শেষ হচ্ছে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমা
আজ আখেরি মোনাজাত
আজ রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে মুসলিমবিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত হতে পারে। মোনাজাতের আগে হবে হেদায়তি বয়ান।
তাবলিগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বিদের পরামর্শের ভিত্তিতে গত পর্বের মতো এ পর্বেও কাকরাইল মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ জোবায়ের আরবি ও বাংলায় আখেরি মোনাজাত পরিচলনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মোনাজাতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মানুষের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হবে। বিদেশি নিবাসের পূর্বপাশে বিশেষ মোনাজাত মঞ্চ থেকেই এ আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করা হবে। আখেরি মোনাজাতে ২০ থেকে ২৫ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেবেন বলে আয়োজকদের ধারণা।
এদিকে গত পর্বের মতো এপর্বেও বিশ্ব ইজতেমার অন্যতম আকর্ষণ যৌতুকবিহীন বিয়ে শনিবার অনুষ্ঠিত হয়নি। তাবলিগ জামাতের আগামী ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা ২০১৯ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে প্রথম পর্ব এবং ২৫ জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্ব টঙ্গীর তুরাগ তীরে হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব ইজতেমার মুরব্বি প্রকৌশলী মো. মাহফুজ।
এদিকে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে শিল্প নগরী টঙ্গী এরইমধ্যেই ধর্মীয় নগরীতে পরিণত হয়েছে। শনিবার সকালেই টঙ্গী শহর এবং ইজতেমাস্থল ও এর আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমায় আগত লাখ লাখ মুসল্লির পদভারে মুখর হয়ে উঠেছে।
ইসলামী দাওয়াতের মাধ্যমে ঈমান আকিদা বিষয়ে শিক্ষা লাভ করে ইহলোকিক ও পারলৌকিক মঙ্গল কামনার জন্য মুসল্লিরা দেশের দূর-দূরান্ত থেকে ইজতেমা ময়দানে উপস্থিত হয়েছেন। রোববারও টঙ্গী অভিমুখী বাস, ট্রাক, ট্রেন, লঞ্চসহ বিভিন্ন যানবাহনে ছিল মানুষের ভিড়। আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ ঢল অব্যাহত থাকবে। এই পর্বের ইজতেমায় ঢাকার একাংশসহ দেশের ১৩টি জেলার মুসল্লিরা ২৮ খিত্তায় অবস্থান নিয়েছেন।
আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে মুসল্লিদের সুবিধার্থে শনিবার দিবাগত রাত থেকে ওই এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে পুলিশ। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বিধিনিষেধ বলবৎ থাকবে। এবারের বিশ্ব ইজতেমা নজীরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে হচ্ছে। প্রায় ১২ হাজার র্যাব ও পোশাকধারী পুলিশের পাশপাশি রয়েছে সাদা পোশাকে প্রায় তিন হাজার গোয়েন্দা সদস্য। আকাশ ও নৌপথে রয়েছে র্যাবের সতর্ক নজরদারী।
বিশেষ ট্রেন : এবারের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে আখাউড়া, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন রুটে ২৯টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইজতেমা উপলক্ষে এসব ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোগ করা হয়েছে। এছাড়া আখেরি মোনাজাতের আগে ও পরে সব ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে যাত্রা বিরতি করবে।
টঙ্গী রেলওয়ে জংশন সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত টঙ্গী থেকে জামালপুর, আখাউড়া, লাকসাম রুটসহ কয়েকটি বিশেষ ট্রেন চলবে। আখেরি মোনাজাতের দিন টঙ্গী থেকে ঢাকা, লাকসাম, আখাউড়া, ময়মনসিংহ ও ঈশ্বরদী রুটে একাধিক বিশেষ ট্রেন যাতায়ত করবে। আখেরি মোনাজাতের পরের দিন টিকেটধারী মুসল্লিরা যাতে উঠতে পারেন সেজন্য সব ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে যাত্রা বিরতি দেবে। এছাড়া ইজতেমায় আগত যাত্রীদের কথা বিবেচনায় রেখে টঙ্গী রেলওয়ে জংশনে অতিরিক্ত টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
চলবে শ্যাটল বাস : গাজীপুরের পুলিশ সুপার জানান, শনিবার রাত ১২টা থেকে রোববার আখেরি মোনাজাতের দিন বিকেল পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস মোড় থেকে আব্দুল্লাহপুর এবং টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়কের মীরের বাজার থেকে টঙ্গী স্টেশন রোড হয়ে কামারপাড়া ও সাভারের বাইপাইল থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশের গাড়ি ছাড়া সাধারণ যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। সেজন্য মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে আখেরি মোনাজাতের দিন রোববার ভোর থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস মোড় এলাকা থেকে ইজতেমাস্থল পর্যন্ত মুসল্লিদের সুবিধার্থে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রায় অর্ধশত শ্যাটল বাস (ইজতেমার স্টিকার লাগানো) চলাচল করবে।
পিডিএসও/হেলাল