সম্পাদকীয়

  ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

উদ্যোক্তা তৈরির বিকল্প নেই

ব্যক্তির সদিচ্ছাই পারে তার অবস্থানকে পরিবর্তন করতে। এ ক্ষেত্রে থাকতে হবে যেকোনো চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মতো মানসিক শক্তি; যা তাকে দুর্লঙ্ঘনীয় সব বাধা অতিক্রম করতে সাহায্য করবে। শুধু বিশ্ব নয়, দেশেও আছে এমন অসংখ্য উদাহরণ। যাদের অক্লান্ত শ্রমে গড়ে উঠেছে বিশাল সব প্রতিষ্ঠান। যেখানে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

মনে রাখতে হবে, একজন সফল উদ্যোক্তাই পারে মানুষের ভাগ্যের চাকাকে ঘুরিয়ে দিতে। সে ক্ষেত্রে কত টাকা পুঁজি আছে বা কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা আছে, তা মুখ্য নয়, বরং একজন উদ্যোক্তার সবচেয়ে বড় মূলধন তার নতুন কিছু করতে চাওয়ার ইচ্ছা। যদিও আর্থসামাজিক সচ্ছলতা উদ্যোক্তা হওয়ার পথে একজনের যাত্রাকে সহজ করে দেয়। তবে কোনো ধরনের সমর্থন ছাড়াও যে কেউ উদ্যোক্তা হতে পারেন। দেশকে বেকারত্বের জাঁতাকল থেকে মুক্তির এটিই সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। এর কোনো বিকল্প নেই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও চাকরির পেছনে না ছুটে যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চাকরির পেছনে ছোটার মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। যুবসমাজকে চাকরি করার চেয়ে চাকরি দেওয়ায় মনোযোগী হতে হবে। গত রোববার প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা-সহায়তা ট্রাস্টের ষষ্ঠ উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, যুবসমাজকে দক্ষ এবং যোগ্যতাসম্পন্ন করে তোলার লক্ষ্যে ট্রাস্টের কাছ থেকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আরো বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হবে। কারণ তারা যাতে চাকরির পেছনে না গিয়ে উদ্যোক্তা হতে পারে। কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষা নিলে তরুণরা প্রশিক্ষিত দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি দ্রুত স্বাবলম্বী হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।

মনে রাখতে হবে, একজনের অর্থনৈতিক কিংবা সামাজিক সচ্ছলতা নাও থাকতে পারে, কিন্তু তার একটা বড় স্বপ্ন আছে, তিনিও সফল উদ্যোক্তা হওয়ার সমান সম্ভাবনা রাখেন। যদিও বাংলাদেশে উদ্যোক্তা হওয়ার পথে অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয়। কারণ এ ক্ষেত্রে অনেকেরই প্রয়োজনীয় ও সঠিক ধারণার অভাব থাকে। এমনকি সরকারি অথবা বেসরকারি সহায়তা পাওয়ার ব্যাপারে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। এতে অনেকে হতোদ্যম হয়ে পড়েন। তবে ভুলে গেলে চলবে না, সব বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করেই তাদের এগোতে হবে।

বর্তমানে দেশে আগের চেয়ে অনেক বেশি উদ্যোক্তা রয়েছেন, ফলে নতুনরা অনেক বেশি সহায়তা পাচ্ছেন, যা তাদের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করছে। পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে অনেক সহজ হয়েছে তাদের আন্তযোগাযোগ। আমরা আশা করি, উদ্যোক্তাদের জন্য বিদেশে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে সহজ পদ্ধতি প্রণয়ন ও লেনদেনের বিষয়টিকেও সরকার আরো গুরুত্ব দেবে। যাতে উদ্যোক্তারা যেকোনো দীর্ঘ ও জটিল পদ্ধতির চেয়ে সহজে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে। চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতার কারণে কমবেশি অনেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন, যা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের উচিত তাদের ব্যাপকভাবে সহায়তা করা। যাতে কর্মক্ষম প্রতিটি তরুণই এক-একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে পারেন।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
উদ্যোক্তা তৈরি,সম্পাদকীয়,স্বাবলম্বী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close