কুবি প্রতিনিধি

  ২১ মার্চ, ২০২৪

কুবিতে ক্লাস বর্জনে সেশনজটের শঙ্কা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষক সমিতি গত ১৯ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত ৯ দিনের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে। তবে শিক্ষকরা ধর্মঘটে থাকলেও ইভিনিংয়ের ক্লাস নিচ্ছেন তারা। এ কারণে সেশনজটে পড়ার আশঙ্কা করছেন নিয়মিত শিক্ষার্থীরা। এ সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। গত ১৮ মার্চ শিক্ষক সমিতির লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে শ্রেণি কার্যক্রম বর্জনের এ ঘোষণা দেওয়া হয়। তাছাড়া গত ১৩ এবং ১৪ মার্চেও শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রেখেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ও ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের বিভিন্ন বিভাগে চালু আছে ইভিনিং কোর্স।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিয়মিত ক্লাসের এক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষক সমিতির এ সিদ্ধান্তে শুধু নিয়মিত ক্লাসের শিক্ষার্থীরাই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। শিক্ষক রাজনীতির কারণে ভুক্তভোগী হব আমরাই।

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মাহমুদুল হাছান বলেন, এটি সাংঘর্ষিক না। এগুলো হচ্ছে এক্সিকিউটিভ প্রোগ্রাম। এটির সঙ্গে রেগুলার কার্যক্রমের সম্পর্ক নেই। এক্সিকিউটিভ প্রোগ্রামগুলো আলাদা অডিয়েন্সে, আলাদাভাবে চলে।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিছু কিছু বিভাগের ঈদের আগে ক্লাস এবং মিড শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষকদের ক্লাস বর্জনের ফলে মিডগুলো ঈদের আগে শেষ হচ্ছে না। এতে তাদের সেমিস্টার ফাইনালে বসতে দেরি হতে পারে।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জন করেছেন নিজেদের স্বার্থে। তারা শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবেন না। আমাদের রেগুলার শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন করে ইভেনিং ক্লাস নিচ্ছেন, কারণ ওটায় লাভ আছে।’

তারা বলছেন, স্পেসিফিকভাবে যদি বলা হতো শ্রেণি কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ, তাহলে শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে যেত। এখন তারা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আছে।

এ ব্যাপারে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘শিক্ষকরা যদি শান্তিতে না থাকেন, বৈষম্যের শিকার হন, হেনস্তার শিকার হন এবং বারবার বলার পরও উপাচার্য স্যারের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার আসছে না। সেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্যই শিক্ষক সমিতির এ কর্মসূচি।’

শিক্ষার্থীদের ক্ষতি এবং সেশন জটের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সাময়িক যে ক্ষতি সেটা আমরা পুষিয়ে দেব। রাতে-দিনে এমনকি অনলাইনে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে হলেও। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের হতাশ হওয়ার কারণ নেই।’

এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘শিক্ষকদের যুক্তিযুক্ত দাবি-দাওয়া থাকলে সেগুলো নিয়ে বসে সৌহার্দপূর্ণ আলোচনা করতে পারে। এগুলোর সঙ্গে ক্লাস বর্জনের কোনো সম্পর্ক নেই। এতে আমাদের শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো পাঁচটি বিভাগ একাডেমিকভাবে পিছিয়ে আছে। আমি একাডেমিক প্লান অনুসারে এগুলো নিরসনে কাজ করছি। আমি শিক্ষকদের আবারও আহ্বান করছি আপনারা ক্লাসে ফিরে যান।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close