reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৭ এপ্রিল, ২০২০

প্রণোদনা প্যাকেজের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত হোক

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে যেভাবে উদ্বুদ্ধ করছেন, তা বিশ্বে নজিরবিহীন। করোনার প্রাদুর্ভাবে বিশ্বের অর্থনৈতিক কার্যক্রম যখন স্থবির হয়ে পড়েছে, ঠিক এমনই একসময়ে দেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন করে চারটিসহ মোট পাঁচটি প্যাকেজে প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেছেন। গত রোববার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের এই প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। যার মাধ্যমে করোনাভাইরাসজনিত অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা কাটাতে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষার আওতা বৃদ্ধিসহ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনাভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতির জন্যও এক ভয়াবহ বার্তা নিয়ে এসেছে। এরই মধ্যে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার লক্ষণগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতি কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা নিরুপণ করাও দুঃসাধ্য। কারণ এই ক্ষতির পরিমাণ দিন দিনই বাড়ছে। এই অবস্থায় অর্থনীতির বড় ধরনের বিপর্যয় রোধে প্রায় প্রতিটি দেশ নিজের মতো করে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশেও ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষিত হয়েছে। গত রোববার গণভবন থেকে এই প্যাকেজ ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের দুর্নীতি বা অপব্যবহার সহ্য করা হবে না। এর আগে গত ২৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণে রফতানিমুখী শিল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত এই প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর যথাযত প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। কারণ এরই মধ্যে বাংলাদেশেও বিশ্ব অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আমাদের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পে এরই মধ্যে কয়েকশ কোটি ডলারের বিদেশি অর্ডার বাতিল হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে একই ভাবে অর্ডার বাতিল বা স্থগিতের আরো অনেক ঘটনা ঘটতে পারে। ফলে অনেক কারখানাই বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং এ খাতের লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়তে পারে। বাংলাদেশের চামড়া খাত অনেকটাই নির্ভরশীল চীন ও ইতালির ওপর। করোনার কারণে দেশ দুটির অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার বড় প্রভাব পড়েছে আমাদের চামড়াশিল্পেও। বিশ্বব্যাপী বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এয়ারলাইনস ও পর্যটন সংস্থাগুলো। বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। হোটেল-রেস্তোরাঁ খাতেও বড় ধরনের ধস নেমেছে। এরই মধ্যে এসব খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েক লাখ লোক বেকার হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ছোট-বড় অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানেরই উৎপাদন কমে এসেছে। নির্মাণকাজে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে এসেছে। তার প্রভাব পড়ছে সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলোতে। এমন প্রেক্ষাপটে এই প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা অত্যন্ত সময়োপযোগী।

আমরা আশা করি, করোনাভাইরাসের কারণে শিল্প-কারখানাগুলো যে বিপর্যয়কর অবস্থার মুখোমুখি হয়েছে, তা তারা এই প্যাকেজের মাধ্যমে অনেকটাই কাটিয়ে ওঠতে পারবে। যার ফলে দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও স্বস্তির সুবাতাস বইবে। এমনকি জাতীয় অর্থনীতির জন্য নিঃসন্দেহে এটি একটি আশীর্বাদ। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত এই প্রণোদনা প্যাকেজের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত হোক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close