এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর  

  ০১ এপ্রিল, ২০২৪

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা

জামদানি বোনার ধুম কারিগররা ব্যস্ত

পবিত্র ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় জামদানি শাড়ি তৈরির কারখানায়। দিন-রাত কর্মব্যস্ত কারিগররা। চোখে তাদের ঘুম নেই। ধুম পড়েছে শাড়ি বোনার।

জানা গেছে, গত প্রায় চার বছর ধরে উপজেলার টগরবন্ধ ইউনিয়নে পানাইল গ্রামে রেশমি সুতা থেকে জামদানি বুনছেন। নানা সমস্যা কাটিয়ে লাভের আশা করছেন তাঁতমালিক মো. মোস্তফা রহমান।

প্রত্যেকটি শাড়ির মূল্য সর্বনিম্ন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। প্রতিটি শাড়িতে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং অনেক সময় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার সুতা প্রয়োজন হয়। দেখা যায়, উপজেলার পানাইল গ্রামের বাসিন্দা আতিয়ার রহমানের ছেলে মোস্তফা রহমান (৩৬) বাড়ির ওপর শুরুতে একটি এবং এখন ছয়টি তাঁত বসিয়ে জামদানি শাড়ি তৈরি করছেন। কারখানাটিতে ১২ জন কারিগর দিন-রাত মিলিয়ে সমান তালে কাজ করছেন। তাদের এখন চোখে ঘুম নেই। কারখানাশ্রমিক ইমন শেখ বলেন, এখানে দুই বছর ধরে জামদানি শাড়ি তৈরির কাজ করছি। সামনে ঈদ। বেতন-বোনাস নিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে যাব। ঈদে যাতে বেশি শাড়ি বুনতে পারি, এ কারণে দিন-রাত মিলিয়ে সমানতালে কাজ করছি।

শেরপুর জেলার বাসিন্দা আতিকুল হোসেন। তিনি জামদানি শাড়ির বুনার কারিগর। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘দুই-তিন বছর ধরে এখানে কাজ করছি। ঈদের জন্য ব্যস্ততা বেড়েছে। দম ফেলার সময় নেই।

মোস্তফা রহমানের স্ত্রী মোছা. লিপি সুলতানা বলেন, কয়েক বছর আগে আমার স্বামীর কাছ থেকেই কাজ শিখেছি। স্বামীর পাশাপাশি আমিও কাজ করি এবং কারখানাটি দেখাশোনা করি। 

কারখানাটির মালিক মোস্তফা রহমান বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বিভিন্ন তাঁতপল্লীতে কারিগর হিসেবে কাজ করেছি। ২০২০ সালে করোনাকালীন বাড়িতে এসে প্রথমে একটি তাঁত বসিয়ে জামদানি শাড়ি বুনতে শুরু করি। এখন ছয়টি তাঁতে ১২ জন শ্রমিক কাজ করেন।

মোস্তফা রহমান আরো বলেন, কারখানাটি গড়ে তুলতে খরচ হয়েছে পাঁচ লাখ টাকার মতো। এখন শ্রমিকের বেতন, বিদ্যুৎ বিলসহ সব মিলিয়ে ২৫ থেকে ৩০টি জামদানি শাড়ি বুনতে প্রতি মাসে প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়। আর শাড়িগুলো বিক্রি করে সব খরচ বাদে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা লাভ হয়। বিভিন্ন ধরনের ও দামের শাড়ি রয়েছে। সর্বনিম্ন ১২ হাজার থেকে শুরু, ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার শাড়িও তৈরি করা হয়। শাড়িগুলো বুননের পর তিনি ঢাকায় বিসিক, তাঁতপল্লীসহ বিভিন্ন মার্কেটে বিক্রি করেন।  

আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান এ ব্যাপারে বলেন, বিষয়টি জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিয়ে অবশ্যই যাব এবং সাধ্যমতো তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমীন ইয়াছমীন এ ব্যাপারে বলেন, আপনার মাধ্যমে অবগত হলাম। আমি সময় করে অবশ্যই জামদানি শাড়ি তৈরি কারখানায় যাব।

ফরিদপুর বিসিকের উপমহাব্যবস্থাপক মানছুরুল করিম এ ব্যাপারে বলেন, জানামতে ফরিদপুরে কোনো জামদানি পল্লী বা এ ধরনের শাড়ি তৈরি করা হয়না। এখন যেহেতু জানতে পারলাম, কারখানাটিতে গিয়ে বিস্তারিত জানব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close