প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ৩০ মার্চ, ২০২৩

খাদ্যসংকটে ধুঁকছে পাকিস্তান ত্রাণকেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড়

বিনা মূল্যের আটা নিতে গিয়ে পদদলিত হয়ে নিহত ২, আহত আরো ৫৬

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে সরকারি বিতরণ কেন্দ্র থেকে বিনা মূল্যে আটা নিতে গিয়ে পদদলিত হয়ে আরো দুজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন বৃদ্ধা এবং অন্যজন পুরুষ। এ ছাড়া হুড়োহুড়ি ও পদদলনের ঘটনায় আরো ৫৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৪৫ জন নারী। বুধবার (২৯ মার্চ) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এবং দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার পাঞ্জাব প্রদেশের সাহিওয়াল, বাহাওয়ালপুর, মুজাফফরগড় এবং ওকারা জেলায় বিনা মূল্যে আটা কেন্দ্রে পদদলিত হয়ে এক বৃদ্ধা ও পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় ৪৫ জন নারীসহ ৫৬ জন আহত হয়েছেন। সরকার এই কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে বিতরণে অব্যবস্থাপনা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। দ্য ডন বলছে, মঙ্গলবার কায়েদণ্ডই-আজম স্টেডিয়ামে স্থাপিত বিতরণ কেন্দ্রে বিনা মূল্যে আটা সংগ্রহ করতে আসা এক বৃদ্ধা পদদলিত হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের আঘাত পেয়ে আহত হন আরো ৪৫ নারী।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আটা নিতে আসা ব্যক্তিদের যাচাই করতে ব্যবহৃত অ্যাপটি প্রযুক্তিগত ত্রুটির মুখে পড়ে এবং কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে বিনা মূল্যে আটা বিতরণে প্রচুর লোকের ভিড় দেখা দেয়। ভিড় জমানো এসব মানুষ সিস্টেমটি পুনরায় কাজ শুরু করার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করেন এবং এর কারণে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েন।

বলা হচ্ছে, মঙ্গলবার অ্যাপের লিংকটি ডাউন ছিল এবং তিন থেকে চার ঘণ্টার জন্য ধরে চালুই হয়নি। অন্যদিকে দেড় হাজারেরও বেশি নারী সে সময় ময়দা নিতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন। পরে সেখানে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এদিকে আটা বিতরণ কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য অনেক নারী পুলিশকে দায়ী করেছেন। তাদের অভিযোগ, সেখানে অনেক লোকের ভিড় থাকলেও কেন্দ্রে নিযুক্ত সিভিল লাইন পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ব্যক্তিদের মারধর ও লাঠিচার্জ শুরু না করা পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত ছিল। তবে মারধর ও লাঠিচার্জ শুরুর পর বিশৃঙ্খলা দেখা যায় এবং এর কারণে পদদলনের ঘটনা ঘটে।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, প্রশাসনের অ্যাপটি বন্ধ হয়ে যায় এবং লোকজন ভিড় ও দীর্ঘ লাইনে আটকে অস্বস্তিতে চিৎকার করতে থাকে। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার পরিবর্তে তারা লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় নারীদের চড় ও ধাক্কা মারতেও দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের। এর ফলে ভিড় আরো বেশি উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং পরিস্থিতির অবনতি হয়ে পদদলিত হওয়ার ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম নাসিমা আক্তার। তিনি সাহিওয়াল শহরের কারবালা রোডের বাসিন্দা আমিরের স্ত্রী।

রেসকিউ ১১২২-এর কর্মকর্তা আদনান শামাস ডনকে জানান, ছয়টি জরুরি যানবাহন ও কর্মীরা আহত নারী ও পুরুষদের চিকিৎসা দিয়েছেন। আহত ২৫ নারীকে আরো চিকিৎসার জন্য সাহিওয়াল টিচিং হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং বাকিদের ঘটনাস্থলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মহসিন নকভি পদদলিত হয়ে প্রাণহানির ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে পৃথক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, পাঞ্জাবের রহিম ইয়ার খানে বিনা মূল্যের আটা নিতে গিয়ে ৭৩ বছর বয়সি এক ব্যক্তি পদদলনের শিকার হন। আনোয়ার দ্বীন নামের ওই ব্যক্তি পরে মারা যান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close