‘জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জনই পুলিশের প্রধান দায়িত্ব’
জনগণের টাকায় বেতন-ভাতা থেকে শুরু করে সব কিছু হয়। তাই পুলিশকে জনগণের সেবায় নিয়োজিত হতে হবে। জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জনই পুলিশের সবচেয়ে প্রধান দায়িত্ব।পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাহিনীটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মত বিনিময় করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। জঙ্গিবাদ নির্মূলে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধেও একইভাবে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে নতুন উৎপাত সাইবার ক্রাইম মোকাবিলারও তাগাদা দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগে যেমন একটা কথা ছিল না... বাঘে ধরলে এক ঘা, পুলিশে ধরলে ১৮ ঘা, এই প্রবাদ বাক্য যেন মিথ্যা প্রমাণ হয়। মানুষ যেন মনে করে যে, হ্যাঁ, পুলিশ আমাকে সাহায্য করবে বা আমার পাশে আছে বা আমার একটা ভরসার স্থান। সেই জায়গাটা অর্জন করতে হবে, সেই বিশ্বাসটা অর্জন করতে হবে।’
পুলিশ বাহিনী তার আগের বদনাম থেকে অনেকটা বের হয়ে এসেছে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। আর সে জন্য বাহিনীটিকে ধন্যবাদও জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা কিন্তু আগের মতো নেই। মনে রাখবেন আপনারা জনগণের সেবক, জনগণের সেবা করতে এসেছেন। এই জনগণ কৃষক, কৃষক, শ্রমিক মেহনতি মানুষ, তাদের টাকায়ই বেতন, ভাতা সব কিছু। কাজেই তাদের সেবা করা সকলের দায়িত্ব। আপনাদের পরিবার পরিজন বা আপনাদের সবাই এই জনগণের মাঝেই তো বেঁচে আছে। কাজেই যেটুকুই দেবেন, আপনার আপনজনরাই ততটা সুফল পাবে। এ কথাটা সব সময় আপনারা মনে রাখবেন।’
পুলিশের বেতন ও অন্যান্য ভাতা এবং সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। ভবিষ্যতে এটা আরও বাড়বে। পুলিশের জন্য আধুনিক সরঞ্জাম, প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার আশ্বাসও দেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন থানা করার কথাও তুলে ধরেন। ‘একটা বিশাল জায়গায় যেন হিমশিম খেতে না হয়, কষ্ট করতে না হয়, আমরা সেদিকে নজর রেখে আমরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইউনিট করে দিচ্ছি, যেন আপনারা আপনাদের দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতার সাথে, সততার সাথে পালন করতে পারেন।’
মত বিনিময় সভায় মাদকের বিস্তারকেও জঙ্গিবাদের সঙ্গে তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার তাগাদা দেন। বলেন, ‘এটা জঙ্গিবাদের মতো আরেক জঙ্গি, মাদকের ব্যাপারে আমাদেরকে কঠোর হতে হবে।’
এ সময় বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনে পেট্রল বোমা হামলার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে রাজনীতি করছেন। কিন্তু এই ধরনের কোনো কর্মসূচির কথা ভাবতেও পারেন না। ভবিষ্যতেও যারা এভাবে মানুষকে পুড়িয়ে মারবে, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর হওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
মত বিনিময়ে পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ পুলিশ, র্যাব এবং বাহিনীটির অন্যান্য ইউনিটের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পিডিএসও/তাজ