প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৬ মার্চ, ২০২৪

লতাপাতা খেয়ে বেঁচে আছে গাজাবাসী

ত্রাণ সংগ্রহের লাইনেও গুলি করছে ইসরায়েল

ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। শহরটি খাদ্য সংকটে ভুগছে। কেবল তাই নয়, অপুষ্টি এবং অনাহারে মারা যাচ্ছে বহু শিশু। খাদ্য সংকটের চরমমাত্রায় এক পর্যায়ে তারা পশুপাখির খাবার খেয়ে কোনোমতো জীবন বাঁচিয়ে রাখছিল। এখন তাও শেষের দিকে। এই অবস্থায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বন্য লতাপাতাই শেষ ভরসা। এমনটাই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

এ মাসের (মার্চ) শুরুতে গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা হাজেম সাঈদ আল-নাইজির পরিবার জানায়, পশুপাখির খাবার খেয়ে কোনোমতো জীবন বাঁচিয়ে রাখছিল সদস্যদের। কিন্তু দুই সপ্তাহ পর সেই খাবারও শেষ হয়ে গেছে। এখন তার পরিবার বন্য লতাপাতা খেয়ে বেঁচে আছে। সিএনএনকে পাঠানো এক খুদে বার্তায় এমন তথ্য জানিয়েছেন হাজেম সাঈদ।

তিনি বলেছেন, দুর্ভাগ্যবশত পশুপাখির খাবারও শেষ হয়ে গেছে। বাজারে এখন আর এটি পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় বর্বর হামলা চালানো শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। এতে বাড়িঘর হারানো সাধারণ মানুষ খাদ্য সংকটেও পড়েন। এই সংকট এতটাই তীব্র হয়েছে যে, পশুপাখি যেসব খাবার খায় সেসব খাবার খাওয়া শুরু করেন মানুষ। এছাড়া পরিবহন কাজে ব্যবহারের জন্য লালন-পালন করা ঘোড়াও জবাই করে খান তারা। এখন এই খাবারও শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হওয়া বন্য লতাপাতা খাচ্ছেন তারা। হাজেম সাঈদ গত নভেম্বরে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে চলে আসেন। সঙ্গে নিয়ে আসেন তার ৬ বছর বয়সী ছেলেকে।

তার স্ত্রী এবং অন্যান্য সন্তানরা উত্তরাঞ্চলেই রয়ে যায়। যদিও তার স্ত্রী এদিকে আসার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি সেনাদের বাধার মুখে আসতে পারেননি। এছাড়া রক্তজনিত সমস্যা থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় আরেকবার এই কঠিন পথ পাড়ি দিতে চাননি তিনি।

এরপর থেকে স্ত্রী ও অন্যান্য সন্তানদের কাছ থেকে আলাদাই থাকছেন হাজেম সাঈদ। খান ইউনিসে নিজ ছেলে ও অন্যান্য এতিম শিশুদের দেখাশোনা করছেন তিনি। সাঈদ বলেছেন, আমার স্ত্রী আর সন্তানরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। বন্য লতাপাতাও শেষ হয়ে আসছে। এগুলোও হয়ত এক সময় ফুরিয়ে যাবে।

এদিকে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনের ভিড়ে নির্বিচার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৯ জন। গাজার পৃথক দুটি স্থানে ত্রাণপ্রার্থীদের ওপর ইসরায়েল এই হামলা চালায়। এছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন আরও দেড় শতাধিক মানুষ। শুক্রবার (১৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকায় দুটি পৃথক ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় সহায়তার অপেক্ষায় থাকা কমপক্ষে ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একটি ঘটনায় ৮ ফিলিস্তিনি এবং অন্য ঘটনায় ২১ ফিলিস্তিনি নিহত হন। তারা সবাই ত্রাণ নেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close