জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

  ০৫ মে, ২০২৪

কেমিক্যালে পাকানো আমে বাজার সয়লাব

উত্তরের ১৬ জেলায় আম পাকা শুরু হয়নি। এদিকে নীলফামারীর সৈয়দপুর বাজারগুলো কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো আমে সয়লাব হয়ে গেছে। অপরিপক্ব এসব আম বিভিন্ন জাতের নাম করে ৩ হাজার ৬০০ থেকে ৪ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এবার আম পাকা শুরু হওয়ার তারিখ ১৮ মে থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে। সৈয়দপুরের আড়তে গত ২৮ এপ্রিল থেকে আম উঠতে শুরু করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব আম দেখতে পাকা। কিন্তু আঁটি কাঁচা। স্থানীয়রা বলেছেন, এসব আম নানা ধরনের কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লালমোহন আমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা ও গোপালভোগ ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি করা হচ্ছে। অপরিপক্ব এসব আম কেমিক্যাল দিয়ে পাকানোর ফলে আমের ওপরের অংশ হালকা হলুদ ও বেশ চকচকে। ক্রেতারা রসালো ও গাছপাকা মনে করে দেদার কিনছেন এসব আম। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবার গরম আবহাওয়া ও বৃষ্টি না হওয়ার ফলে প্রায় গাছের আম ঝরে গেছে। একইসঙ্গে আম পাকতে সময় লাগবে। যেসব গাছে আম আছে, সেগুলো ১৮ মের আগে পরিপক্ব হওয়ার কথা নয়। কৃষি বিভাগের ঘোষিত নির্ধারিত তারিখ ১৮ মে ঘোষণা করা হলেও সৈয়দপুরের ফলের আড়ত ও খুচরা বাজারে কেমিক্যাল মিশিয়ে পাকানো আম বেচাকেনা চলছে জোরেশোরেই।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ রায় বলেন, কৃষি বিভাগ ১৮ মের পর আম পাড়ার নির্দেশ দিলেও আমরা ২৩ মের আগে আম পাড়াতে নিরুৎসাহিত করছি। কারণ ১৮ মের মধ্যে আম পরিপুষ্ট হবে না। একই মতামত ব্যক্ত করেন নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাজারে মে মাসের শেষদিকে আসবে দেশি আঁটির আম, আর জুন মাসের প্রথম দিকে নামবে গোপালভোগ, ল্যাংড়াসহ রংপুরের বিখ্যাত হাঁড়িভাঙা আম। তিনি বলেন, বাজারের যেসব আম বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো কেমিক্যাল মিশিয়ে অথবা কিলিয়ে পাকানোর মতো।

একাধিক ক্রেতা জানান, বাজারের যেসব আম বিক্রি করা হচ্ছে, সেগুলোর ওপরের অংশ হালকা হলুদ হলেও মিষ্টি নেই এবং আঁটিগুলো কাঁচা। অধিকাংশ আমই ১২ ঘণ্টার মধ্যে শুকিয়ে যাচ্ছে।

শহরের ১ নম্বর রেল ঘুমটি এলাকার একাধিক ফল বিক্রেতা জানান, গিয়াস উদ্দিন নামে এক আড়তদার নাটোর ও শান্তাহার থেকে যে আম আড়তে এনেছেন, সেগুলোর সবই অপরিপক্ব ও কেমিক্যালে পাকানো। ওই আড়তদার বিভিন্ন নামে আম বিক্রি করছেন এবং দামও নিচ্ছেন অনেক বেশি। তারা বলেন, অপরিপক্ব পাকা আম বিক্রির দায়ে রংপুর বিভাগের অনেক ব্যবসায়ীর জরিমানা করা হলেও গিয়াস নামে ওই আড়তদার দাপটের সঙ্গেই বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল মিশানো আম বিক্রি করে চলেছেন।

সৈয়দপুর ফল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাদশা মিয়া জানান, সৈয়দপুর শহরের ২-৩ আড়তদার খুলনা, নাটোর ও রাজশাহী থেকে আম নিয়ে আসছেন এবং এখান থেকে জেলার বিভিন্ন বাজারে পাঠাচ্ছেন। কৃষি অধিদপ্তরের নির্ধারীত ১৮ মের আগে যে আমগুলো বাজারে আনা হচ্ছে, সেগুলোর সবই অপরিপক্ব। জানতে চাইলে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়াসিম বারি জয় বলেন, অপরিপক্ব পাকা আঠালো আম খেলে পেটের পীড়া হবেই হবে। শিশুসহ বয়স্ক মানুষ ওইসব আম খেলে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close