শাহ বিলিয়া জুলফিকার

  ২৫ মার্চ, ২০২৪

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী উদ্যোক্তা মেলা

‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’। কাজী নজরুল ইসলাম যথার্থই বলেছিলেন। কেননা প্রতিটি কাজেই পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সমানভাবে পার্টিসিপেট করে। কখনো কখনো সরাসরি কোনো কাজে ইনভলভ না থেকেও উৎসাহদাতা হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে নারীরা। বর্তমান সময়ে পিছিয়ে নেই তারা। পুরুষের পাশাপাশি বিভিন্ন সেবামূলক ও ক্ষমতায়নের মতো কাজ করছে প্রতিনিয়ত। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘নারী উদ্যোক্তা’ তৈরি।

সমাজের প্রচলিত রীতিনীতি ভেঙে নারীরা এখন ব্যবসায়িক জগতে নিজেদের প্রতিভা ও দক্ষতা প্রমাণ করছে। নারী উদ্যোক্তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তৈরি পোশাক, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, হস্তশিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। নারী উদ্যোক্তারা অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে, জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে এবং দারিদ্র্যদূরীকরণে সহায়তা করছে। ফলে নারী উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের অর্থনীতির নতুন দিগন্ত। পুরুষ-নারী সমতা অর্জনে এবং দারিদ্র্যদূরীকরণে তাদের ভূমিকা অপরিসীম হওয়ায় সম্প্রতি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রোটারেক্ট ক্লাব একটি দারুণ উদ্যোগ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে মেলার আয়োজন করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রোটারেক্ট ক্লাব। যেখানে উদ্যোক্তারা নিজেদের পণ্য প্রদর্শনী ও বিক্রির সুযোগ পেয়েছে।

রবিবার (১০ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গাহি সাম্যের গান’ মুক্তমঞ্চ প্রাঙ্গণে ১১টি স্টলে ১০ নারী উদ্যোক্তার অংশগ্রহণে মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। সকালে মেলার উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান ও ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাশকুরা রহমান। উদ্বোধন শেষে স্টল পরিদর্শন করেন তারা।

দিনব্যাপী চলা এই মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীও উদ্যোক্তা হিসেবে অংশগ্রহণ করে। মেলায় অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিল মায়াবতীর গয়না, চিত্রাঙ্কন কাব্য, ক্রিং ক্রিং, কাঠের পুতুল, রাব্বাতুল বাইত, অঙ্কুর ক্লথিং, গিফটুস, কেক অ্যান্ড বেক হোম, বর্ণালি’স কুইজিন, বাগানবিলাসী। মেলায় টাইটেল স্পনসর হিসেবে ছিল ‘এসিআই ফ্রিডম স্যানিটারি ন্যাপকিন’। উদ্যোক্তারা জানান, ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থী ও উদ্যোক্তাদের কেন্দ্র করে এ রকম আয়োজন খুব একটা হয় না। এ ধরনের আয়োজনে নিজেদের উদ্যোগ নিয়ে মানুষের সামনে উপস্থাপনের যেমন সুযোগ থাকে, পাশাপাশি নতুন নতুন অভিজ্ঞতাও অর্জন করা যায়।

সন্ধ্যায় উদ্যোক্তাদের সার্টিফিকেট প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জি, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মেহেদী উল্লাহ ও সহকারী প্রক্টর মো. সাইফুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয় রোটারেক্ট ক্লাবের সভাপতি সামিয়া জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণামূলক কিছু করার পরিকল্পনা আগে থেকেই ছিল। তাই নারী দিবসের উপলক্ষকে কেন্দ্র করে আমাদের এই পরিকল্পনা, যার উদ্দেশ্য ছিল নারী শিক্ষার্থীদের উদ্যমী চেতনাকে অনুপ্রাণিত করে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রয়াসে প্রেরণা জোগানো। আমরা চেষ্টা করেছি এবং নারী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। এতেই আমরা সন্তুষ্ট। এ রকম আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

মেলায় ‘বেস্ট ইম্পাওয়ার্ড ওমেন’ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের দোলনচাঁপা হলের প্রভোস্ট ও ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাশকুরা রহমান রিদম কে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close