৮ বছরে বজ্রপাতে ১৮০০'র বেশি মানুষের মৃত্যু
বাংলাদেশে ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আট বছরে বজ্রপাতের ঘটনায় ১৮০০'র বেশি মানুষ মারা গেছে বলে এক গবেষণায় বলা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এম. এ ফারুকের নেতৃত্বে এ গবেষণাটি করা হয়েছে।
অধ্যাপক ফারুক বলেন, এ গবেষণার জন্য ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ আট বছরের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
বাংলাদেশের প্রথম সারির চারটি দৈনিক সংবাদপত্রে বজ্রপাতে মারা যাবার যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে সেগুলোকে একত্রিত করে দেখানো হয়েছে যে আট বছরে বজ্রপাতে নিহতের সংখ্যা ১৮০০'র বেশি। এছাড়া গবেষণায় উঠে এসেছে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় সুনামগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে।
অধ্যাপক ফারুক তার গবেষণায় কয়েকটি বিষয় তুলে আনার চেষ্টা করেছেন। বজ্রপাত কেন হচ্ছে? কোথায় বেশি বজ্রপাত হচ্ছে? কত মানুষ মারা যাচ্ছে? গবেষণায় এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন অধ্যাপক ফারুক এবং তার সহকারীরা।
তিনি বলেন, জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম ব্যবহার করে দেখা গেছে রংপুর বিভাগের মধ্যে ঠাকুরগাঁও এবং লালমনিরহাটে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয়। রাজশাহী বিভাগের সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে। ময়মনসিংহ বিভাগে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় নেত্রকোনায়। ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় কিশোরগঞ্জে। সুনামগঞ্জে বজ্রপাত বেশি হলেও মানুষ মারা যাচ্ছে বেশি উত্তরাঞ্চলে।
তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি আলাস্কা এবং কানাডায় বজ্রপাত নিয়ে গবেষণা করেন। সেখান থেকে ফিরে বাংলাদেশের বজ্রপাতের বিষয়ে মনোযোগী হয়ে উঠেন অধ্যাপক ফারুক। পরে ২০১৬ সালের মে মাসের মাঝামাঝি বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বজ্রপাতে একই দিন ৫৭ জন মানুষ মারা যায়। এরপর বিষয়টি নিয়ে গবেষণায় আগ্রহী হয়ে উঠেন বলে জানান তিনি।
বজ্রপাত নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে তিনি ১৯৮০'র দশক থেকে খবরের কাগজ সে সংক্রান্ত তথ্য খুঁজতে থাকেন। কিন্তু সে সময় বজ্রপাতের বিষয়টিকে সংবাদ মাধ্যমে তেমন একটা গুরুত্ব দেয়া হতো না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর ২৫ মিলিয়ন বজ্রপাত হয়। কিন্তু বজ্রপাতে মানুষ মারা যায় ৪০ থেকে ৫০ জন। ভারতীয় আবহাওয়া অফিসের রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তথ্য মতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ২৪০০'র মতো বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। সূত্র : বিবিসিপিডিএসও/তাজ