়ালের ছয় রোজার গুরুত্ব অপরিসীম

রমজান-পরবর্তী ফজিলতপূর্ণ মাসগুলোর মধ্যে শাওয়াল অন্যতম। পবিত্র রমজানে মাসব্যাপী যারা সিয়াম সাধনা করেছেন তাদের জন্য এ মাসে শুভ সংবাদ হলো শাওয়াল মাসের ছয় রোজা। শব্দটি ‘শাওলুন’ থেকে এসেছে, যার অর্থ হচ্ছে বের হওয়া। যেহেতু এ মাসে আরববাসী আনন্দণ্ডউল্লাসের জন্য ভ্রমণে বের হন এজন্য শাওয়াল মাসকে শাওয়াল বলা হয়। (গিয়াসুল্লুগাত : ২৮৭) এ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে শাওয়ালের ছয় রোজা। রমজানের ফরজ রোজা পালনের পর শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখা মুস্তাহাব। এ আমলের ফজিলত বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজে এ রোজা রেখেছেন এবং সাহাবায়ে কেরামদেরও শাওয়াল মাসের রোজা রাখার প্রতি উৎসাহিত করেছেন। শাওয়ালের ছয় রোজাসহ নফল ইবাদত ফরজের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলোর ক্ষতিপূরণ করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমজানের ফরজ রোজা রাখল অতপর তার সঙ্গে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল। (মুসলিম, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৬৯, হাদিস নং ১১৬৪)

হজরত উবায়দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত এক দিন রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব? তখন রাসুল (সা.) বললেন, তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে, কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখো এবং রমজানের পরবর্তী মাস শাওয়ালের ছয় রোজা রাখ, তাহলেই তুমি সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে। (তিরমিজি প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৫৭)

পবিত্র কোরআনুল কারিমের সুরা আনআমের ১৬০ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘যে লোক একটি নেক কর্ম করবে সে ১০ গুণ বেশি সওয়াব পাবে। সেই হিসাবে রমজানের ৩০ রোজায় ৩০০ রোজার সওয়াব হয়। আর মাহে শাওয়ালের ছয় রোজায় ৬০ রোজার সওয়াব হয়। এভাবে রমজানের ৩০ রোজা এবং শাওয়ালের ছয় রোজাসহ মোট ৩৬ রোজা ১০ দিয়ে গুণ দিলে ৩৬০ রোজার সমান হয়ে যায়, আর ৩৬০ দিনে এক বছর। সুতরাং ৩৬টি রোজায় সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রমজানের রোজা শেষ করে ছয় দিন রোজা রাখবে, সেটা তার জন্য পুরো বছর রোজা রাখার সমতুল্য। (আহমদ, হাদিস নং ২৮০, দারেমি, হাদিস নং ১৭৫৫) শাওয়ালের ছয় রোজা মাসের যেকোনো দিন রাখা যায়। তবে রমজানের কাজা রোজা আগে পূরণ করে শাওয়ালের রোজা পালন করা উত্তম। শাওয়ালের ছয় রোজা শাওয়াল মাসে শুরু করে শাওয়াল মাসেই শেষ করতে হবে। ধারাবাহিকভাবে ছয় দিনে ছয় রোজা রাখা যায়, আবার মাঝে বিরতি দিয়ে পৃথকভাবেও রাখা যায়।

রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, যে মাহে রমজানের পূর্ণ রোজা রাখবে, আর যার ওপর কাজা রয়ে গেছে সে তো রোজা পুরা করেছে বলে গণ্য হবে না, যতক্ষণ ওই রোজাগুলো কাজা আদায় না করে। (আল মুগনি, হাদিস নং ৪৪০) শাওয়াল মাসের ছয় রোজা পালন সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব প্রাপ্তির এমনি একটি পরম সুবর্ণ সুযোগ। মহান আল্লাহ আমাদের তওফিক দান করুন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close